ই-পেপার বৃহস্পতিবার ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
বৃহস্পতিবার ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
ই-পেপার

বৃহস্পতিবার ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

পালানোর পর প্রথম বিবৃতি
বিদ্রোহীদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিলেন আসাদ
প্রকাশ: বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২:৪৬ এএম  (ভিজিট : ১৫০)
ক্ষমা চাইবেন না পালিয়ে দেশ ছাড়া সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। তিনি মনে করেন, জনগণের দেওয়া ম্যান্ডেট অনুযায়ী দেশ পরিচালনা করেছেন। বিদ্রোহী যোদ্ধাদের তিনি ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। এ ছাড়া কীভাবে সিরিয়া থেকে পালিয়েছেন সে সম্পর্কে জানিয়েছেন পালানোর পর দেওয়া প্রথম বিবৃতিতে।

সিরিয়ার প্রেসিডেন্সির টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে তার এই বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। ৫৯ বছর বয়সি এই নেতা পালিয়ে রাশিয়ায় গিয়ে সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়েছেন। তাকে এই আশ্রয় দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি। 

বাশার আল-আসাদ বিবৃতিতে বলেছেন, ৮ ডিসেম্বর দিনের শুরু পর্যন্ত তিনি নিজস্ব দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ সময়ে তিনি রাজধানী দামেস্কেই ছিলেন। আসাদ লিখেছেন, সিরিয়া থেকে আমার চলে আসা যেমন পরিকল্পিত ছিল না, তেমনি লড়াইয়ের শেষ মুহূর্তে এটা ঘটেনি। (যুদ্ধের) এ সময়গুলোতে কখনোই আমি পদত্যাগের কথা বিবেচনা করিনি। আশ্রয় চাওয়ার কথা ভাবিনি। কোনো বিশেষ দল থেকে আমাকে এমন কোনো প্রস্তাবও দেওয়া হয়নি। 

বাশার আল-আসাদ বলেন, যখন ‘সন্ত্রাসী বাহিনী দামেস্কে অনুপ্রবেশ করে’ তখন তিনি লাতাকিয়ায় সরে যান। সেখানে একটি নৌঘাঁটি পরিচালনা করে রাশিয়া। সেখান থেকে তার রাশিয়ান মিত্ররা যুদ্ধ পরিচালনা তত্ত্বাবধান করে।

এখানে উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট পালিয়ে নয়া দিল্লি চলে যান। তাকে এখনও অনেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দাবি করেন। কিন্তু ভারত জানিয়ে দিয়েছে, তারা শেখ হাসিনাকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিবেচনা করে এবং তার যেসব বক্তব্য মিডিয়ায় আসছে-তাতে ভারতের সমর্থন নেই। বাশার আল-আসাদও একইভাবে পালিয়ে রাশিয়া গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।  বাশার আল-আসাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের মধ্যে অন্যতম রাশিয়া।

সিরিয়ায় ২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরুর সময় থেকে তাকে সহায়তা দিয়ে এসেছে তারা। হমেইমিমে রাশিয়ার বিমান ঘাঁটিতে পৌঁছার পর কী ঘটেছিল সে সম্পর্কে বিবৃতিতে কথা বলেছেন আসাদ। তিনি বলেছেন, ৮ ডিসেম্বর সকালে যখন সেখানে পৌঁছেন ‘তখন এটা পরিষ্কার হয়ে যায় যে-আমাদের বাহিনীকে যুদ্ধের সব লাইন থেকে পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর শেষ পজিশনের পতন হয়েছে। এমন অবস্থায় ওই সামরিক ঘাঁটি ত্যাগ করার কোনো উপায় ছিল না। ফলে মস্কো থেকে অনুরোধ করা হয় যে, ৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ঘাঁটির কমান্ড অবিলম্বে উদ্ধারের একটি বন্দোবস্ত করেছে। সেনাবাহিনীর চূড়ান্ত পজিশনের পতন এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিকল হয়ে যাওয়ার পর যখন দামেস্কের পতন ঘটে তার ঠিক পরের দিন এই ঘটনা ঘটে।

কীভাবে দেশ ছাড়েন তার আরও বর্ণনা আছে ওই বিবৃতিতে। আসাদ জানান, যেহেতু সিরিয়াজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে সন্ত্রাসীরা এবং চূড়ান্তভাবে তারা ৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় দামেস্কে পৌঁছে যায়-তখন প্রেসিডেন্টের পরিণতি এবং তিনি কোথায় আছেন তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ফলে এ ঘটনা নিয়ে ভুয়া তথ্যের বন্যা দেখা দেয়। প্রকৃত সত্য থেকে যা ছিল অনেক অনেক দূরে।

এর মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদকে সিরিয়ায় উদারপন্থি বিপ্লব হিসেবে দেখানো হয়। আসাদ স্বীকার করেন তার দেশত্যাগের পরিকল্পনা কাউকে জানানো হয়নি। তার সহযোগী, কর্মকর্তা এমনকি আত্মীয়দেরও এ বিষয়ে বঞ্চিত করা হয়েছে। তাদেরও অন্ধকারে রাখা হয়েছে। ক্ষমতায় থাকার বছরগুলো নিয়ে তিনি ক্ষমা চাইবেন না। বলেছেন, সিরিয়ার মানুষের সমর্থনে জাতীয় একটি প্রজেক্টের ‘রক্ষক’ বা কাস্টডিয়ান হিসেবে নিজেকে বিবেচনা করেন।

বাশার আল-আসাদ বলেন, জনগণের ইচ্ছাশক্তি এবং দেশকে সুরক্ষিত রাখার সক্ষমতা, প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুরক্ষা এবং জনগণের পছন্দগুলোকে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সমুন্নত করেছি দ্ব্যর্থহীনভাবে। যখন দেশটা সন্ত্রাসীদের হাতে চলে গেছে, তখন অর্থপূর্ণ ভূমিকা রাখার সক্ষমতা হারিয়ে গেছে।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close