প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭:২৬ এএম (ভিজিট : ১২২)
মাত্র ৫ মাস আগে খালের ওপর ভাঙা ব্রিজ সরিয়ে জিকে খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা সেই ব্রিজের ওপর এখনও ঝুলে আছে নির্মাণ চলাকালে পলিথিন। শেষ হয়নি পাউবোর অডিটও। এখন সেই ব্রিজ ভেঙে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুন কালভার্ট নির্মাণ করবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)।
এ চিত্র ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার জিকে সেচ খালে। খালের ওপর আগের ব্রিজ ভেঙে যাওয়ার পর থেকেই পাউবো ও সওজের সমন্বয়হীনতার বিষয়টি প্রকট হয়ে ওঠে। পাউবো ও সওজের মাঝে এ সমন্বয়হীনতায় গচ্চা যাচ্ছে সরকারি টাকা। এ নিয়ে দফায় দফায় ভোগান্তিতে পড়ছে এলাকার মানুষ। সৃষ্টি হয়েছে ক্ষোভ।
সরেজমিন হরিণাকুণ্ডু উপজেলার কন্যাদহ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, জিকে সেচ খালের ওপর গত ৫ মাস আগে নির্মিত হয়েছে ব্রিজ। ব্রিজের গায়ে এখনও মোড়ানো রয়েছে নতুন পলিথিন। শেষ হয় পাউবোর অডিটও। কিন্তু একই স্থানে সড়ক ও জনপথ বিভাগের আরেকটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই স্থানেই একটি কালভার্ট নির্মাণ করবেন তারা। এ কারণে নতুন ব্রিজটি ভেঙে আবারও কালভার্ট করার চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়েছে সওজ। ফলে সুষ্ঠু পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন ও দুই বিভাগের সমন্বয়ের অভাবে সরকারের গচ্চা যাচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এ নিয়ে স্থানীয় উপকারভোগীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ওই গ্রামের আরশেদ আলী নামের এক কৃষক বলেন, ব্রিজটি নির্মাণেও করা হয়েছে অনিয়ম। সড়ক অনুযায়ী ব্রিজ না করায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এটি যখন নির্মাণ করা হয় তখন তারাই বলেছিল কয়েকদিন পর আবারও নতুন ব্রিজ হবে। আমাদের নিষেধাজ্ঞার পরও তারা নিম্নমানের এই ব্রিজ নির্মাণ করেছেন।
রাশেদ হক নামের এক বাসিন্দা বলেন, সরকারের কত টাকা হয়েছে যে ৫ মাসের মাথায় নতুন ব্রিজ ভেঙে আবারও ব্রিজ করবে। নতুন ব্রিজই যদি করবে তা হলে তো এটার দরকার ছিল না। পাউবো ও সওজ সমন্বয় করলে সরকারের এই বাড়তি টাকা গচ্চা যেত না।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিনহাজুল ইসলাম বলেন, জিকে সেচ খাল যেহেতু আমাদের আওতাধীন তাই আমরা ব্রিজটি নির্মাণ করেছি। কারণে অনেকদিন আগে ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার কারণে এলাকাবাসীর ভোগান্তি হচ্ছিল। সেই ভোগান্তি দূর করতেই আমরা ব্রিজ নির্মাণ করেছি। সড়ক ও জনপথ যদি ওই স্থানে ব্রিজ করে তা হলে আমাদের কাছ থেকে এনওসি নিয়ে করতে হবে। কিন্তু তারা এনওসি না নিয়েই এস্টিমেট করেছে। আগামীতে সওজ বা এলজিইডি যদি জিকে সেচ খালের ওপর ব্রিজ করে আমাদের সঙ্গে আগে থেকে যোগাযোগ করলে এই ভুল বোঝাবুঝি হবে না। এ ব্যাপারে আমরাও সচেষ্ট থাকব।
ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ব্রিজটি পাউবোর আগের নির্বাহী প্রকৌশলীর সময়ে করা। ব্রিজটি যখন নির্মাণ করা হয় সে সময় তিনি দুদফা চিঠিও দিয়েছিলেন কিন্তু পাউবো ও সওজের মাঝে সমন্বয় করা সম্ভব হয়নি। ব্রিজটি নতুন হলেও এটি এলাকার মানুষের চলাচলের অনুপযোগী। তাই এলাকার মানুষের ভোগান্তি দূর করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয় করে নতুন ব্রিজের কাজ শুরু হবে। এতে আশা করি এলাকার মানুষ উপকৃত হবে।