রাজনৈতিক দলকে বাড়তি সুবিধা না দেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি নির্দেশনা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তেলবাজি বন্ধ করতে হবে। সিভিল ড্রেসে কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। কোনো নিরপরাধ কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। ভুয়া মামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দোষী কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ১৫ বছরে প্রতিবেশী দেশ এদেশ থেকে অনেক সুবিধা নিয়েছে। এখন সুবিধা না পেয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। আর সুবিধা দেওয়া হবে না। তারা যেন বেশি বাড়াবাড়ি না করে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় খুলনার শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ড, আনসার ও ভিডিপি, কারা অধিদফতর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উপদেষ্টা বলেন, দেশের বিভিন্ন থানা থেকে অস্ত্র লুট হয়েছে। কিন্তু অভিযানে এখনও আশানুরূপ অস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারের মধ্য দিয়ে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে। তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গায় মব জাস্টিস হচ্ছে। অনেকে আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে। যে কারণে হত্যাকাণ্ডও হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। এটা বন্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।
জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবের পর অনেক থানা থেকে অস্ত্র লুট হয়েছে। এগুলো উদ্ধার না হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কিছুটা বিঘ্ন ঘটতে পারে এমন আশঙ্কা করে তিনি বলেন, এজন্য আরও কঠোর হয়ে অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চালাতে হবে। যেসব শীর্ষ সন্ত্রাসী ২০-২৫ বছর ধরে কারাভোগ করে এখন মুক্ত হয়েছে তাদের ব্যাপারেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, সকল প্রকার সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে হবে। কোন রাজনৈতিক দলকে বাড়তি সুযোগ দেওয়া হবেনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সকল প্রকার চাঁদাবাজি বন্ধে আরও কঠোর হতে হবে।
মাদকের ব্যাপারে সরকার জিরো টলারেন্স উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরকে অন্যান্য সংস্থা সহযোগিতা করবে। যতদিন পর্যন্ত তাদেরকে হাতিয়ার না দেওয়া হয় ততদিন তারা পুলিশ বা অন্য কোন বাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ করবে।
খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি মো. রেজাউল হকের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তৃতা করেন বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার। মতবিনিময় সভায় পুলিশের আইজি মো. বাহারুল আলম, খুলনা নেভাল এরিয়া কামান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল গোলাম সাদেক, বিজিবি মহাপরিচালক জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, র্যাবের মহাপরিচালক একেএম শহিদুর রহমান, ১০৫ ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজহার সিদ্দিকী, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার, ডিজিএফআই খুলনার কর্নেল জিএস সৈয়দ আসাদুজ্জামান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার টিএম মোশাররফ হোসেন প্রমুখসহ খুলনা বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের সিভির ও পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বিকেলে খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কার্যালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দফতর ও সংস্থার খুলনা অঞ্চলে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগদান করেন।
সময়ের আলো/আরআই