ই-পেপার মঙ্গলবার ১৪ জানুয়ারি ২০২৫
মঙ্গলবার ১৪ জানুয়ারি ২০২৫
ই-পেপার

মঙ্গলবার ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

গভর্নরের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সাক্ষাৎ
ব্যবসা গুটিয়ে নিতে এক্সিট পলিসি চান ব্যবসায়ীরা
প্রকাশ: সোমবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫, ১:১১ এএম  (ভিজিট : ২২০)
চড়া সুদহার, জ্বালানি সংকট, সেই সঙ্গে গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্য আবারও বৃদ্ধির পাঁয়তারার খবরে কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ ব্যবসায়ীদের। তাদের দাবি দেশে এখন ব্যবসার পরিবেশ নেই, ফলে গভর্নরের সঙ্গে দেখা করে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে এক্সিট পলিসি চেয়েছেন তারা।

রোববার বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি সংগঠনের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে দেখা করে এমন দাবি করেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যাংকের একক গ্রাহকের ঋণসীমা ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়ে ব্যবসায়ীরা বলেন, বর্তমানে একটি ব্যাংক ফান্ডেড ও নন-ফান্ডেড মিলিয়ে একজন গ্রাহককে মোট মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ দিতে পারে। 

এর আগে সীমা ৩৫ শতাংশ ছিল, পরিবর্তন করে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০২২ সালে। পাশাপাশি বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে দীর্ঘমেয়াদি ঋণসুবিধাসহ ঋণ থেকে প্রস্থান-সংক্রান্ত নীতিমালা (এক্সিট পলিসি) প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন তারা।

বিসিআইর সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী পারভেজ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। এ সময় বিজিএমইএর প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন, বিসিআইর পরিচালক ও প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী, এলএফএমইবির সিনিয়র সহ-সভাপতি নজরুল হাসান সোইল, রাভিডার সভাপতি আবদুল হক, বিসিএমইএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মইনুল ইসলাম স্বপন, সিটি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হাসান, কোকাকোলা বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদাপ আহমেদ, বিসিআইর সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রীতি চক্রবর্তী, সিটি গ্রুপের উপদেষ্টা অমিতাভ চক্রবর্তী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক শেষে আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, একসঙ্গে ঋণের সুদহার বাড়ানো, গ্যাসের দাম বাড়ানো, বেতন বাড়ানো, প্রণোদনা দেন-এভাবে ব্যবসা চালানো কঠিন। কোনো দেশে এমনটা নেই। এজন্য আমরা চাই বড় শিল্পের জন্য এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ১২ বছরের ঋণ সুবিধা এবং ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে পুনঃতফসিলের সুযোগ রাখা হোক। ছোট শিল্পের জন্য এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ১৫ বছরের ঋণসুবিধা চাই, যেখানে এক শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে পুনঃতফসিলের সুবিধা থাকবে। এ জন্য পৃথক সার্কুলার দিতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের মর্টগেজ সম্পদ বিক্রির জন্য অনুমোদন নিতে হবে। ব্যাংকের একক গ্রাহকের ঋণসীমা আগের অবস্থানে নেওয়ার দাবি জানাই। একটি ব্যাংক বর্তমানে ফান্ডেড ও নন-ফান্ডেড মিলিয়ে একজন গ্রাহককে মোট মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ দিতে পারে। এর আগে এ সীমা ৩৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হলেও তা পরিবর্তন করা হয়েছিল। এতে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন, বিশেষ করে এলসির (ঋণপত্র) ক্ষেত্রে।

তিনি জানান, নগদ প্রণোদনার জন্য যে কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র জমা দিতে ন্যূনতম ৯ থেকে ১২ মাস সময় লাগে, এরপর বিতরণ করতে ৮ থেকে ১২ মাস সময় লাগে। এ সময় নামিয়ে আনতে হবে ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে। ব্যাংক সুদের হার ৯ থেকে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা, যে সংকট সমাধান করা অসম্ভব। এ সমস্যা নিরসনের জন্য জোর দাবি জানাই। কোনো উৎপাদনমুখী শিল্প টিকিয়ে রাখার জন্য সুদহার কমানোর দাবি জানিয়েছি। দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের কথা জানিয়েছি, দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের জন্য একটি প্রক্রিয়া খুঁজে বের করার জন্য আমরা বাংলাদেশ ব্যাংককে বলেছি।

পারভেজ চৌধুরী বলেন, আমাদের একটা এক্সিট পলিসি দরকার। হেরে যাওয়া থেকে অন্তত মানসম্মান নিয়ে ব্যবসা করে যেতে চাই। এ নিয়ে আমাদের জোর দাবি ছিল, বাংলাদেশ ব্যাংকও এটা নিয়ে কাজ করছে। ঋণখেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করার যে শর্ত ঠিক করা হয়েছে, তা শিথিল করার দাবি জানাই। গ্রাহক ৬ মাসের মধ্যে ঋণ পরিশোধ না করলে খেলাপি হবে, এটাকে অন্তত ৯ মাসে নিয়ে যাওয়ার দাবি করেছি। দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতি না হলে শিল্প সার্ভাইভ করতে পারবে না। শিল্পে এলসি খোলায় এখনও জটিলতা রয়েছে। যে রিফর্ম কমিটি গঠন করা হয়েছে, আমরা সেখানে ব্যবসায়ী প্রতিনিধি রাখার কথা বলেছি। সবকিছুতে খরচ বাড়লে শিল্পের গ্রোথ কীভাবে হবে? ললিপপ দিয়ে শিল্প চলে না, এজন্য সাপোর্ট লাগে। অর্থনীতির স্বার্থে বিভিন্ন দেশের শিল্প এগিয়ে নিতে এ ব্যবস্থা রাখা হয়।
বিজিএমইএ প্রশাসক আনোয়ার হোসাইন বলেন, এলসি জটিলতা দূর করতে হবে। পাশাপাশি কমাতে হবে সুদের হারও।
`
সাক্ষাৎকালে বিসিআই প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের মূল লক্ষ্য এখন মুদ্রাস্ফীতি কমানো। আমরা আশা করি আগামী জুন নাগাদ মুদ্রাস্ফীতি ৭ থেকে ৮ এর মধ্যে থাকবে। আমাদের বেসরকারি খাতকে অর্থ প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য কাজ করছি। আমরা সরকারি ব্যয় কমানোর জন্য সুপারিশ করছি যাতে বেসরকারি খাতে অর্থ প্রবাহ বাড়াতে পারি। কিন্তু ডিপোজিট বাড়ছে না ডিপোজিট গ্রোথ ৭ শতাংশ। অর্থ প্রবাহ বাড়াতে হলে ডিপোজিট বাড়াতে হবে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ডলারের ক্রাইসিস নেই। অর্থনীতি স্বাভাবিক হচ্ছে কিন্তু একটু সময় লাগবে। আগামী রমজানে যাতে নিত্যপণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত না হয় সে দিকে আমাদের লক্ষ্য আছে। সেই লক্ষ্যে ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমি মনে করি দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের জন্য বন্ড মার্কেটে যেতে হবে। আমাদের করপোরেট বন্ডের জন্য কাজ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক পূর্ণ সহযোগিতা দেবে।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close