জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের মানব সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ নিয়ে চলছে রীতিমতো লুকোচুরি খেলা। ২০২২ সালের প্রকল্প এখনও চলমান। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় এক বিভাগ আরেক বিভাগকে দোষারোপ করছে। দায়ভার নিতে রাজি নয় কেউ।
জনস্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, তারা কাজ শেষে বুঝিয়ে দিয়ে সংশ্লিষ্ট সিএইচসিপির স্বাক্ষর নিয়েছে। অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোপ্রাইটররা (সিএইচসিপি) বলছে, আমরা কোনো কাগজে স্বাক্ষর করিনি। এ নিয়ে এলাকার জনসাধারণের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, কোথায়, কোন কমিউনিটি ক্লিনিকে, কী কাজ হচ্ছে তারা এসবের কিছুই জানে না। আর জনস্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, তারা স্বাস্থ্য বিভাগকে অবগত করেই কাজ শুরু করেছে। সাধারণ জনগণ বলছেন, এই প্রকল্প হচ্ছে টাকা হরিলুটের প্রকল্প।
জানা যায়, হবিগঞ্জ জেলায় করোনাকালীন মানব সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ২০টি কমিউনিটি ক্লিনিকে মেইনটেন্যান্স কাজ এবং ১০টি কমিউনিটি ক্লিনিকে ওয়াশ-ব্লক তৈরির কাজ অনুমোদন পায়।
জেলা জনস্বাস্থ্য কার্যালয় বলছে, এসব কাজের বাজেট উপজেলা অফিসে সংরক্ষিত। আর উপজেলা অফিস বলছে, বাজেট জেলা অফিসে সংরক্ষিত আছে। জনস্বাস্থ্য অফিসের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিক মেইনটেন্যান্স বাবদ ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা ও ওয়াশ-ব্লক তৈরি বাবদ বাজেট ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা।
কাজের দীর্ঘসূত্রতা সম্পর্কে জনস্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, দীর্ঘদিন উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ক্লিনিকের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দিতে পারেনি।
সরেজমিন বানিয়াচং উপজেলার একাধিক কমিউনিটি ক্লিনিক ঘুরে দেখা যায়, কাজের মান নিয়ে জনসাধারণের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরেছে। দৌলতপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের জমিদাতা তাইজুল ইসলাম বলেন, ক্লিনিকের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল আছে। তারা মেরামত না করেই রং ও ফ্লোরে টাইলস লাগিয়েছে। ওই ক্লিনিকের সিএইচসিটি সিদরাতুল মুনতাহা বলেন, কয়েক দিন পরপর লোকজন এসে কিছু কাজ করে যায়। আমরা কোনো কাগজে স্বাক্ষর করিনি। যদি এমনটা কেউ বলে থাকে তা হলে তারা আমাদের স্বাক্ষর জাল করেছে।
চানপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকে ওয়াশ-ব্লক তৈরি করা হয়েছে। এখানকার কাজের মান নিয়ে স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ। ক্লিনিকের জমিদাতা একরামুল হোসেন বলেন, এসব ওয়াশ-ব্লক কোনো কাজে আসছে না। আমরা কয়েক দফা অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু ঠিকাদার তার নিজের ইচ্ছামতো কাজ করেছে।
সময়ের আলো/আরএস/