ই-পেপার বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫
বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫
ই-পেপার

বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫

সুগন্ধিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প
শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত শিশুরা
প্রকাশ: বুধবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৪, ৭:৫২ এএম  (ভিজিট : ৩৬৪)

ঝালকাঠি সদর উপজেলার সুগন্ধিয়া হাট সংলগ্ন আশ্রয়ণ প্রকল্পে ১৮৭টি পরিবারকে সরকারি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। ভূমিহীন ও হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যদের বসবাসের জন্য ঘরগুলো নির্মাণ করা হলেও প্রকল্প এলাকার আশপাশে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। এখানকার শিশুদের জন্য নেই বিশেষ কোনো শিক্ষাব্যবস্থাও। তাই শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিতই থাকছে ১৮৭টি পরিবারের শিশুরা। ফলে অকালেই ঝরে পড়ছে শিশুরা।

এ বিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে ঝালকাঠি সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মোজাম্মেল হক বলেন, সুগন্ধিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে ভূমিহীন ও হতদরিদ্র ১৮৭টি পরিবারকে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আশ্রয়ণ এলাকার ভেতর বা এর কাছাকাছি কোনো স্কুল নেই। যেগুলো আছে সেগুলোর দূরত্বও অনেক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। সরকারিভাবে কোনো নির্দেশনা এবং বরাদ্দ পেলে বাস্তবায়ন করা হবে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২৩ সালে ঝালকাঠি সদর উপজেলার বিনয়কাঠি ইউনিয়নের সুগন্ধিয়া হাট সংলগ্ন কালিজিরা নদীর পাড়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়। ভূমিহীন ও হতদরিদ্রদের জন্য নির্মিত প্রতিটি ঘরের অনুকূলে দলিল সম্পাদনসহ সুবিধাভোগীদের হস্তান্তর করা হয়েছে। সরকারি নিয়মানুযায়ী প্রতিটি ঘরের জন্যই যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিপত্তি হয়েছে শিক্ষাব্যবস্থায়। ওই আশ্রয়ণ প্রকল্প বা আশপাশের এলাকায় নেই কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয়। ঝালকাঠি ও বরিশাল জেলার সীমান্ত দিয়ে প্রবাহিত কালিজিরা নদীর ওপারে বরিশাল সদর এলাকার কড়াপুর এলাকায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও তার দূরত্ব প্রায় আড়াই কিলোমিটার। আর সুগন্ধিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দূরত্ব তিন কিলোমিটারেরও বেশি। 
ভূমিহীন ও দরিদ্র পরিবারের সদস্যরা বসবাস করেন এখানে। প্রত্যেক পরিবারেই ২ থেকে ৩ জন শিশু সন্তান রয়েছে। সবমিলিয়ে পাঁচ শতাধিক শিশুর জন্য সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে নেই কোনো শিক্ষাব্যবস্থা। 

আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রবীণ বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন সরদার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করা হলেও এখানে কোনো স্কুল-মাদরাসা না থাকায় শিশুরা নিরক্ষরই রয়ে গেল। এখানে বসবাসকারী কালাম হাওলাদার, আবদুল বারেক বেপারীসহ একাধিক বাসিন্দা জানান, প্রকল্প এলাকায় কোনো স্কুল না থাকা সত্ত্বেও সরকারি বা বেসরকারি কোনো সংস্থাই ভ্রাম্যমাণ স্কুল পরিচালনার উদ্যোগ নেয়নি। তারা আরও জানান, প্রকল্প এলাকা থেকে স্কুলগুলোর দূরত্ব বেশি হওয়ায় শিশুরা স্কুলে যেতে চাচ্ছে না। ফলে এখানকার অধিকাংশ শিশুই নিরক্ষর।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের আরেক বাসিন্দা মো. আবুল কাসেম সরদার বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পে যাতায়াতের জন্য সড়কটিরও বেহাল অবস্থা। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। তিনি আরও জানান, প্রকল্প এলাকায় কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকায় এখানকার অধিকাংশ শিশুই শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শিশু বয়সেই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কাজে যোগদান করে শিক্ষাজীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা তাদের শিশুদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার জন্য স্কুল নির্মাণের পাশাপাশি যাতায়াত সমস্যা দ্রুত নিরসনের জন্য সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সময়ের আলো/আরএস/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close