প্রকাশ: সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ৬:২৭ এএম (ভিজিট : ৮৯০)
মেঘনা নদীর বুকে ভেসে থাকা চরের নাম মায়াদ্বীপ। অপরূপ সৌন্দর্যের মায়াদ্বীপ খুব বড় না হলেও চারপাশে শুধু সবুজ আর সবুজ। এ যেন একটি সবুজ প্রান্তরের গ্রাম। বালুকাময় অনিন্দ্যসুন্দর রূপের এই দ্বীপটি একেক ঋতুতে একেক সৌন্দর্যের পসরা নিয়ে হাজির হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলার বারদী ইউনিয়নের অন্তর্গত। মায়াদ্বীপের আসল নাম নুনেরটেক। মায়াদ্বীপ মেঘনা নদী দ্বারা সোনারগাঁয়ের মূল ভূখ- থেকে বিচ্ছিন্ন। নদীপথে সোনারগাঁ থেকে দূরত্ব প্রায় চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার। ত্রিভুজ আকৃতির নুনেরটেকের কোলঘেঁষেই প্রায় ৩৫-৩৬ বছর আগে জেগে ওঠে আরও একটি চর, যার তিনটি অংশ রয়েছে এবং তিনটি অংশের নাম হলো গুচ্ছগ্রাম, সবুজবাগ আর রঘুনার চর। এ গুচ্ছগ্রামের সামনে বিশাল অংশই হলো মায়াদ্বীপ।
বর্ষায় বিশাল জলরাশি যেন মেঘনার রূপকে সাগরের আকার ধরা দেয়, এ সময় নৌকা নিয়ে হারাতে মন চায় মেঘনার বুকে। আবার শরতে সারি সারি কাশবনের সমাহারে যেন হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে প্রকৃতির মাঝে। কিংবা হালকা শীতে মিষ্টি রোদে বালুকাময় তটভূমির ওপর দিয়ে সকাল কিংবা অস্তগামী সূর্যের আলোয় নিজেকে রাঙাতে বড় ভালো লাগে। আর গ্রীষ্মের ধু-ধু বালি যেন অন্যরূপে ধরা দেয় এ চরে। জ্যোৎস্না রাতে, ভরা চাঁদের হাসিতে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করবে অসীমের মাঝে। এ দ্বীপ চমৎকার একটি স্থান ঘুরে বেড়ানোর জন্য। বর্ষায় এই দ্বীপ পানির নিচে থাকলেও শুকনো মৌসুমে বিরাট অঞ্চল নিয়ে তা দৃষ্টিগোচর হয়।
মায়াদ্বীপের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মেঘনার শাখা নদীর নীল জল দেখলে লাফিয়ে পড়তে ইচ্ছে করবে। এই জলে মনের আনন্দে সাঁতার কাটতে পারবেন। এই সবুজ দ্বীপের মাথায় দাঁড়িয়ে আকাশ পানে চোখ বন্ধ করে দুই হাত মেলে দিয়ে পাখি হয়ে উড়ে যেতে ইচ্ছে হবে। নদী থেকে উঠে আসা সতেজ-নির্মল বাতাস আর সবুজের অপার সৌন্দর্য আপনার প্রাণকে করে তুলবে নির্মল আর আনন্দময়। একটানা বয়ে চলা বাতাসে নিজেকে সব ক্লান্তি থেকে ভারমুক্ত মনে হবে। তাই যেকোনো এক বন্ধের দিন চলে যান পরিবারসহ কিছুটা সময় কাটিয়ে আসুন প্রকৃতির এই অপার মাধুর্যে।
যেভাবে যাবেন
রাজধানী ঢাকার গুলিস্তান থেকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কয়েক মিনিট পরপর বিভিন্ন বাস ছেড়ে যায় ভাড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা। বাসে গিয়ে সোজা নামতে হবে মোগরাপাড়া। তারপর সেখান থেকে ইজি বাইকে বৈদ্যের বাজার নেমে নৌকা ভাড়া করে যেতে হবে। সময় লাগবে ৪০ মিনিটের মতো। সারা দিনের জন্য নৌকা ভাড়া পড়বে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত।
যেখানে থাকবেন
ঢাকার কাছেই হওয়ায় আপনি দিনে গিয়ে দিনেই ফিরতে পারবেন, তাই সেখানে থাকার প্রয়োজন পড়বে না। এর পরও যদি আপনি নারায়ণগঞ্জে রাতযাপন করতে চান সে ক্ষেত্রে আপনাকে নারায়ণগঞ্জ সদরে হোটেলে থাকতে হবে। নারায়ণগঞ্জে থাকার জন্য বিভিন্ন হোটেল রয়েছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সোনারগাঁ রয়েল রিসোর্ট।
সময়ের আলো/আরএস/