প্রকাশ: বুধবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৪, ১১:১২ পিএম (ভিজিট : ৩৩৪)
নাটোরের হয়বতপুরে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষককে আটকের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও ঢাকা-নাটোর মহাসড়ক অবরোধ করেছে শিক্ষার্থী, অভিবাবক ও জনতা। এতে সড়কের দুপাশের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে অভিযুক্ত ওয়াহেদ মৃধাকে (৫৫) গ্রেফতার করে পুলিশ।
বুধবার (১৩ জুলাই) দুপুরে তাকে স্থানীয় বিএনপির নেতার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ওয়াহেদ সদর উপজেলার ইব্রাহীমপুরের বাসিন্দা মৃত্য ইদ্রিস আলী মাষ্টারের ছেলে ও হয়বতপুরে সরকারি প্রাধমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
এদিকে পরে খবর পেয়ে দায়িত্বরত পুলিশ-সেনাবাহিনী, নাটোর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আক্তার জাহান সাথী এবং উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুন্নাহারসহ অন্যরা ঘটনা স্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ভুক্তভোগী হয়বতপুর সরকারি প্রাধমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা জানান, গত মঙ্গলবারের দিন বিদ্যালয় চলাকালীন শ্রেণি কক্ষের মধ্যে চতুর্থ ও পঞ্চম শেণ্রীর দুজন ছাত্রীকে কোলে বসিয়ে শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেন প্রধান শিক্ষক ওয়াহেদ। এ সময় ছাত্রী কান্না করলে তাকে ৫০টাকা দিয়ে বিষয়টি কাউকে না জানানোর কথা এমনকি বাসায় গিয়েও এসব না বলতে ছাত্রীদের বিশেষভাবে বলে দেন অভিযুক্ত শিক্ষক। পরে ওই শিক্ষার্থী বাড়িতে গিয়ে তার মাকে জানালে বুধবার সকালে অন্য অভিবাভক ও শিক্ষার্থীদের সহায়তায় বিদ্যালয় চত্তরে ঘেরাও করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এরপর বিষয়টি প্রাইমারি স্কুলের পাশের উচ্চ বিদ্যালয় এবং এলাকায় জানাজানি হলে শিক্ষকের বিচারের দাবিতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ছাত্র জনতা। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও এমন অভিযোগে দীর্ঘদিন তিনি বহিষ্কৃত ছিলেন। এক পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিলটি উত্তেজিত ছাত্র-জনতা ও অভিবাভক দুপুর ১২টার দিকে নাটোর-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করলে সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়। ফলে দুরদুরান্তের যাত্রীরা ভোগান্তিতে পরেন। এসমসয় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সহায়তায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
হয়বতপুর সরকারি প্রাধমিক বিদ্যালয়ের সহকারী লাললা আরজুমান সিদ্দিকী জানান, বুধবার সকালে আমরা সকল শিক্ষক ক্লাস নিচ্ছিলাম, এরমধ্যে কিছু অভিবাভক বিদ্যালয় চত্তরে জটলা করে। সময়ের সাথে সাথে অন্যলোকজনরা ভিড় করতে থাকে এবং প্রধান শিক্ষক কোথায় জানতে চাইলে বলি সে তো নাই জেলায় মিটিং করার জন্য কাগজপত্র নিয়ে স্কুল থেকে আগেই চলে গেছে।
অন্য সহকারী শিক্ষকেরা জানান, সকাল থেকেই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি অভিযোগ স্কুল মাঠে ভিড় করতে থাকেন অভিভাবকেরা। পরে প্রধান শিক্ষকের বিচার দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেন বিক্ষুদ্ধ ছাত্র জনতা।
এ বিষয়ে অভিযুক্তের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তার ভাই হয়বতপুর হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক মকছেদ আলী মৃধা জানান, তাদের পরিবারের সবাই শিক্ষকতার সাথে জড়িত এবং এক ভাই শিক্ষা কর্মকর্তা। তার বিরুদ্ধে এর আগে কোন অভিযোগ আমরা পাইনি, হতে পারে সে আওয়ামী রাজনৈতিক দলের সমর্থক তাই।
এ ব্যাপারে নাটোর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনা শুনেই আমরা এসে বিক্ষুদ্ধে জনতাকে শান্ত করা চেষ্টা করেছি। অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অনেক অভিযোগ আছে। পুরো বিষয়টা ক্ষতিয়ে দেখে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে কোনোরকম ছাড় দেওয়া হবেনা।
সময়ের আলো/জেডআই