প্রকাশ: রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮:২৪ এএম (ভিজিট : ৭৬)
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ সানারপাড় এলাকায় বাসস্ট্যান্ডে আসিয়ান (এসিবাস) চালকের সঙ্গে তর্কের জেরে বাস ভাঙচুর চালক ও সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগে বিএনপি নেতা ইকবালকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় সাংবাদিক মিনহাজ আমান তার ফেসবুকে ঘটনাটি শেয়ার করেন। তার পোস্ট শেয়ার করেন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল-জাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের সামিসহ অনেকেই তুলে ধরেন বিষয়টি। এ ঘটনা মুহূর্তেই সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে ঘটনাটি সংবাদে প্রকাশিত হলে শুক্রবার রাতেই বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর-২ ইকবাল হোসেনকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তির চিঠিতে বলা হয়েছে, "মিনহাজ আমান নামে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের একজন সাংবাদিককে প্রকাশ্যে আপনি আপনার দলবল নিয়ে শারীরিকভাবে আঘাত এবং লাঞ্ছিত করেছেন- যা সম্পূর্ণরূপে দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থী ঘৃণ্য অপরাধ'।
এ ধরনের গুরুত্ব কর্মকাণ্ডের জন্য আপনাকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সামরিক বহিষ্কার করা হলো। এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর করার জন্য কেন্দ্রীয় থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের কাছে অনুলিপি পাঠানো হয়"।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে ঘটনার পর আসিয়ান পরিবহনের একটি এসি বাসচালক নয়ন গণমাধ্যমে বলেন, গুলিস্তান থেকে গাড়ি চালিয়ে আসছিলাম সায়দাবাদে যানজটে থাকার সময় গাড়ির সামনে একটি মোটরসাইকেল এসে থামে। দ্রুত ব্রেক করায় গাড়ির যাত্রীদের ঝাঁকি লাগে। তখন মোটরসাইকেলে থাকা সেই নেতা বলে কিরে কেমনে গাড়ি চালাস? এ নিয়ে তর্ক হলে সে আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন। তারপর 'বাস সাইনবোর্ড এলাকা অতিক্রম করে সানারপাড় আসার পর ২৫-৩০ জন লোক এসে আমার গাড়ি ভাঙচুর করে ও আমাকে বেধড়ক মারধর করে। আমার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে ও গ্লাস ভেঙে আমার মাথা কেটে যায়। পরে তার কাছে মাফ চেয়ে আমি নিস্তার পাই। পরে আমার হাতে তার ভিজিটিং কার্ড ধরিয়ে দিয়ে বলে পারলে কিছু করিস। বিষয়টা মালিক পক্ষকে জানিয়েছি। এসময় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের মিনহাজ আমান নামে একজন সাংবাদিক বাস ভাঙার প্রতিবাদ করলে তাকে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠে ইকবালসহ তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে। পরে আহত নয়ন স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছে।
ভুক্তভোগী বাসচালক নয়নের দাবি, তর্কে উঁচু গলায় কথা বলার অপরাধে তাকে মারধর ও গাড়ি ভাঙচুর করেছে বিএনপি নেতার অনুসারীরা।
মিনহাজ আমান নামে এক যাত্রী (সাংবাদিক) বলেন, 'বাস ভাঙচুর করতে বাধা দেয়ায় আমাকেও লাঞ্ছিত করা হয়। বাসচালকের আচরণে ক্ষুব্ধ ছিলেন বিএনপি নেতা। সানারপাড়ে বাস ভাঙচুরের সময় তাকে বলি এটা ঠিক হচ্ছে না। এ কথা শুনে তার লোকজন আমার গলা চেপে ধরে। এ নিয়ে কথা বলতে গেলে ইকবাল বলেন, আপনি কি করবেন কোইরেন।'
এ বিষয়ে কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন বলেন, গাড়ির ড্রাইভার বাজে আচরণ করেছে। ওরে ভালোভাবে গাড়ি চালাতে বলায় আমাকে বলে 'আপনে গাড়ি চালান'। আমি বলছি, সাইনবোর্ড রাখ তোর ব্যবস্থা নিচ্ছি। ও আমাকে বলে এমন ফাপর অনেকেই দেয়। আর ও মাফ কখন চেয়েছে? আমার চিন্তা ছিলো কান ধরিয়ে ছেড়ে দিব। কিন্তু পাবলিক তো আর এটা বুঝে না।
সময়ের আলো/এএ/