ই-পেপার রবিবার ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
রবিবার ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
ই-পেপার

রবিবার ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪

‘জুলাই-আগস্টের বাস্তবতায় ১৫ বছরের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ভোলা যাবে না’
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮:৫৮ পিএম আপডেট: ১০.১২.২০২৪ ১০:৩১ পিএম  (ভিজিট : ১৮৭)
বিগত ১৫ বছরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আওয়ামী ফ্যাসিস্টের অন্যতম সহযোগী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। তারা দিনে-দুপুরে প্রকাশ্যে সাধারণ মানুষ, বিএনপি এবং ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের গুম-খুনের ঘটনা ঘটিয়েছিল। জুলাই-আগস্টের বাস্তবতায় বিগত ১৫ বছরের ফ্যাসিস্ট শাসনামলে যে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে তা ভুলে যাওয়া যাবেনা। এই গুম-খুন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর বিচার নিশ্চিত করতে হবে।  

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

‌‌‘ভবিষ্যত বাংলাদেশের মানবাধিকার ভাবনা ও ছাত্রসমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের মানবাধিকার সেল। 

আলোচনা সভায় বিকল্প ধারা বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নূরুল আমিন বেপারী বলেন, যেখানে অন্যান্য দল নির্বাচনে আসন নিয়ে ভাগাভাগি করছিল তখন তারেক রহমান বিজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছেন। হাসিনা ওয়াজেদ বিদেশি শক্তি নিয়েও তাকে বাদ দিতে পারেনি। এখন ওয়ান ইলিভেন সৃষ্টি করেও তারেক রহমানকে বাদ দেয়া যাবে না। তিনি ফিরবেন এদেশে।

তিনি বলেন, তারেক রহমান যে ৩১টি দফা দিয়েছে তা যদি বাস্তবায়িত হয় তাহলে আপনাদের আশা আকাঙ্খা বাস্তবায়িত হবে। আলোকিত সমাজ প্রতিষ্ঠিত না হলে আলোকিত মানুষ প্রতিষ্ঠিত হবে না। ৩১ দফায় তিনি  জ্ঞান ভিত্তিক সমাজের কথা বলেছেন। তরুণ নেতৃত্ব ছাড়া সমাজ পরিবর্তন হবে না। তাই তিনি প্রস্তাব করেছেন দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না। 

আলোচনা সভায় ২০১২ সালে গুম হওয়া বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা বলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ মানবাধিকার কমিশন গঠন করেছিল। কিন্তু কমিশনের কাউকে তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়নি। উল্টো যারা মানবাধিকার নিয়ে কাজ করতো তারা মামলা হয়রানির শিকার হতো। আওয়ামী লীগ তার ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে গুমরে সংস্কৃতি চালু করেছিল। বিগত পনেরো বছরে যত গুম হয়েছে এর মধ্যে বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী বেশি।

তিনি বলেন, ছাত্র জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে যে সরকার গঠন হয়েছে এই সরকারের কাছে প্রত্যাশা বেশি ছিল। যারা গুম হয়েছে তাদের খুঁজে পাব এমন প্রত্যাশা ছিল। তবে এখন পর্যন্ত শুধু আন্তর্জাতিক গুম সনদে স্বাক্ষর আর গুম কমিশন গঠন করা হয়েছে। গুম কমিশন গঠন করলেও আমরা এর কোন কার্যকরী পদক্ষেপ দেখতে পাই না।

শেখ হাসিনার আমলে জিয়া পরিবারের উপর এবং নিজের উপর 
নির্যাতনের ঘটনা তুলে ধরেন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (ইউট্যাব) মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান। 

তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক’ এই কথাটির জন্য শেখ হাসিনার নির্দেশে আমাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল। একদিনের নোটিশে আমার ক্যান্সারে আক্রান্ত বউকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। ২৭টি মামলা আমার বিরুদ্ধে করা হয়েছে, ২টি রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা। উত্তরার বাসায় গিয়ে পুলিশ আমার বৃদ্ধ বাবা মাকে হেনেস্তা করেছে। 

এসময় তিনি বলেন, সরকারকে এর বিচার করতে হবে নয়তো ছাত্র জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার ব্যর্থ হবে। ভবিষ্যতে কাউকে যেন এরকম নির্যাতনের শিকার না হতে হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দিকে ইঙ্গিত করে আলোচনা সভায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, দুঃখের বিষয় ‘বিশ্ব মানবাধিকার দিবস’ উপলক্ষেও তাদের কোনো কর্মসূচি দেখলাম না। এগুলো সংকীর্ণ মনের পরিচয়। মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে যদি কর্মসূচি আয়োজন করে- সেখানে অবশ্যই ছাত্রদলের বীরত্বের কথাই বলতে হবে। ছাত্রদল কিভাবে বিগত ১৫ বছর প্রতিটি ক্যাম্পাসের টিকে ছিল, রাজপথে ছিল, যখন গুমের কথাগুলো শুনবেন, ছাত্রদলের গুমের শিকার পরিবারগুলোর বক্তব্যে শুনবেন- আপনারা ছাত্র সমাজ স্বীকার করতে বাধ্য হবেন এই জুলাই-আগস্টের মঞ্চ প্রস্তুত হয়েছে ছাত্রদলের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে। 

তিনি বলেন, অপরাজয় বাংলার পাদদেশে, রাজু ভাস্কর্যের সামনে পুরো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের উপর শত শতবার হামলা করেছে ছাত্রলীগ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল এবং ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের শতশত নেতাকর্মী চরম নির্যাতনের শিকার হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করেছে, লেখাপড়া শেষ করতে পারেনি। ছাত্রলীগের সেই চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপনের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের ‘স্কুল অফ ল’ এর ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাজমুজ্জামান ভূঁইয়া, সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, শহীদ রাব্বী আলম পাভেলের পিতা প্রমুখ। 

সময়ের আলো/জেডআই




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close