প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২:১০ এএম (ভিজিট : ৬৪)
চট্টগ্রামে খাতুনগঞ্জের আড়তে কমতে শুরু করেছে ভোগ্যপণ্যের দাম। সয়াবিন তেলের দাম এখনও চড়া হলে পেঁয়াজসহ কয়েক ধরনের পণ্যের দাম নিম্নমুখী। পেঁয়াজ ছাড়াও আদা রসুন ডাল চিনির দামও কমছে। দাম কমার দিক দিয়ে এগিয়ে আছে পেঁয়াজ। এক সপ্তাহ আগে খাতুনগঞ্জের আড়তে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৭৫ থেকে ৭৮ টাকা পর্যন্ত। সেই পেঁয়াজের কেজিপ্রতি দাম এখন ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় এসে ঠেকেছে। আড়তদাররা বলছেন, পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে গড় হিসাব করলে ২০ টাকা কমেছে।
খাতুনগঞ্জের লামার বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও পেঁয়াজের আড়তদার মোহাম্মদ ইদ্রিস সময়ের আলোকে বলেন, পেঁয়াজের দাম কমছে। ভারত থেকে পেঁয়াজের আমদানি প্রবাহ স্বাভাবিক আছে। তাই পেঁয়াজের দাম ধীরে ধীরে কমছে। এক সপ্তাহ আগে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ৭৫ থেকে ৭৮/৮০ টাকা ছিল। এখন কমতে কমতে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় ঠেকেছে। শুধু পেঁয়াজ নয়, অন্য আইটেমের ভোগ্যপণ্যের দামও কমেছে। রসুন-আদার দামও নিম্নমুখী। এই মুহূর্তে এসব পণ্যের দাম বৃদ্ধির কোনো সুযোগ নেই। তার মতে দেশীয় পেঁয়াজ সরবরাহ তাড়াতাড়ি বাড়বে। তখন সীমান্ত ঘুরে আসা পেঁয়াজের দাম আরও কমবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খাতুনগঞ্জের আড়তে এক সপ্তাহ আগে পাইকারিতে প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হয় ২০৭ থেকে ২১০ টাকা। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হয় ১৯০ টাকা। প্রতি কেজিতে অন্তত ২০ টাকা দাম কমেছে। প্রতি কেজি ১০০ টাকার আদা এখন ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আদা বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৮৫-৯০-১০০ টাকায়। কোনো কোনো আদা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ টাকা করে। তবে ক্রেতারা বেশি দামের ভালোমানের আদা কিনতে বেশি আগ্রহী।
খাতুনগঞ্জের আড়তসহ পাইকারি ও খুচরা দুই পর্যায়ে কমছে সব ধরনের ডাল। গেল তিন দিন ধরে মোটা দানার মসুর ডাল প্রতি কেজি ৯০ থেকে ৯৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এক সপ্তাহ আগের তুলনায় প্রতি কেজিতে দাম কমেছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। তবে ভালো মানের (ছোট দানা) মসুর ডালের দাম প্রতি কেজি এখনও ১০০ টাকার বেশি। প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৬৩ টাকার মটরের ডাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা থেকে ৫৬ টাকায়। খুচরা পর্যায়ে এসব মটর ডাল প্রতি কেজি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ১৩৫ টাকা চনার ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা থেকে ১২৫ টাকায়। পাইকারি দামে নিম্নমুখী প্রভাব থাকলেও খুচরায় দাম ধরে রাখার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, খাতুনগঞ্জের আড়তে দাম কমলেও আমাদের স্টকে বেশি দামে কেনা পণ্য থেকে গেছে। এসব বিক্রি শেষ হলে আমরা আড়ত থেকে কম দামের পণ্য কিনতে যাব। এরপর তা খুচরা পর্যায়ের ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতে পারব। এর আগে খুচরা ক্রেতাদের কাছে ক দামে বিক্রির সুযোগ নেই।
নগরীর চান্দগাঁও এলাকার খুচরা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইদ্রিস সওদাগর বলেন, পাইকারি বাজার থেকে পনেরো দিন আগে পেঁয়াজ প্রতি কেজি কিনেছি ৮০ টাকার বেশি দাম দিয়ে। পরিবহন খরচসহ যোগ করলে কেজিতে ১০ টাকা বাড়তি দাম রাখতে হয়। তাই আমরা এখনও প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করছি ৯০ টাকার বেশি দামে। তবে আড়ত থেকে কম দামে কেনা পেঁয়াজ কেনার পর ক্রেতাদের কাছে কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারব।
খাতুনগঞ্জ আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, বছরের এই সময়ে বিশেষ করে ডিসেম্বরে ভোগ্যপণ্যের দাম কমে যায়। মাঝেমধ্যে ব্যতিক্রম হলেও দাম কমই থাকে। গেল এক সপ্তাহ ধরে আড়তে সব ধরনের পণ্যের দাম নিম্নমুখী। বিশেষ করে পেঁয়াজ আদা রসুনের দাম নিম্নমুখী। সরবরাহ পরিস্থিতিও ভালো মনে হয়। এই ধারা অব্যাহত থাকলে দাম আরও কমে আসবে।
সময়ের আলো/জেডআই