প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৯:৫৯ এএম (ভিজিট : ২৪৪)
কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা চাঁদার দাবিতে প্রকাশ্যে প্রবাসী স্বপন ভূঁইয়া (৩৫) নামের এক যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় দুই দফা পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।
তাকে পেটানোর দুই সপ্তাহ পর বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।
গত ৩১ অক্টোবর রাত ১০ টায় উপজেলার জগতপুর ইউনিয়নের ওমরপুর গ্রামে এ মারধরের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। নিহত প্রবাসী স্বপন ভূঁইয়া উপজেলার ওমরপুর গ্রামের সোবহান ভূঁইয়ার বড় ছেলে। এ ঘটনার পর বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে তার লাশবাহী গাড়ি নিয়ে তিতাস থানায় বিক্ষোভ করেছেন স্বজনেরা।
জানা যায়,স্বপন দীর্ঘদিন কাতারে ছিলেন। তিনি দেশে এসে সম্প্রতি নতুন করে সৌদি আরবে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। স্বজনদের অভিযোগ, চাঁদার জন্য স্থানীয় ‘কিশোর গ্যাং’ তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এরপর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত স্বপনের স্ত্রী ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা মরিয়ম বেগম সময়ের আলোকে জানান, আট মাস আগে স্বপন কুয়েত থেকে দেশে ফেরার পর স্থানীয় ‘কিশোর গ্যাং’ এর লিডার আসিফ ও নাজমুল তার স্বামীর কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। কিন্তু স্বপন দিতে রাজি হননি। এতে উত্তেজিত হয়ে গত ৩১ অক্টোবর রাতে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে একটি কনফেকশনারী দোকানের সামনে দুই দফায় পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। তাকে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এরপর গুরুতর আহত অবস্থায় স্বপনকে উদ্ধার করে তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে ঢাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার তিনি মারা যান।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মরিয়ম বেগম বলেন, একমাত্র ছেলেকে কীভাবে লালন-পালন করবেন? ছেলের লেখাপড়ার খরচ কে দেবে? তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তার স্বামী। তিনি স্বামীর হত্যাকারীদের বিচার চেয়েছেন।
নিহত স্বপনের বোন আয়েশা আক্তার বলেন, তার নিরপরাধ ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। চাঁদার দাবিতে ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় তিনি নিজে বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করবেন।
তিতাস থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)মামুনুর রশিদ সময়ের আলোকে বলেন, ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে ওই ব্যক্তিকে মারধরে কিশোরদের পাশাপাশি বড়দেরও দেখা যাচ্ছে। নিহত ব্যক্তির বোন বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে গ্রেফতার করা হবে।
সময়ের আলো/এএ/