প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১০:৫৭ পিএম (ভিজিট : ১২৪)
মিয়ানমারে স্থায়ী শান্তি, স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্র দেখতে চায় বাংলাদেশ। সাময়িক আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে দেশটির রাখাইন রাজ্যে ফিরতে, আত্মবিশ্বাসী করতে, বাংলাদেশ সেখানে ইতিবাচক পরিবেশ দেখতে চায়। এ জন্য রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের একটি রোডম্যাপ চায় ঢাকা।
থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এমন মন্তব্য করেন। বৈঠকে বাংলাদেশ, ভারত, চীন, মিয়ানমার, লাওস পিডিআর, থাইল্যান্ড এর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিস সাঙ্গিয়াম্পংসার সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার সকালে ব্যাংককে ছয় দেশের আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মিয়ানমারের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী থান সোয়ে।
বৈঠকে মিয়ানমারের সৃষ্ট করা রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, গত দুইমাসে মিয়ানমার থেকে বাড়তি ৬০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। সীমান্ত এলাকায় চলমান সশস্ত্র সংঘাতের পাশাপাশি নানা ধরনের অপরাধ, মাদক ও অস্ত্র পাচারের বিষয়গুলো গভীর উদ্বেগজনক। রাখাইন রাজ্যে স্থিতিশীলতা নিশ্চিতের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য একটি রোডম্যাপ করার আহ্বান বৈঠকে পুনর্ব্যক্ত করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি মিয়ানমারে শান্তি, নিরাপত্তা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনের জন্য আঞ্চলিক জোট আসিয়ান এবং অন্যান্য প্রধান আঞ্চলিক পক্ষগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। এ সময় তিনি রাখাইন রাজ্যের অর্থনীতি পুনর্গঠনসহ বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তার প্রস্তাব দেন।
বাংলাদেশর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বৈঠকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া রোহিঙ্গাবিষয়ক তিন দফা প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করেন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্মেলন ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা অনলাইনে অপরাধসহ আন্তঃদেশীয় অপরাধ মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী এবং সীমান্ত সংস্থাগুলোর মধ্যে আরও গোয়েন্দা তথ্যবিনিময় এবং সহযোগিতার পরামর্শ দেন।
বৈঠকে মিয়ানমারের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী থান সোয়ে বিভিন্ন জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সংলাপ ও ২০২৫ সালের নির্বাচন আয়োজনের পরিবেশ তৈরির প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। এ ছাড়া আন্তঃরাষ্ট্রীয় অপরাধ দমনে সরকারের ভূমিকার কথা টেনে এ ধরনের অপরাধ চক্র মিয়ানমারে সশস্ত্র সংঘাতে মদদ জোগাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। রাখাইন রাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুতদের প্রত্যাবর্তনের জন্য সরকারের উদ্যোগের কথা জানান থান সোয়ে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ব্যাংককে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের সাইড লাইনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী থান সোয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।
সময়ের আলো/আরআই