প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৬:৪১ পিএম (ভিজিট : ২২৬)
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ( জাবি) ব্যাটারিচালিত রিকশার ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী (৫৩ ব্যাচ) আফসানা করিম রাচি নিহতের ঘটনায় ঘাতক রিকশা চালককে গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনাসহ ১১ দফা দাবিতে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদে তালা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা৷
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদে তালা দেয় শিক্ষার্থীরা। এরপর সেখান থেকে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। শিক্ষার্থীরা জানান তাদের ১১ দফা দাবির কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি না দেখলে তারা তাদের অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবে।
শিক্ষার্থীদের বাকি দাবিগুলো হলো- সাত কর্মদিবসের মধ্যে সিন্ডিকেট মিটিং ডেকে, জাবি মেডিকেল সেন্টারে মুমূর্ষু ব্যক্তিদের পর্যাপ্ত চিকিৎসার সুব্যবস্থার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে; রাচিকে মরোণত্তর ডিগ্রি দিতে হবে এবং রাচির মৃত্যুর জন্য তার পরিবারকে ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে; অটোরিকশা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিতে হবে। বিকল্প হিসেবে প্যাডেল চালিত রিকশা, এবং স্টুডেন্ট শাটল চালু করতে হবে; সম্পূর্ণ ক্যাম্পাসে সিসিটিভি ক্যামেরা এবং পর্যাপ্ত পরিমাণের আলোর ব্যবস্থা করতে হবে এবং সিসিটিভি নিয়মিত মনিটরিং এর আওতায় রাখতে হবে; পর্যাপ্ত পরিমাণের নিরাপত্তা কর্মী রাখতে হবে এবং ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশ নিষেধের উপর কঠোর জোর দিতে হবে; রাচির স্মরণে ক্যাম্পাসে স্থায়ী স্মৃতিফলক নির্মাণ করতে হবে এবং নির্মাণাধীন সেন্ট্রাল লাইব্রেরির একটি অংশের নাম রাচির নামে করতে হবে; কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী এবং ৫৩ ব্যাচের কয়েকজনকে তদন্ত কমিটিতে পর্যবেক্ষক হিসেবে রাখতে হবে এবং সকল দাবি মানা হচ্ছে কিনা সেই বিষয়ে অবগত করতে হবে; আফসানা করিম রাচির বিদায়ী আত্মার মাগফেরাত কামনার জন্য কেন্দ্রীয় ভাবে দোয়া মাহফিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং উক্ত বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে; রাস্তার মোরে সাইড মিরোরের ব্যবস্থা করতে হবে; ফুটপাত নির্মাণ করতে হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ৫৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. আলী চিশতি বলেন, আমাদের বোন রাচির মৃত্যুর প্রতিবাদে এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে আমরা ১১ দফা দাবি দিয়েছি কিন্তু ঘটনা ঘটার পর প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের সামনে দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন তুলে ধরতে পারে নাই। আমরা শুনেছি মামলা হয়েছে কিন্তু পুলিশ যে তদন্ত কাজ শুরু করেছে এর কোনো প্রমাণ পাই নাই। আমরা জানি যে, সব দাবিগুলো একদিনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা সম্ভব না কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আমাদের সামনে দৃশ্যমান কিছু পদক্ষেপ তুলে ধরতে হবে আর না হয় আমাদের এই অবস্থান কর্মসূচি চলবে।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, আমরা সবার আগে চেষ্টা করছি অপরাধীকে শনাক্ত করে তার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতিমধ্যে এই ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। আর শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো খুবই যৌক্তিক, ইতিমধ্যে আমরা অটোরিকশা ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করেছি এবং বাকি দাবিগুলো বাস্তবায়নেও কাজ করছি।
সময়ের আলো/জেডআই