প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৩:৪০ পিএম (ভিজিট : ৩৮২)
বাঁশখালীতে বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজে বাঁধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত আ.লীগ নেতারা হলেন, খানখানাবাদ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম ও শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের সভাপতি মো. জোবাইর। একই সাথে খাল বন্ধ করে পানি চলাচলের পথ রুদ্ধ করে দেয়ার চেষ্টার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী।
জানা গেছে, বাঁশখালীর খানখানাবাদ ইউনিয়নের সাগর উপকূলের একটি অবহেলিত গ্রাম হচ্ছে প্রেমাশিয়া। বেড়িবাঁধ না থাকায় সাঙ্গুর নদীর পাড়ে অবস্থিত এই গ্রামের মানুষ ঘূর্ণিঝড়ের সময় থাকতো উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায়। প্রতিবছর প্রাকৃতিক দুর্যোগে এই গ্রামের মানুষের অপূরণীয় ক্ষতি হয়। ঘূর্ণিঝড়ে তলিয়ে যায় এই গ্রাম। অবশেষে দীর্ঘদিনের দুর্দশা দূর হচ্ছে এই গ্রামের মানুষের। নির্মিত হচ্ছে বেড়িবাঁধ। বর্তমানে ১ কোটি ৭৯ লাখ টাকায় বেড়িবাঁধের মাটির কাজ চলছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে প্রেমাশিয়া গ্রামের মৌলভীপাড়া এলাকায় ১ কোটি ৭৯ লাখ টাকার একটি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে ওই এলাকার ৩৬০ টি পরিবার সাঙ্গু নদীর ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ ওয়াজেদ জানান, খানখানাবাদ শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের সভাপতি জুবায়েরের বাঁধার কারণে কয়েকদিন বেড়িবাঁধের কাজ বন্ধ ছিল। সে ইউএনও অফিসে বর্তমান স্থান থেকে বেড়িবাঁধ সরিয়ে খাল বন্ধ করে পানি চলাচলের মুখে বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য আবেদন করেছিল। এখন উপজেলা প্রশাসন সবকিছু তদন্ত করে আগের জায়গায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
সুন্ধপীপাড়া বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি জসিম উদ্দিন জানান, খানখানাবাদ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম ও শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের সভাপতি জোবাইর আমাদের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নের বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজে বাঁধার সৃষ্টি করে আসছে। আমরা প্রশাসনের কাছে পানি চলাচল পথ ও স্লুইস গেইটের মুখ সচল রেখে বর্তমান স্থানে বেড়িবাঁধ নির্মাণ অব্যাহত রাখার দাবি জানাই।
স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য হাফেজ আহমদ জানান, এই বেড়িবাঁধ বাস্তবায়ন হলে ৩৬০ টি পরিবার রক্ষা ও শত শত একর জমির ফসল এবং বিশাল এলাকা জলাবদ্ধতা থেকে রেহাই পাবে। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে এই বেড়িবাঁধের কাজ চলছে। এখানে বাঁধা সৃষ্টি করে কিছু লোক এলাকার স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
এলাকার প্রবীণ ব্যক্তি শেখ আহমদ, আবদুস সত্তার, সৈয়দুল হক ও মোহাম্মদ ফারুক জানান, দীর্ঘদিন পর বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ হলে এলাকার মানুষ যখন আনন্দে আত্মহারা তখন কিছু লোক বেড়িবাঁধটি পানি চলাচলের খাল ও স্লুইস গেইটের মুখে সরিয়ে নিতে অপচেষ্টা করছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের সভাপতি জুবায়ের বলেন, মসজিদের ১০ কানি জায়গাসহ ১০ কানি জায়গা এই বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে পরিত্যক্ত করে ফেলা হচ্ছে। তাই আমরা বিষয়টি সমাধানের জন্য ইউএনও মহোদয়ের কাছে আবেদন করেছি। আমি কাজে বাঁধা প্রদান করিনি।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জামশেদুল আলম বলেন, একটি পক্ষ খাল বন্ধ করে বেড়িবাঁধ নির্মাণের চেষ্টা করলেও জনগণের দাবির মুখে খাল রক্ষা করেই পূর্বের সার্ভে অনুযায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ চলমান রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সময়ের আলো/এএ/