আজান-ইকামতের মধ্যবর্তী সময় : আজান ইসলামের অন্যতম শিয়ার বা প্রতীক। দৈনন্দিন পাঁচবার আজানের দ্বারা ঘোষণা হয় আল্লাহর একত্ববাদের। আর ইকামতের দ্বারা মানুষ প্রস্তুত হয় মহান রবের সামনে দণ্ডায়মান হওয়ার জন্য।
হাদিসের ভাষ্যমতে, এই আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে আল্লাহ বান্দার দোয়া প্রত্যাখ্যান করেন না। হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ের দোয়া কখনো প্রত্যাখ্যাত হয় না।’ (আবু দাউদ : ৫২১)
আসরের শেষ সময় দোয়া কবুল হয় : শুক্রবার সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। পৃথিবীতে ঘটিত অসংখ্য ঘটনার সঙ্গে এই দিন জড়িত। শুক্রবার সম্পর্কে হাদিসে অসংখ্য ফজিলত ও আহকামের কথা বলা হয়েছে। হাদিসে এ কথাও বলা হয়েছে যে, দোয়া কবুলের সময়গুলো থেকে শুক্রবার আসরের নামাজের পর অন্যতম। হজরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘জুমার দিনের ১২ ঘণ্টার মধ্যে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে যদি কোনো মুসলিম এ সময়ে আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে, তা হলে মহান আল্লাহ তাকে দান করেন। এ মুহূর্তটি তোমরা আসরের শেষ সময়ে অনুসন্ধান করো।’ (আবু দাউদ : ১০৪৮)
জমজমের পানি পান করার সময় : পৃথিবীর পরিশুদ্ধ ও পবিত্র পানির নাম জমজম। হজরত ইসমাইল (আ.)-এর পবিত্র কদমের উসিলায় ধরায় প্রবাহিত হয়েছে এক কুদরতি নিদর্শন। এই জমজমের পানি যে উদ্দেশ্যে পান করা হবে আল্লাহ তার উদ্দেশ্য পূরণ করবেন। এ সম্পর্কে হজরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, জমজমের পানি যে উপকার লাভের আশায় পান করা হবে, তা অর্জিত হবে। (ইবনে মাজা : ৩০৬২)
জুমার দিন দোয়া কবুল হয় : শুক্রবার সপ্তাহের সেরা দিন। অন্য দিনের চেয়ে মর্যাদায় শ্রেষ্ঠ। এ দিনে মানুষের দোয়া কবুল হয়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবুল কাসিম (রা.) বলেন, ‘জুমার দিনে এমন একটি মুহূর্ত আছে, যদি সে মুহূর্তটিতে কোনো মুসলিম দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করে, আল্লাহর কাছে কোনো কল্যাণের জন্য দোয়া করলে তা আল্লাহ তাকে দান করবেন।’ (বুখারি : ৬৪০০)
রমজান ও শবে কদর :পবিত্র রমজান মাস অতি বরকতময়। রহমত, নাজাত ও মাগফিরাতের মাস। রমজানে ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়।
এ ছাড়া আছে হাজার রাতের চেয়ে উত্তম মহিমান্বিত কদর। বরকতময় এ রাতে ফেরেশতারা বান্দার দোয়া আল্লাহর দরবারে নিয়ে যান। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াব লাভের আশায় লাইলাতুল কদরে রাত জেগে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে, তার আগের (জীবনের)
সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ (আবু দাউদ : ১৩৭২)।
এসব ছাড়াও রোগে আক্রান্ত অবস্থায়, বিপদ-আপদের সময়, দূরবর্তী সফরের সময় এবং সন্তানের জন্য মা-বাবার দোয়া খুব বেশি কবুল হয়। আল্লাহ তায়ালা আমাদের বেশি বেশি দোয়া করার তওফিক দান করুন।