প্রকাশ: রবিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২:২৮ এএম (ভিজিট : ৩০৬)
২০২০ সালে করোনাকালীন ইউটিউবে একটি ভিডিও দেখে মাল্টা চাষের আগ্রহ জাগে প্রকৌশলী মতিউরের।
পড়াশোনা করেছেন পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে মেকানিক্যাল বিষয়ে। তাই কৃষি বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে তিনি ভরসা খোঁজেন সোশ্যাল মিডিয়ায় কৃষি বিষয়ক মাল্টা ও কমলা চাষপদ্ধতি নিয়ে বানানো ভিডিওর ওপর।
টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলার মো. রহমত আলীর ছেলে মতিউর রহমান লেখাপড়া শেষে করে ১৪ বছর ধরে কাজ করেন গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায়।
২০২১ সালের শেষের দিকে শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের ডালের শহর গ্রামে ৯ বিঘা জমি ১০ বছরের জন্য লিজ নিয়ে রোপণ করেন ৫০০ মিসরীয় হলুদ জাতের মাল্টা চারা।
নিজের এগ্রো প্রতিষ্ঠানের নাম দেন ‘বাওয়ানী এগ্রো’। ইউটিউব দেখে যশোর থেকে চারা সংগ্রহ করেন তিনি। চারা রোপণের পর ২ বছর নিবিড় পরিচর্চার পর এ বছর ফলন আসে মাল্টা গাছে।
মতিউর রহমান জানান, এ পর্যন্ত প্রায় ২৪ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে মাল্টা বাগানে। এ মৌসুমে প্রতি গাছে গড়ে মাল্টা ধরেছে ২০ কেজি। তাতে প্রথম বছরই তিনি ২৪ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করবেন।
আগামী বছর প্রতি গাছে ১০০ কেজি মাল্টা হবে বলে আশা তার। এতে আয় হবে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। পরিচর্চা ও সার পানি মিলিয়ে খরচ হতে পারে ২৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগামী বছর এই বাগান থেকে কোটি টাকা আয় হবে বলে আশা করছেন মতিউর। বর্তমানে প্রতি কেজি মাল্টা ২৫০ টাকা দরে বিক্রি করছেন বাজারে।
আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে চালাচ্ছেন নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা। বিক্স মিটার অনুযায়ী মতিউরের মাল্টার মিষ্টতা ৯.৫০ আন্তর্জাতিক মান ৮ থেকে ১২। তাতে তিনি মনে করছেন এই মাল্টা দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রফতানি করা সম্ভব।
প্রতিদিনই বাগানে ঘুরতে আসেন অসংখ্য দর্শনার্থী ও ফলপ্রেমীরা। তারা ঘুরে ঘুরে দেখছেন বাগান, তুলছেন ছবি আর নিজ হাতে ছিঁড়ে বাসায় নিয়ে যাচ্ছেন শতভাগ অর্গানিক এই মাল্টা।
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কৃর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বন্যা বলেন, মিসরীয় হলুদ জাতের মাল্টা অন্য মাল্টার চেয়ে রস অনেক বেশি ও সুমিষ্ট। প্রকৌশলী মতিউর যে বাগান তৈরি করেছেন সত্যি তা প্রশংসনীয়। আমারা কৃষি অফিস সবসময় মতিউর রহমানকে নানা পরামর্শ দিয়ে আসছি।
সময়ের আলো/আরএস/