প্রকাশ: সোমবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৫:২৪ এএম (ভিজিট : ৩১২)
মিষ্টি কাঁঠালের জন্য প্রসিদ্ধ সবুজ-শ্যামলে ভরপুর গাজীপুর। কাঁঠালের রাজধানীখ্যাত গাজীপুর শ্রীপুরের মুলাইদ গ্রামে বারোমাসি কাঁঠাল চাষ করে বাজিমাত করেছেন মাহমুদুল হাসান সবুজ নামের এক কৃষি উদ্যোক্তা। রোপণের দেড় বছরের মাথায় গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে কাঁঠাল। গাছের গোড়া থেকে মগডাল পর্যন্ত থোকায় থোকায় ঝুলছে কাঁঠাল। ফল গবেষকরা বলছেন, অসময়ে অধিক দাম পাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় কৃষি অর্থনীতিতেও এর ছোঁয়া লাগবে।
কাঁঠাল গ্রীষ্মকালীন ফল হলেও কৃষি প্রযুক্তির ছোঁয়ায় এখন সারাবছরই মিলছে জাতীয় এই ফল। দেশের ফল গবেষকরা বারোমাসি কাঁঠাল চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে নানা প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। তবে এর চেয়ে এগিয়ে আমাদের দেশের কৃষি উদ্যোক্তরা। তারাও নানাভাবে দেশি-বিদেশি ফল চাষ সম্প্রসারণে কাজ করছেন। চার বছর আগে মাহমুদুল হাসান সবুজ বেড়াতে গিয়েছিলেন ভারতের মুর্শিদাবাদে। সেখানে তার নজরে পড়ে অসময়ে গাছে গাছে কাঁঠাল ধরে থাকার বিষয়টি। সেখান থেকে ৫টি চারা সংগ্রহ করে দেশে নিয়ে আসেন তিনি। পরবর্তী সময়ে ৩৩ শতক জমিতে ৫০টি গাছ রোপণ করে পরিচর্যা শুরু করেন। বর্তমানে তার বাগানে রয়েছে বারি-৬, বারোমাসি পিঙ্ক, কামকট চিনি, সুপার আরলি ও সুপার গোল্ড জাতের কাঁঠাল। সবগুলো জাত থেকেই সারাবছর আঠাবিহীন কাঁঠাল পাওয়া যায়।
মাহমুদুল হাসান সবুজ বলেন, মৌসুমি যে ফলগুলো বাজারে আসে তাতে তেমন দাম পাওয়া যায় না। অন্যদিকে অসময়ে বাজারে যে ফল আসে তার দাম ও চাহিদা বেশি থাকে। এ বিষয়গুলো লক্ষ রেখেই বারোমাসি জাতগুলো আমি বেছে নিয়েছি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আশা জাগিয়েছে বারোমাসি কাঁঠাল। কয়েক মাসে প্রায় লাখ টাকার কাঁঠাল বিক্রি করেছি। সারাবছর কাঁঠাল পাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় ভালো একটি আয়ের স্বপ্ন দেখছি। অসময়ে আমার বাগানের ফল দেখে অনেকেই উৎসাহিত হচ্ছেন ফল চাষে। আমার কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন তারা।
দীর্ঘদিন বারোমাসি কাঁঠাল নিয়ে গবেষণা করছেন জামালপুর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, আমাদের দেশের উঁচু বন্যামুক্ত এলাকাগুলোয় বারোমাসি কাঁঠাল চাষের ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। এখন অনেকেই বারোমাসি কাঁঠাল চাষ করছেন। ভারতে বারোমাসি কাঁঠাল সবজি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আমাদের দেশেও বারি-৬ জাতের কাঁঠাল সবজি হিসেবে ব্যবহারের ভালো সম্ভাবনা রয়েছে।
সময়ের আলো/আরএস/