প্রকাশ: শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১২:১৯ এএম (ভিজিট : ৭৪)
বাংলাদেশ সচিবালয় বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসনিক সদর দফতর। বাংলাদেশ সরকারের সব নির্বাহী বিভাগীয় কার্য সচিবালয়ে সম্পন্ন হয়। বুধবার রাতে সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন ধরে যায়। দেশের প্রশাসনিক প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ সচিবালয়ে সংঘটিত আগুনকে পরিকল্পিত বলে সন্দেহ করছেন রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। তারা বলছেন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও অনেক ঘটনার ধারাবাহিকতা সচিবালয়ের এই অগ্নিকাণ্ড। তারা সরকার ও দেশবাসীকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন।
ওই ভবনটিতে ডাক-টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ অবস্থিত বলে জানা যাচ্ছে। তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে কিছু জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।
বাংলাদেশ সচিবালয় একটি কেপিআই স্থাপনা। সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দেশের সর্বোচ্চ এই প্রশাসনিক কেন্দ্র ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এরই মধ্যে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরা সচিবালয়ের গেটের সামনে অবস্থান নিয়েছেন বলে সময়ের আলো অনলাইন থেকে জানা গেছে। এদিকে আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মী ট্রাকের চাপায় নিহত হয়েছেন।
এটি দুর্ঘটনা, না নাশকতা, সেটা তদন্তে বেরিয়ে আসবে আশা করা যায়। কিন্তু সেই সত্য বেরিয়ে আসার আগে যে বিষয় জানা দরকার, তা হলো একই সময়ে ভবনের দুই প্রান্তে কীভাবে আগুন লাগল। দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো আগুন নেভাতে প্রায় ১২ ঘণ্টা সময় লাগল কেন?
রাজধানীতে সচিবালয়ের মতো সুরক্ষিত এবং পর্যাপ্ত সুরক্ষা সরঞ্জামসজ্জিত জায়গায় আগুন লাগার ঘটনায় বিস্মিত মানুষ। সচিবালয়ে অফিস করতে আসা অনেক কর্মকর্তা বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, সচিবালয়ে কোনো ধরনের বৈদ্যুতিক ত্রুটি থেকে একসঙ্গে ভবনের বিভিন্ন জায়গায় আগুন লাগবে এটা অনেকেই বিশ্বাস করছেন না।
এ আগুনের ঘটনাটি ষড়যন্ত্রের অংশ কি না, কিংবা এর পেছনে নাশকতা আছে কি না-সেটা খতিয়ে দেখতে হবে। ইতিমধ্যে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
অগ্নিদুর্ঘটনার পেছনে কারও ব্যক্তিগত বা পেশাগত দায়দায়িত্ব আছে কি না, তা উদঘাটন করে এ-জাতীয় দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আগুনের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তী সরকার কঠোর না হলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হবে। একই সঙ্গে সচিবালয়ের মতো গুরুত্ব স্থাপনার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।