যশোরে নাশকতা ও বিস্ফোরক মামলায় আওয়ামী লীগের ১৬৭ নেতাকর্মী আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছে যশোর সদর উপজেলায় ২০, অভয়নগর উপজেলার ১০৫ ও কেশবপুরের ৪২ জন। পৃথক তিন আদালতে রোববার (২২ ডিসেম্বর) তারা আত্মসমর্পণ করলে সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক যশোর সদর ও অভয়নগরের ১২৫ জনের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। অন্যদিকে কেশবপুর উপজেলার ৪২ জনের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে রয়েছেন জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ। কোর্ট ইন্সপেক্টর রোকসানা খাতুন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর যশোর সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট কেন্দ্রে বোমাবাজির ঘটনায় গত ১৯ নভেম্বর কোতোয়াালি থানায় মামলা করেন অ্যাডভোকেট মুন্সী মঞ্জুরুল ইসলাম। এ মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনসহ ৯৬ জন। রোববার চেয়ারম্যানসহ ২০ জন এজাহারভুক্ত আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন- যশোর সদর উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রবিউল ইসলাম, ফতেপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম, হালিম বিশ্বাস, আবুল বিশ্বাস, কৃষকলীগ নেতা টিটো, সবুর, ফিরোজ, আবু খায়ের, ছাত্তার সরদার, মারজন, তারেক, হালিম, মনির, আরিফ, তন্ময়, হরিচাঁদ, হিরাজ,রফিকুল ইসলাম। তারা সকলের ফতেপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। তারা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানালে বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এছাড়া অভয়নগরের পৃথক দুইটি মামলায় একইদিন ১০৫ জন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এ মামলার আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন- অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, কোষাধক্ষ্য আনিছুর রহমান মিন্টু, সাবেক হুইপ আব্দুল ওহাবের ছেলে শেখ কাফি, কমিশনার বিপুল শেখ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফি কামাল, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মামুন, জসিম উদ্দিন, আমির শেখ, স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ইলিয়াস সরদার, সাধারণ সম্পাদক বাচ্চু খানসহ অভয়নগরের উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরা রয়েছেন। তারা রোববার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানালে বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার দালাল তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এছাড়া একইদিন কেশবপুরের আরেকটি নাশকতার মামলার এজাহারভুক্ত ৪২ আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানান। বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাশেদুর রহমান তাদের জামিন মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এ বিষয়ে যশোর সদর উপজেলা ও অভয়নগর উপজেলার আত্মসমর্পণকারী আসামিপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ কবীর হোসেন জনি বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মামলার ঘটনার সাথে বাস্তবে কোনো মিল নেই। মনগড়া অভিযোগ দিয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের পক্ষে তারা জেলা জজ আদালতে জামিন ধরবেন। যা প্রক্রিয়াধীন।
এ বিষয়ে কোর্ট ইন্সপেক্টর রোকসানা খাতুন বলেন, আদালতের নির্দেশে তারা আত্মসমর্পণকারী আসামিদেরকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করেছেন।
সময়ের আলো/আরআই