প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২:০৪ এএম (ভিজিট : ১৪৪)
বাংলাদেশের জন্য ২০২৫ সালের হজে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮টি কোটা নির্ধারণ করে দিয়েছিল সৌদি আরব সরকার। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ পোর্টালের তথ্যানুযায়ী, নির্ধারিত সময়ের শেষ দিন গত রোববার রাত পর্যন্ত হজে যেতে প্রাথমিক নিবন্ধন করেছেন ৬৬ হাজার ৭৭২ জন। এর মধ্যে সরকারি মাধ্যমে ‘প্রাথমিক নিবন্ধন’ করেছেন ৪ হাজার ৭৬১ জন এবং বেসরকারি মাধ্যমে করেছেন ৬২ হাজার ১১ জন। এ হিসাবে প্রায় অর্ধেক হজের কোটাই এবার পূরণ হয়নি। হজের জন্য প্রাথমিক নিবন্ধনের সময় ছিল প্রায় সাড়ে তিন মাসের মতো।
হজের প্রায় সাড়ে ছয় মাস বাকি থাকতেই প্রাথমিক নিবন্ধনের সময়সীমা শেষ করা হয়েছে এবং আপাতত সময় আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। ফলে সময় আর না বাড়ালে ২০২৫ সালে হজ পালন করতে বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দ করা কোটার অর্ধেক খালি থেকে যাবে। মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের উপসচিব রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেছেন, হজের নিবন্ধনের সময় আপাতত বাড়বে না। পরবর্তীতেও সময় বাড়ানোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কোটা ফাঁকা থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিবন্ধনের জন্য প্রায় সাড়ে তিন মাস দেওয়ার পরও কেউ যদি না যেতে চায়, আমরা কীভাবে আনব।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবুবকর সিদ্দীক জানান, ইতিমধ্যেই যারা নিবন্ধন করেছেন, তাদের অর্থ সৌদি আরবে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। না হয়, পরে তাঁবু বরাদ্দ পেতে অসুবিধে হয়, হোটেল থাকে দূরে। সে জন্য তারা আগেভাগেই সৌদি আরবের অংশের খরচের অর্থ পাঠিয়ে দেবেন।
চাঁদ দেখাসাপেক্ষে আগামী ৫ জুন হজের আনুষ্ঠানিকতা হবে। ‘প্রাথমিক নিবন্ধনের’ শেষ দিন ছিল গত রোববার। হাইকোর্টের রায়ে বহাল থাকায় হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি ফারুক আহমেদ সরদার বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে হজের মূল প্যাকেজের খরচ কমানোর পরও কোটা পূরণ না হলে সেটা তাদের জন্যও অস্বস্তিকর। সৌদি অংশে বড় ধরনের কোনো অসুবিধা না হলে তারা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ করে আরেক দফা সময় বাড়ানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন। সময়টা বাড়বে বলে আশাবাদী তিনি।
গত ৩০ অক্টোবর সরকারিভাবে দুটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। ঘোষিত সাশ্রয়ী সাধারণ প্যাকেজ-১ অনুযায়ী খরচ ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা। সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রায় প্রত্যেক হজযাত্রীর চলতি বছরের প্যাকেজ-১-এর চেয়ে ১ লাখ ৯ হাজার ১৪৫ টাকা কম খরচ হবে। অন্য প্যাকেজে (প্যাকেজ-২) খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা। এ হিসাব খাবার খরচ ছাড়া। বিগত হজে সরকারিভাবে হজে যেতে সাধারণ প্যাকেজে ৫ লাখ ৮৭ হাজার ৩৮৭ টাকা খরচ হয়েছিল। বিশেষ হজ প্যাকেজের মূল্য ছিল ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা। এবার বিশেষ প্যাকেজ করা হয়নি।
এ ছাড়া বেসরকারি মাধ্যমে সাধারণ হজ প্যাকেজের মূল্য ৪ লাখ ৮৩ হাজার ১৫৬ টাকা (খাবার খরচ ছাড়া) নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। গত ৬ নভেম্বর হাবের বাতিল হওয়ার কমিটি আগামী বছর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনে দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করে। ‘সাধারণ হজ এজেন্সির মালিকবৃন্দ’ ব্যানারে তারা এ প্যাকেজ ঘোষণা করে। খাবার খরচ যুক্ত করে সাধারণ হজ প্যাকেজের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার এবং বিশেষ হজ প্যাকেজের মূল্য ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। পরের দিন ৭ নভেম্বর ‘বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সি মালিকরা’ তিনটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করে। তাদের ঘোষণা করা প্রথম প্যাকেজের মূল্য ধরা হয়েছে ৫ লাখ ১৮ হাজার টাকা, দ্বিতীয় প্যাকেজের মূল্য ৫ লাখ ৮৫ হাজার এবং বিশেষ হজ প্যাকেজ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
সময়ের আলো/জেডআই