আগামী মার্চের পর বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু করতে পারে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর আগে পুরোনো তথ্যেই প্রকাশ করা হবে এবারের হালনাগাদ করা চূড়ান্ত ভোটার তালিকা। এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এএমএম নাসির উদ্দীনের নেতৃত্বাধীন কমিশন।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) নতুন কমিশনের ‘প্রথম কমিশন সভা' অনুষ্ঠিত হয়।
সভা শেষে নির্বাচন কমিশনের অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ১৪তম কমিশনের প্রথম সভা হলো। এতে চার নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে চারটি কমিটি হয়েছে। দ্বিতীয় আলোচনার বিষয় ছিল ভোটার তালিকা হালনাগাদ।
তিনি বলেন, প্রতিবছর জানুয়ারি অনুযায়ী ভোটার তালিকা হালনাগাদ হয়ে থাকে। এ পর্যন্ত ১৭ লাখ তথ্য আমাদের হাতে রয়েছে, যেটা জানুয়ারি ২০২৫ সালে আমরা সন্নিবেশ করবো এবং তারা নতুন ভোটার হিসাবে তালিকায় যুক্ত হবেন। তবে পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে, এই তথ্যটা পূর্ণাঙ্গ হয় না। কারণ অনেকেই অফিসে এসে নিবন্ধন সম্পন্ন করেননি। আনুমানিক ৪৫ লাখ হতো এই সংখ্যাটা। আমাদের হাতে যে ১৭ লাখ তথ্য আছে তার মধ্যে ১৩ লাখ আমরা ২০২২ সালে সংগ্রহ করেছি। আর বাকি চার লাখ আমাদের বিভিন্ন অফিসে এসে এ বছরে নিবন্ধন করেছে। অর্থাৎ আমাদের ধারণা, ২৭ থেকে ২৮ লাখ ভোটার, কম-বেশি হতে পারে কিন্তু ভোটার হওয়ার যোগ্য। এই বাস্তবতায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমাদের এই বছরে যে প্রক্রিয়া, এই প্রক্রিয়ায় হালনাগাদটা সম্পন্ন হবে।
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ১ জানুয়ারি যে, তথ্যটা ভোটার যোগ্য হয়ে যায়, সেই তথ্যটা আমরা ২ জানুয়ারি থেকে ২ মার্চের মধ্যে শুনানিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম করে চূড়ান্ত করে থাকি। ২০২৫ সালের ২ মার্চ চূড়ান্ত হয়ে যাবে। তালিকা প্রকাশ হবে। কিন্তু যারা বাদ পড়লেন আমরা চাই তারা ভোটার তালিকায় যুক্ত হোক। এজন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের তথ্য সংগ্রহ করবো। এই বাদ পড়া ভোটাররা ছাড়াও ২০২৫ সালে যারা ভোটার হবেন অর্থাৎ ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি যারা ভোটার হওয়ার যোগ্য হবেন তাদের তথ্যও আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করবো। এর মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের তালিকাটা চেক করে নিতে পারবো। যারা মারা গেছেন, তাদের তালিকা একটা ফরমে না নেওয়া পর্যন্ত বাদ দেওয়া যায় না। আমরা যখন বাড়ি বাড়ি যাবো তখন মৃত ভোটারও কর্তন করা হবে। কোথাও দ্বৈত ভোটার থাকলেও বাদ দেওয়া যাবে।
তিনি বলেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে কার্যক্রম সম্পন্ন করতে আমাদের আনুমানিক ছয় মাস সময় লাগবে। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে শতভাগ শুদ্ধতার সাথে পূর্ণাঙ্গ ভোটার তালিকা প্রকাশ করা।
বাড়ি বাড়ি গিয়ে হালনাগাদ কবে শুরু হবে, এই প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, আমরা যত দ্রুত সম্ভব এটা করবো। ২ মার্চের পরেই শুরু করতে পারবো বলে আশা করি। তবে বিস্তারিত সময়সূচি ইসি সচিবালয় ঠিক করবে।
তিনি বলেন, যখনই একটা নির্বাচন আসবে, তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত বিশেষ অধ্যাদেশ জারি করে হোক বা যেভাবেই হোক, যারা ভোটার হওয়ার যোগ্য তাদের যেন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারি, এ বিষয়ে আমরা নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
গঠিত চারটি কমিটির বিষয়ে তিনি বলেন, এনআইডি, ভোটার তালিকা, নির্বাচন ব্যবস্থা ও তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক কমিটির প্রধান করা হয়েছে অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহকে। এছাড়া সআইন ও বিধিমালা সংস্কার কমিটির প্রধান আবদুর রহমানেল মাসুদ। সীমানা পুনর্নিধারণ, জাতীয় ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন প্রস্তুতি, ভোটকেন্দ্র স্থাপন, ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুত ও তদারকি কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। নিয়োগ, পদোন্নতি, প্রশাসনিক সংস্কার ও দক্ষতা উন্নয়ন কমিটি বেগম তহমিদা আহমদ।