অভিজ্ঞ ডাক্তারের বদলির কারণে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট আবার অকার্যকর হয়ে পড়েছে। ন্যূনতম দগ্ধ নিয়ে এলেও পাওয়া যাচ্ছে না চিকিৎসাসেবা।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে ঝালকাঠিতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের দুর্ঘটনার পর বার্ন ইউনিটটি স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে তোড়জোড় শুরু হয়। ঢাকা ও রংপুর থেকে বিশেষজ্ঞদের বরিশালে পদায়ন করে পুরোদমে চালু করা চিকিৎসাসেবা। কিন্তু সম্প্রতি দক্ষ প্রায় সব চিকিৎসক পদোন্নতি পেয়ে ঢাকা চলে যাওয়ায় মুখ থুুবড়ে পড়েছে এই ইউনিটটি।
জানতে চাইলে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা মো. রেজওয়ানুর আলম বলেন, ঝালকাঠির দুর্ঘটনার পর থেকে বার্ন ইউনিট নিয়ে আমরা নড়েচড়ে বসি। কিন্তু সম্প্রতি এই ইউনিটের দুজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার অন্যত্র যোগদান করায় আমরা অনেকটাই বিপাকে পড়েছি। একজন মেডিকেল অফিসার দিয়ে এখন ইউনিটটি চালাতে গিয়ে আমরা হিমশিম খেয়ে যাচ্ছি।
২০১৫ সালের মার্চ মাসে চালু হওয়া ইউনিটটি এর আগেও ডাক্তার শূন্যতার কারণে ২০২০ সালের ১৮ মে বন্ধ হয়ে যায়। ২০২১ সালের ২৪ ডিসেম্বর ঝালকাঠিতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের পর ৮১ জন দগ্ধ রোগী ভর্তি হলে পুনরায় ইউনিট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। ঢাকা ও রংপুর থেকে একজন সহযোগী অধ্যাপক, একজন রেজিস্ট্রার ও একজন জুনিয়র কনসালটেন্ট যোগদান করার পর পুনরায় চালু হয় এই ইউনিট।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এক রোগীর স্বজন বলেন, এটা দুঃখজনক যে বার্ন ইউনিটের রোগী এখন রাখা হচ্ছে শিশু সার্জারিতে। বার্ন ইউনিটে সিট নেই, ডাক্তার নেই, শুধু নেই নেই। দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার বার্ন রোগীর আল্লার দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কিছু করার নেই।
রোজি বেগম নামে আরেকজন বলেন, আমাদের দাবি হলো ডাক্তারের পদায়ন না করে এখান থেকে বিশেষজ্ঞদের বদলি করা যাবে না। এখন বলেন ডাক্তার না থাকায় এ রোগীর চিকিৎসা দেবে কে?
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে প্রফেসর, রেজিস্ট্রার, দুজন সহকারী রেজিস্ট্রার ও ইএমওসহ ৮ জন ডাক্তার ও অন্তত ১০ জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর পদ শূন্য রয়েছে ইউনিটটিতে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেন এই হাসপাতালে পৃথক বার্ন ইউনিট গঠনের পর এমন সমস্যা আর থাকবে না।
এ বিষয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. এসএম মনিরুজ্জামান বলেন, হাসপাতালে যে মাপের বার্ন ইউনিট থাকা দরকার তা আমাদের নেই। এখন একজন মেডিকেল অফিসার, ইন্টার্ন ও নার্সদের দিয়ে এ ইউনিট চালিয়ে রাখা হচ্ছে। একটি পৃথক বার্ন ইউনিট নির্মাণের কথা চলছে, সেটা হলে আর সমস্যা থাকবে না। তবে সেটা কবে হবে তা জানি না।
সময়ের আলো/আরএস/