ই-পেপার মঙ্গলবার ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
মঙ্গলবার ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ই-পেপার

মঙ্গলবার ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে প্রয়োজন ঐক্য: ধর্ম উপদেষ্টা
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৬:৪৩ পিএম  (ভিজিট : ১৪২)
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, সংস্কার শেষ হলে আমরা একটি নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবো। এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে প্রয়োজন ঐক্য, আমাদের সকলের উচিত ঐক্যবদ্ধ থাকা। বাংলাদেশে সকল ধর্মের মানুষের স্ব স্ব ধর্ম পালনের অধিকার রয়েছে। যারা এ অধিকার ক্ষুণ্ন করতে চায় তাদের আইনের আওতায় আনার দায়িত্ব সরকারের। 

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের মিলনায়তনে আয়োজিত ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি কেন্দ্রে প্রশিক্ষণরত ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সাথে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। 

উপদেষ্টা খালিদ হোসেন বলেন, আমার মন্ত্রণালয়কে দুর্নীতি মুক্ত করার জন্য অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি। ইসলামি ফাউন্ডেশন ছিল দুর্নীতির আখড়া, আমরা তা ঢেলে সাজিয়েছি। একটা বৈষম্যহীন সমাজ রাষ্ট্র উপহার দিতে চাই। আগামী দিনে যারা আসবে তাদের জন্য পদ শুভ করতে চাই। 

ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, সরকারি খরচে আমরা কাউকে বা কোনো অতিথিকে বিনা পয়সায় হজ করাবো না। একমাত্র হজ ব্যবস্থাপনার সাথে যারা যুক্ত তারাই হজে যাবেন। কোন এজেন্সি যদি এই হাজির সাথে প্রতারণা করে তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। আমরা হজ ব্যবস্থাপনাকে সুন্দর করতে চাচ্ছি। একটি সমাজ গঠনে ইমাম, মুয়াজ্জিন, খতিবগণ যথাযথ ভূমিকা পালন করেন, তারা ভালো না থাকলে সমাজ ভালো থাকবে না। তাই তাদের বেতন কাঠামো তৈরি করা হচ্ছে। ইমামদের দুটি উৎসব বোনাস প্রদানে ধর্ম মন্ত্রণালয় কাজ করছে। এছাড়া মসজিদের জন্যও নীতিমালা করা হচ্ছে। 

এসময় তিনি আরও বলেন, ইমামদের স্বাবলম্বী করার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা করার কাজ চলমান রয়েছে। যে সকল ইমাম মুয়াজ্জিন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন অথবা নিচ্ছেন তারা ইমামতির পাশাপাশি যাতে ছোট ব্যবসা (কুটির শিল্প, মৎস্য চাষ, খেত খামার, কবুতর পালন অথবা কোয়েল পাখি পালন) করে স্বাবলম্বী হতে পারেন, এজন্য বিনা সুদে আমরা তাদের ঋণ দিচ্ছি। অর্থাৎ আপনি সামান্য পুঁজি নিবেন, আমরা সামান্য পুঁজি দিবো ইমামতির পাশাপাশি ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হবেন, এতে লজ্জার কিছু নেই। পেটের ভাত জোগাড় করা ইবাদত, সমস্ত নবিরা নিজ হাতে কাজ করেছেন। আমি ইমাম হয়েছি বলে একটু কৃষি কাজ কী করতে পারবো না? 

ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, যে সকল ইমাম ক্যান্সার, লিভার সিরোসিস অথবা ডায়ালাইসিস করছেন, চলন শক্তি হারিয়ে ফেলেছেন তাদের আমরা এককালীন অনুদান দেব, ফেরত দিতে হবে না। এছাড়া ইমাম মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্টের অ্যাকাউন্টে ভালো অ্যামাউন্ট আছে। আমরা চাচ্ছি ব্যাংকে পড়ে থাকা টাকাগুলোকে ইউটিলাইজ করে ইমাম মুয়াজ্জিনদের কল্যাণে কাজে লাগাতে। আমরা প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি একটা ওয়ার্টার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট করবো, সেখান থেকে মিনারেল ওয়াটার তৈরি করে বাজারে সাপ্লাই দিবো, যা লাভ হবো সেটা ইমাম মুয়াজ্জিনদের কল্যাণ ট্রাস্টে যাবো। আমাদের সময় কম হলেও আমরা শুরু করে দিতে চাই, আর কারও কাছে আমাদের টাকাও চাইতে হবে না। আমরা প্রাথমিকভাবে নিয়ত করেছি পানির বোতলের নাম দিব ‘ইমাম’। 

যাকাতের বিষয়ে তিনি বলেন, মোবাইলে একটি অ্যাপস করা হয়েছে, যার কার্যক্রমের রিভিশন চলছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে যে কেউ ঘরে বসে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যাকাত ফান্ডে টাকা দিতে পারবে। সব থেকে বেশি যাকাত চট্টগ্রামে এবং সব থেকে কম নীলফামারিতে যাকাত আদায় হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ইমামরা মসজিদে যাকাতের বিষয়ে মুসল্লিদের মাঝে বলবেন। আমাদের এখান থেকে এক টাকাও এদিক সেদিক হওয়ার সুযোগ নেই। 

তিনি বলেন, আমাদের যারা দীর্ঘদিন কোন কারণ ছাড়া পদোন্নতি পাননি তাদের তা দেয়া হবে। অনেক শূন্য পদও আছে তারমধ্যে কিছু পদও পূরণ করা হবে। কারও কোনো অভিযোগ থাকলে সরাসরি আমাকে অথবা ডিজিকে দিবেন। আমরা মন্ত্রণালয়কে সচল, প্রাণবন্ত, অ্যাকটিভ করতে চাই। ইমাম মুয়াজ্জিনরা হচ্ছে তৃণমূলে ইসলামের প্রতিনিধি, সামাজিক শক্তি। সামাজিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করা গেলে, দেশের জন্য বিরাট শক্তিতে পরিণত হবে। ধর্মের নামে হানাহানি আমাদের জন্য বেদনার। 

সবশেষে তিনি বলেন, হিন্দু, খ্রিষ্টান, মুসলমান, বৈদ্যসহ বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠী আমরা সবাই দেশের নাগরিক। প্রত্যেকের অধিকার সমান, আর এই অধিকার সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা একটি শান্তিপূর্ণ-বৈষম্যহীন সমাজ-রাষ্ট্র উপহার দিতে চাই। আগামীদিনে যারা আসবেন তাদের পথ সুগম করতে চাই।

বরিশাল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহিদুর রহমান, ইসলামিক ফাউন্ডেশন গভর্নর বোর্ডের অব গভর্নরস ও চরমোনাই আহছানাবাদ রশিদিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানি, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নর বোর্ডের অব গভর্নরস ও পটুয়াখালী ওয়ায়েজিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হকসহ প্রমুখ। এসময় জেলার দুই শতাধিকের বেশি মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিন ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন নগরীর আমানতগঞ্জ এলাকার আল জামিয়া আল ইসলামিয়া আল মাহমুদিয়া মাদ্রাসা ও পরে চরমোনাই মাদ্রাসা পরিদর্শন করেন।

সময়ের আলো/আরআই







এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close