প্রকাশ: সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১:১৬ এএম (ভিজিট : ৬২)
আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীতে মানব জাতিকে পাঠিয়েছেন জোড়া হিসেবে-অর্থাৎ পুরুষ ও নারী। তন্মধ্যে নারীদের মাতৃকুল হিসেবে দিয়েছেন বিশেষ মর্যাদা, দায়িত্ব, গুণ ও বৈশিষ্ট্য। মানব জাতির বংশধারা অব্যাহত রাখার প্রয়োজনেই নারীদের প্রতি পুরুষদের করা হয়েছে বিশেষ আকর্ষণ ও দুর্বলতা। আর শয়তান এ সুযোগ কাজে লাগায়।
নারী জাতিকে প্রাক-ইসলামি যুগের নির্যাতন থেকে মুুক্তি দিয়েছে ইসলাম। তাদের উত্তরাধিকারী সম্পদ ভোগ করার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে ইসলাম। এ ছাড়াও নারীর পূূর্ণ অধিকার প্রতিষ্ঠায় এবং তাদের স্বাধীনতা প্রদানে একমাত্র ইসলামই কার্যকরী ভূমিকা রেখেছে। একইসঙ্গে নারী সম্পর্কিত কিছু বিষয়কে কেয়ামতের আলামত হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। সুতরাং নারীদের মধ্যে যখন ওইসব বিষয় পাওয়া যাবে তখন সেসব কেয়ামতের আলামত হিসেবে বিবেচিত হবে।
পর্দার বিধান লঙ্ঘন : নারী যখন পর্দাবিধানকে লঙ্ঘন করবে এবং পর্দাপ্রথাকে নিজের জন্য বাধা মনে করবে, তখন নারীদের এ পর্দাহীনতাই হবে কেয়ামতের একটি ভয়ংকর আলামত। অথচ পর্দা নারীর সতীত্ব রক্ষার প্রাচীর। নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা ইসলাম কখনো সমর্থন করে না। কেননা অবাধ মেলামেশা হলো পর্দাহীনতা। বর্তমান মানব সমাজে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা বেড়েই চলছে। অপসংস্কৃতির সয়লাব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা কেয়ামত অতি সন্নিকটের দাবি বহন করে। এ মর্মে রাসুল (সা.) বলেন, ‘কেয়ামতের আলামত হলো-মানুষ পরস্পরকে সালাম দেবে পরিচিতি লাভের উদ্দেশ্যে এবং মসজিদকে রাস্তা বানিয়ে ফেলবে। নারীরা অহংকারবশত সীমালঙ্ঘন করবে। এতে তাদের মূল্য কমে যাবে, যা কেয়ামত পর্যন্ত আর বাড়বে না। আর নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা শুরু হয়ে যাবে।’ (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক : ৫১৩৭)
নারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি : বর্তমান বিশ্বে নারীর সংখ্যা পুরুষের চেয়ে শতকরা ৮২ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সামনের দিনগুলোতে নারীর সংখ্যা ব্যাপকহারে আরও বৃদ্ধি পাবে। নবীজি (সা.) নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াকে কেয়ামতের আলামত বলেছেন। হাদিসে বলা হয়েছে একজন পুরুষের বিপরীতে পঞ্চাশ নারী হবে। আর তখন নারীদের স্বীয় সতীত্ব হারাতে দেখা যাবে। মানব সমাজ কলুষিত হবে। বর্তমান সমাজে ধর্ষণের ঘটনা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তেমনিভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে ধর্ষণ-পরবর্তী ধর্ষিতাকে হত্যা। এটি কেয়ামত কাছেই সুস্পষ্ট আলামত। এ প্রসঙ্গে রাসুল (সা.) বলেন, ‘কেয়ামতের আলামত হলো ইলম উঠে যাবে, অজ্ঞতা ব্যাপকতা লাভ করবে। মদ্যপান ও ব্যভিচার বৃদ্ধি পাবে। পুরুষরা কমে যাবে এবং নারীদের সংখ্যা এমন হারে বৃদ্ধি পাবে যে, প্রতি পঞ্চাশ জন নারীর বিপরীতে একজন সুপুরুষ পাওয়া যাবে।’ (বুখারি : ৫৬৩৬)
স্ত্রীর প্রতি আনুগত্য : পরিবারে স্বামীই প্রধান। কিন্তু বর্তমানে স্বামীকে স্ত্রীর অনুসরণ করতে দেখা যায়। এমনকি স্বামীকে স্ত্রী নির্দেশ দিয়ে থাকে। স্বামী স্ত্রীর আনুগত্য করে। এভাবে স্বামী স্ত্রীর অনুগত হওয়া কেয়ামতের আলামত। এ মর্মে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যখন গনিমতের মালকে ব্যক্তিগত মাল হিসেবে ব্যবহার করা হবে, আমানতকে গনিমতের সম্পদ মনে করা হবে, জাকাতকে জরিমানা ধারণা করা হবে, দ্বীন ব্যতীত অন্য উদ্দেশ্যে ইলম অর্জন করা হবে, পুরুষ তার স্ত্রীর আনুগত্য করবে এবং মায়ের নাফরমানি করবে আর বন্ধুকে খুব নিকটে স্থান দেবে এবং আপন পিতাকে দূূরে সরিয়ে রাখবে, মসজিদে শোরগোল করা হবে, ফাসেক ব্যক্তিই গোত্রের নেতা হবে, ক্ষতির ভয়ে মানুষকে সম্মান করা হবে, গায়িকা ও বাদ্যযন্ত্রাদি ব্যাপকভাবে প্রকাশ লাভ করবে, মদ্যপান বৃদ্ধি পাবে এবং এই উম্মতের লোকরা পূর্ববর্তী লোকদের প্রতি অভিসম্পাত করতে থাকবে। সেই সময় তোমরা অপেক্ষা কর রক্তিম বর্ণঝড়ের, ভূমিকম্পের, ভূমিধসের, রূপ বিকৃতির, পাথরবৃষ্টির এবং সুতা ছিঁড়া দানার ন্যায় একটির পর একটি নিদর্শনসমূহের।’ (তিরমিজি)
সময়ের আলো/আরএস/