চাঁদাবাজির কারণে কমানো যাচ্ছে না পণ্যমূল্য, ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা জরুরি
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৬:১০ এএম (ভিজিট : ৬২)
দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কৃষকের উৎপাদিত পণ্য ট্রাকে করে আসে ঢাকাসহ জেলা ও বিভাগীয় শহরে। পণ্যবাহী ট্রাকগুলো রাতে ঢাকার বড় বড় পাইকারি বাজারে এসে পণ্য নামতেই দাম হয়ে যায় দ্বিগুণ।
রাতে পণ্যবাহী যেসব ট্রাক আসে সেগুলো ঢাকার বাজারে কীভাবে দাম বাড়ে মূলত সে কথাই তুলে ধরা হয়েছে । এ ছাড়া ব্যবসায়ীরা পণ্যবাহী ট্রাকে চাঁদাবাজির অভিযোগ করে থাকেন। আসলেই কি চাঁদাবাজি হয়? এ ছাড়া চাঁদাবাজির ব্যাপারে ট্রাকচালকরা ঢালাওভাবে বলেন, চাঁদা দিতে হয়। তবে তারা এটা নিশ্চিত করেন, চাঁদার কারণে দাম বেড়ে যায় পণ্যের।
গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ চাঁদাবাজিতে আকাশ ছুঁয়েছিল। সরকার না বন্ধ করতে পেরেছে চাঁদাবাজি, না পেরেছে সিন্ডিকেট ভাঙতে। ইত্যাকার কারণে পণ্যমূল্য কখনো সাধারণ মানুষের নাগালে আসেনি। এ কারণে দেশের মানুষ তাদের প্রতি ক্ষুব্ধ ছিল। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া, ছাত্র-জনতার প্রতি আকণ্ঠ সমর্থন, পণ্যমূল্যে অনুঘটক হিসেবে ভূমিকা রেখেছে।
১৬ ডিসেম্বর দৈনিক সময়ের আলোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার রাজধানীর গুলশান ক্লাবে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশের (আইবিএফবি) বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা বলেন, রাজনৈতিক সমঝোতা করা খুব কঠিন কাজ, সে তুলনায় চাঁদাবাজির সমঝোতা অনেক সহজ। সরকার শুল্ক কমালেও বাজারে নিত্যপণ্যের দাম কমছে না। এর পেছনে একটি কারণ, সমঝোতার মাধ্যমে চাঁদাবাজি জারি রাখা। এই চাঁদাবাজির কারণেই কমানো যাচ্ছে না পণ্যমূল্য। এ ক্ষেত্রে সরকারের নিয়ন্ত্রণের ব্যর্থতা আছে।
প্রতিষ্ঠানগুলো সব ধ্বংস করা হয়েছে। নীতিনির্ধারক, আমলা, ব্যবসায়ী সবাই মিলে নিয়ম ভেঙেছেন।
কীভাবে কৃষকের ১৫ টাকার শসা স্থানীয় ফড়িয়া বিক্রি করছেন ৩০ টাকায়, ঢাকার পাইকারি ব্যবসায়ী বিক্রি করছেন ৬০ টাকায় এবং খুচরায় হয়ে যাচ্ছে ৮০ টাকা। অথচ কোনোরকম সংকট ছাড়াই মধ্যস্বত্বভোগীরাই দাম বাড়িয়ে থাকে এসব পণ্যের।
আমাদের নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারি নজরদারি পূর্বাপর খুবই দুর্বল। এই দুর্বলতার সুযোগে রাস্তায় রাস্তায় চাঁদাবাজি, একাধিক মধ্যস্বত্বভোগী সিন্ডিকেট অনেক দিন ধরেই নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে।
এই মধ্যস্বত্বভোগীরা উৎপাদন পদ্ধতি এবং উৎপাদন সম্পর্কের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নয়। তবু তাদের কারসাজিতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উৎপাদনকারী প্রান্তিক কৃষক এবং ভোক্তারা। এই চাঁদাবাজ ও সিন্ডিকেটের হাত থেকে প্রান্তিক কৃষক এবং ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার বিদ্যমান ব্যবস্থাগুলো আরও গতিশীল ও কার্যকর করা জরুরি। এখন দলীয় সরকার নেই। এখনই কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে। এতে বাজারে ভারসাম্য আসবে। সাধারণ মানুষের মধ্যে ফিরবে স্বস্তি।
সময়ের আলো/জেডআই