প্রকাশ: রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১২:২৩ এএম (ভিজিট : ২৮৪)
মানুষ স্বভাবজাতভাবেই অনুকরণপ্রিয়। প্রতিটি কাজেই তারা কাউকে না কাউকে অনুকরণ করতে পছন্দ করে। পোশাক থেকে শুরু করে চুলের স্টাইলেও মানুষের অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব পাওয়া যায়। তবে ভুল মানুষের অনুকরণ করলে বিপথগামী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো সম্প্রদায়ের অনুকরণ করবে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে’ (আবু দাউদ : ৪০৩১)। মুমিনের জীবনে একমাত্র অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব মহানবী (সা.) কিংবা যারা মহানবী (সা.)-এর সুন্নত মোতাবেক জীবন গড়েছেন। এর বিপরীত মেরুর কাউকে অনুকরণ করতে গেলে হাদিসের ভাষ্যমতে বিপদে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
একটি হাদিসে জানা যায়, আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে ‘কাজা’ থেকে নিষেধ করতে শুনেছি। (বর্ণনাকারী বলেন) আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘কাজা’ কী? তখন আবদুল্লাহ (রা.) আমাদের ইঙ্গিতে বললেন, শিশুদের যখন চুল কামানো হয় তখন এখানে-ওখানে চুল রেখে দেওয়া। এ কথা বলার সময় বর্ণনাকারী তার কপাল ও মাথার দুই পাশে দেখালেন। এভাবে বর্ণনাকারী বালকদের কথা বলেছেন। তিনি বলেন, পুরুষ শিশুর মাথার সামনের ও পেছনের দিকের চুল কামানো দোষণীয় নয়। আর (অন্য এক ব্যাখ্যা মতে) ‘কাজা’ বলা হয়, কপালের ওপরে কিছু চুল রেখে বাকি মাথার কোথাও চুল না রাখা। (বুখারি : ৫৯২১)
মুসলমান কীভাবে চুল রাখবে, কীভাবে চুল কাটবে সেসব নবীজি (সা.)-এর সুন্নতে বিদ্যমান রয়েছে। পুরুষদের জন্য সাধারণত বাবরি চুল রাখা সুন্নত। কেননা রাসুলুুল্লাহ (সা.)-এর সাধারণ অভ্যাস ছিল বাবরি চুল রাখা। তা তিন পদ্ধতিতে হতে পারে-১. উভয় কাঁধ বরাবর ২. ঘাড়ের মাঝামাঝি ৩. উভয় কানের লতি পর্যন্ত (আবু দাউদ :৪১৮৩)। রাসুলুুল্লাহ (সা.) ইহরাম থেকে হালাল হওয়ার জন্য মাথা মুণ্ডাতেন। এ ছাড়া তিনি কখনো মাথা মুণ্ডাননি। এসময় তিনি মাথা মুণ্ডানোকে চুল ছোট করে রাখার ওপর প্রাধান্য দিয়েছেন। এ জন্য ইমাম তাহতাবী (রহ.) বলেন, মাথা ন্যাড়া করাও সুন্নত। আর কিছু অংশ মুণ্ডানো ও কিছু রেখে দেওয়া নিষেধ। মুণ্ডাতে ইচ্ছে না করলে চুল ছোট রাখা যেতে পারে।
আলেমগণ তিন তরিকায় বাবরি রাখাকে সুন্নত আর মাথার চুল ছোট করে রাখা বা মুণ্ডানোকে জায়েজ বলেন। এ ছাড়া সামনে বা পেছনে লম্বা রাখা অথবা ডানপাশে বা বামপাশে ছোট-বড় করে রাখাকে জায়েজ মনে করেন না। এ ক্ষেত্রে লক্ষণীয় বিষয় হলো, চুলের যে কাটিং ভিন্ন কোনো জাতিসত্তার অনুকরণে হবে, তাই নাজায়েজের মধ্যে শামিল হবে (ফাতাওয়া মাহমুদিয়া : ২৭/৪৬০)। মেয়েদের জন্য চুল মুণ্ডন করা বা কেটে ছেলেদের মতো করে ফেলা নিষেধ। আবার এত বড় রাখা উচিত নয় যে, গোছলের সময় পানি পৌঁছানো কষ্টকর হয়। বরং পিঠ বা কোমর পর্যন্ত রাখা ভালো। সেমতে কোমরের নিচের অংশ কেটে ফেলা জায়েজ হবে। অবশ্য না কাটলেও কোনো সমস্যা নেই।