সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) গাজী হাফিজুর রহমান লিকু এবং তার স্ত্রী-সন্তানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ এসব মামলা করা হয়।
দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনার এপিএস থাকা অবস্থায় নানা দুর্নীতি ও ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে লিকুর বিরুদ্ধে এসব মামলা দায়ের করা হয়।
তিনি জানান, লিকু, তার স্ত্রী রহিমান আক্তার, ভাই গাজী মুস্তাফিজুর রহমান দিপু ছাড়াও শেখ মো. ইকরাম, তানভীর আহম্মেদ, মো. লিয়াকত হোসেন সবুজ, কালু শেখ, হামিম শেখ, মিন্টু রহমান ও আরাফাত হোসেনকে আসামি করে প্রথম মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। দুদকের উপ-পরিচালক মো. আহসানুল কবীর পলাশ বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গাজী হাফিজুর রহমান লিকু ও অন্যান্য আসামি গোপালগঞ্জে তাদের নামের ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ৩৩টি ব্যাংক হিসাবে ১৪৪ কোটি ৫৯ লাখ ১৩ হাজার ১০ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেন। একইসঙ্গে দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে পাওয়া অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস আড়ালের উদ্দেশ্যে রূপান্তর, হস্তান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দন্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
দ্বিতীয় মামলাটি করা হয় শুধু লিকুর বিরুদ্ধে। এ মামলাটিরও বাদী দুদকের উপ-পরিচালক মো. আহসানুল কবীর পলাশ। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনার একান্ত সচিব-২ থাকা অবস্থায় লিকু ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫৫ কোটি ৩২ লাখ ৮৮০ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে নিজের ভোগ দখলে রেখে দুদক ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
তৃতীয় মামলাটিতে রহিমাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে লিকুকে। মামলাটি দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. রাকিবুল হায়াত। তিনি মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, লিকু ও তার স্ত্রী রহিমা একে অপরের সহযোগিতায় অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তিকে বৈধতা দানের অসৎ উদ্দেশ্যে ২৩ কোটি ২৫ লাখ ৯৯ হাজার ৮৬৮ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ভোগ দখলে রেখে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
চতুর্থ মামলাটিতে লিকুকে দুই নম্বর আসামি এবং ছেলে শেখ ইকরামকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. মনজুরুল ইসলাম মিন্টু। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, আসামিরা একে অপরের সহায়তায় অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তিকে বৈধতা দানের উদ্দেশ্যে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১৪ কোটি ৭৫ লাখ ৭৯ হাজার ৩৪৮ টাকার সম্পদ ভোগ দখলে রেখে দুদক আইন ও দন্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।