প্রকাশ: সোমবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৬:৪৬ এএম (ভিজিট : ২৬৪)
সাড়ে ৪০০ বছর আগে শায়েস্তা খানের শাসনামলে নির্মিত প্রাচীন জামে মসজিদে যেতে ঝুঁকিপুর্ণ ব্রিজ পার হতে হয়। মসজিদটির আধুনিকায়ন করা হলেও কয়েক বছর আগে নির্মিত ব্রিজটি প্রচণ্ড ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। এলজিইডির অর্থায়নে নির্মিত এ ব্রিজের নিচের অংশের আস্তর খসে পড়ে মরিচা ধরা রড বের হয়ে গেছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, যেকোনো সময় ব্রিজ ভেঙে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। ঘটতে পারে প্রাণহানিও।
ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের নাগপাড়া গ্রামের শিকদার বাড়ির সামনেই নাগপাড়া শিকদার বাড়ি জামে মসজিদ নামে প্রাচীন এই মসজিদের অবস্থান।
সরেজমিন স্থানীয় বায়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সুবেদার শায়েস্তা খানের শাসনকালে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। চুন-সুরকি দিয়ে তৈরি মসজিদটি আকার-আকৃতিতে ছোট হলেও রয়েছে নান্দনিক কারুকাজ।
ছাদের ওপরে রয়েছে বড় একটি মিনার। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে মসজিদটি ছিল পরিত্যক্ত। ভেতরে উই পোকার বড় বড় ঢিবি আর লতাপাতায় ঘিরে এক ভুতুড়ে পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছিল। ভয়ে মসজিদেও ভেতরে কেউ ঢুকত না। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে পাগল বেশে এক দরবেশ আসেন এলাকায়। তিনি মসজিদটি খুঁজতে থাকেন। মসজিদের কাছে এসে বলেন, পেয়েছি। দরবেশ জানান, স্বপ্নে মসজিদটি দেখতে পেয়েছেন তিনি। মসজিদটি আবাদ করতে তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই নির্দেশ অনুযায়ী খুঁজতে খুঁজতে নাগপাড়া এলাকায় প্রবেশ করেন। আজান দিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় মসজিদটির চারপাশে ও ভেতরের বন-জঙ্গল ও লতাপাতা পরিষ্কার করেন।
এরপর বালু ছিটিয়ে বিষাক্ত সাপসহ কীটপতঙ্গ দূর করেন। সর্বপ্রথম তার ইমামতিতেই সেখানে নামাজ আদায় হয়। প্রথমদিকে বেশ কয়েক বছর তার ইমামতিতেই চলে নামাজ ও ইবাদত-বন্দেগির কাজ। এরপর এলাকাবাসীর সক্রিয়তায় মসজিদটি প্রাণ ফিরে পায়। বাড়তে থাকে মসজিদে মুসল্লির সংখ্যাও। মসজিদ পরিচালনার জন্য স্থানীয় লোকজনের দান-অনুদান এবং বাইর থেকেও অনুদান সংগ্রহ করে মূল মসজিদটি মেহরাব হিসেবে রেখে মসজিদের সামনে সম্প্রসারণের কাজ করা হয়।
পরবর্তী সময়ে মসজিদের পাশে স্থানীয় শিশু-কিশোরদের কুরআন শিক্ষার জন্য মক্তবও চালু করা হয়। মসজিদের সামনের ময়দানে ঈদের নামাজ ও জানাজা আদায় করা হয়।
সময়ের আলো/আরএস/