গত কয়েক বছর ধরে ঢাকাই সিনেমা ঈদকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছিল। এই বছরও তার ব্যতিক্রম নয়। সিনেমার শুরুতে ব্যর্থতা শেষে রূপ নিয়েছে হতাশায়। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর এখন পর্যন্ত দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ৪৯ ছবি। আজ মুক্তি পাবে আরও এক ছবি। সব মিলিয়ে সিনেমার সংখ্যা ৫০টি। এ বছর দুই ঈদে মুক্তি পাওয়া সিনেমাগুলো নিয়েই বেশি আলোচনা ছিল।
জানুয়ারিতে মুক্তি পায় ‘শেষ বাজি’, ‘কাগজের বউ’, ‘রুখে দাঁড়াও’ তিনটি সিনেমা। এই তিনটি সিনেমা মুখথুবড়ে পড়ে। এরপর রোজার ঈদ পর্যন্ত মুক্তি পায় আরও চার সিনেমা।
প্রার্থনা ফারদিন দীঘি অভিনীত ‘শ্রাবণ জ্যোৎস্নায়’, অপু বিশ্বাসের ‘ট্র্যাপ’ ও ‘ছায়াবৃক্ষ’ এবং জয়া আহসানের ‘পেয়ারার সুবাস’। হল মালিকদের অভিযোগ, এসব ছবি চালিয়ে বিদ্যুৎ বিলও তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন।
চলতি বছর রোজার ঈদে মুক্তি পায় হিমেল আশরাফ পরিচালিত শাকিব খান অভিনীত সিনেমা ‘রাজকুমার’। ছবিটি কিছুটা আশার আলো দেখায়। বাকি ১০ সিনেমার মধ্যে ‘দেয়ালের দেশ’, ‘ওমর’, ‘কাজল রেখা’ ব্যবসায়িকভাবে সফল না হলেও প্রশংসিত হয়। এ ছাড়া ‘সোনার চর, ‘মেঘনা কন্যা’, ‘আহারে জীবন’, ‘গ্রিন কার্ড’, ‘মোনা : জ্বিন ২’, ‘মায়া : দ্য লাভ’, ‘পটু’, ‘লিপস্টিক’ ব্যবসায়িক দিক থেকে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।
ঈদুল আজহায় মুক্তি পায় শাকিব খান অভিনীত এবং রায়হান রাফী পরিচালিত সিনেমা ‘তুফান’। এই সিনেমা দিয়ে হল মালিকরা দারুণ ব্যবসা করেন। এই সিনেমার একাধিক গান জনপ্রিয়তা পায়। বছরের সেরা হিট তকমা পায় ‘তুফান’। এই ছবির সফলতা বাকি চার ছবি ‘ময়ূরাক্ষী’, ‘ডার্ক ওয়ার্ল্ড’, ‘রিভেঞ্জ’, ‘আগন্তুক’ আলোচনায় আসতে পারেনি। দুই ঈদের মাঝে মুক্তি পায় ‘শ্যামাকাব্য’, ‘ডেডবডি’, ‘ফাতিমা’, ‘ময়নার শেষ কথা’, ‘সুস্বাগতম’, ‘আন্তঃনগর’ সিনেমাগুলো। এসব ছবি দেখতে দর্শকের তেমন আগ্রহ ছিল না।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও বন্যার কারণে চলচ্চিত্রাঙ্গন থমকে ছিল। জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত দুটি সিনেমা ‘আজব কারখানা’ ও ‘অমানুষ হলো মানুষ’ মুক্তি পায়। ছবিগুলো দর্শকদের হতাশ করেছে।
অক্টোবরে মুক্তি পায় শাকিব খান অভিনীত আলোচিত সিনেমা ‘দরদ’। অনন্য মামুন পরিচালিত এই ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করেন বলিউড অভিনেত্রী সোনাল চৌহান। সিনেমাটি নিয়ে হলো মালিকরা আশায় বুক বেঁধেছিলেন। কিন্তু ছবিটি মুক্তির পর মুখ থুবড়ে পড়ে। বছরের শেষে দর্শক ও হল মালিকদের হতাশ করেন শাকিব খান। যদিও সিনেমাটির পরিচালক অনন্য মামুন দাবি করেছেন, তার সিনেমার লগ্নিকৃত টাকা ঘরে তুলে ফেলেছেন। ‘দরদ’ ছাড়াও মুক্তি পেয়েছে আরও ১৫টি সিনেমা। এগুলো হচ্ছে ‘জিম্মি’, ‘শরতের জবা’, ‘বাদশা দ্য কিং’, ‘হৈমন্তীর ইতিকথা’, ‘চরিত্র’, ‘রংঢং’, ‘৩৬ ২৪ ৩৬’, ‘ভয়াল’, ‘দুনিয়া’, ‘নয়া মানুষ’, ‘৮৪০’, ‘হুরমতি’, ‘ডেঞ্জার জোন’, ‘মাকড়সার জাল’, ‘প্রিয় মালতী’। সিনেমাগুলোর প্রতি আগ্রহ দেখাননি দর্শক।
আজ মুক্তি পাবে জয়া আহসান অভিনীত সিনেমা ‘নকশী কাঁথার জমিন’। এটিই হবে বছরের শেষ সিনেমা। বছরজুড়ে দেশীয় সিনেমার পাশাপাশি আমদানি করা হয় চারটি সিনেমা ‘হুব্বা’, ‘মি. অ্যান্ড মিসেস মাহি’, ‘ক্রু’ ও ‘স্ত্রী ২’। সিনেমাগুলো দেশে ব্যবসা করতে পারেনি।
সময়ের আলো/আরএস/