প্রকাশ: বুধবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮:৫৭ পিএম (ভিজিট : ২২৬)
শামীমা (ছদ্মনাম) স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হওয়ার পর দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করছিলেন। ২০২১ সালে তার সঙ্গে পরিচয় হয় সান্টু বিশ্বাস (৩৯) নামে এক ব্যক্তির, যিনি নিজেকে একজন মুসলিম ও মেজর পদমর্যাদার সেনা কর্মকর্তার পরিচয় দেন। সান্টু তার কথা দিয়ে শামীমার বিশ্বাস অর্জন করে, শামীমার সরলতার সুযোগ নিয়ে বিয়ের মিথ্যা ডকুমেন্টস তৈরি করে তাতে স্বাক্ষর নিয়ে নেয়। এরপর স্বামী-স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়ে তারা বিভিন্ন সময় শারীরিক সম্পর্ক করতে থাকেন। এসময় সান্টু গোপনে তাদের ব্যক্তিগত ভিডিও ও ছবি ধারণ করে রাখতেন। সান্টু সেনা কর্মকর্তা ছাড়াও নিজেকে ঢাকা-যশোর রুটের 'যশোর ট্রাভেলস’ নামের পরিবহন ও বিশ্বাস গার্মেন্টসের মালিক হিসেবে পরিচয় দেন। এছাড়াও প্রাতিষ্ঠানের বিভিন্ন সমস্যার কথা বলে শামীমার কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়।
এক সময় শামীমা বুঝতে পারেন যে, সান্টু আসলে কোনো সেনা কর্মকর্তা নয় এবং সে একজন প্রতারক। জালিয়াতি ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর, শামীমা সান্টুর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। তবে সান্টু এখানেই থেমে না থেকে, কিছুদিন পর শামীমার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তার আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও প্রকাশের হুমকি দেয়। গত ৮ মে সান্টু শামীমা ও তার ছেলের মোবাইলে কিছু আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও পাঠিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। এসময় হুমকি দিয়ে বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা না পাঠালে এসব ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেবে।
এই ঘটনার পর শামীমার ছেলে পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে ডিএমপির লালবাগ থানায় ১১ জুন পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেন।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. আজাদ রহমান ঘটনা নিশ্চিত করে বলেন, ভুক্তভোগীর ছেলের করা মামলাটির তদন্তভার সিআইডি গ্রহণ করে। তদন্তের এক পর্যায়ে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের (সিপিসি) একটি দল অভিযান পরিচালনা করে ব্ল্যাকমেই ও প্রতারণার অভিযোগে সান্টু বিশ্বাসকে গাজীপুর চৌরাস্তা সংলগ্ন অনুপম সুপার মার্কেট থেকে গ্রেফতার করে। তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারের সময়ে সান্টুর কাছ থেকে অপরাধের কাজে ব্যবহৃত ৩টি ফোন উদ্ধার করা হয়। প্রথামিক জিজ্ঞাসাবাদে সান্টু ঘটনার সঙ্গে জড়তি থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
সময়ের আলো/এম