প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭:১৫ পিএম (ভিজিট : ৩০৬)
রাজশাহীতে নিজ বাসা থেকে অপহরণ হওয়ার দুইদিন পার হলেও নারী চিকিৎসকের সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে অপহরণের কাজে ব্যবহৃত গাড়িটি শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এরআগে, সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোরে একই সঙ্গে বাবা-মেয়েকে বাড়ি থেকে মাইক্রোবাসে করে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে তারা সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানা এলাকায় রাস্তায় অপহরণের শিকার নারী চিকিৎসকের বাবাকে ফেলে চলে যায়।
সোমবার রাতে অপহরণের অভিযোগে চিকিৎসকের বাবা বাদী হয়ে রাজশাহী নগরীর চন্দ্রিমা থানায় একটি মামলা করেন। অপহরণকারী ব্যক্তিরা ওই চিকিৎসকের মাকে (৫১) পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অপহরণের শিকার ওই চিকিৎসক রাজশাহীর একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে সম্প্রতি ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারি (বিডিএস) শেষ করেছেন। তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। তাদের বাসা রাজশাহী মহানগরীর পদ্মা আবাসিক এলাকায়।
অপহৃত ওই চিকিৎসকের মামা জানান, মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে তার দুলাভাইকে আবার থানায় ডেকে নেওয়া হয়। তাকে অনেক নির্যাতন করা হয়েছে। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে; ভীষণ অসুস্থ। আর অচেতন করার জন্য ইনজেকশন দেওয়ার কারণে তিনি শারীরিকভাবে খুব দুর্বল রয়েছেন।
অপহৃত চিকিৎসকের আহত মা (রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন) সাংবাদিকদের জানান, সোমবার ভোরে ফজরের নামাজ পড়ার জন্য তার স্বামী মসজিদে যান। এ সময় তিনি বাইরের ফটকে তালা লাগিয়ে চাবি সঙ্গে নিয়ে যান। একটু পরই তালা খোলার শব্দ পেয়ে তিনি এগিয়ে যান, এত তাড়াতাড়ি নামাজ না পড়ে ফিরে আসছেন কি না, তা দেখতে। দেখতে গিয়ে বুঝতে পারেন, অপহরণকারী ব্যক্তিরা তার স্বামীকে জিম্মি করে চাবি নিয়ে এসেছে। এসময় অপহরণকারী ব্যক্তিরা তাকে ধরে দেয়ালের সঙ্গে মাথা ঠুকে দেয়। মাথায় তালা দিয়ে আঘাত করে। এরপর তারা তার গলা চেপে ধরে। তারা যখন তাকে ছেড়ে দেয়, তখন তিনি দৌড় দিয়ে নিচে নেমে রাস্তার ওপর পড়ে যান। ততক্ষণে অপহরণকারী ব্যক্তিরা তার মেয়ে ও স্বামীকে নিয়ে চলে যায়।
চন্দ্রিমা থানার ওসি মতিয়ার রহমান বলেন, বাদী অপহরণকারী ব্যক্তিদের চিনতে পেরেছেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। তবে তিনি এজাহারভুক্ত আসামিদের বিষয়ে কিছু জানাতে চাননি।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার সাবিনা ইয়াসমিন মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে সাংবাদিকদের জানান, পুলিশের দিক থেকে ওই চিকিৎসককে উদ্ধারের সব ধরনের তৎপরতা চালানো হচ্ছে। এখন পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। সোমবারই সিরাজগঞ্জের সলঙ্গ থানা থেকে তার বাবাকে নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি বাদী হয়ে রাতে নগরীর চন্দ্রিমা থানায় একটি মামলা করেছেন। পুলিশ অপহরণের কাজে ব্যবহৃত গাড়িটি নম্বরসহ শনাক্ত করতে পেরেছে। এই নম্বর বিভিন্ন থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে এখন কড়া নজরদারি চলছে।
সময়ের আলো/আরআই