প্রকাশ: শুক্রবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৪, ৫:০৬ এএম (ভিজিট : ২৯২)
ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ৬৮০ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ শুরুর আগেই আসবাবপত্র ও ল্যাপটপ ক্রয়ের নামে ২৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া অফিস চত্বরের মধ্য থেকে লক্ষাধিক টাকার মেহগনি গাছ কেটে সরিয়ে নেওয়ার সময় ধরে ফেলে পুলিশ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২৫ লাখ টাকা আত্মসাতের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস ও জেলা প্রশাসন। সম্প্রতি জেলা উন্নয়ন কমিটির সভায়ও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মালামাল না কিনেই কোটেশনের মাধ্যমে ২৫ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনা ধামাচাপা দিতে নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম নিলয় পাশা বরিশাল থেকে কিছু নতুন ফার্নিচার এনে অফিসের বিভিন্ন কক্ষে রাখা শুরু করেন।
ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক আশরাফুর রহমানের সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সভাকক্ষে জেলা উন্নয়ন কমিটির সভায় নির্বাহী প্রকৌশলী নিলয় পাশার ২৫ লাখ টাকার অনিয়মের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম নিলয় পাশাও উপস্থিত ছিলেন। সভায় উপস্থিত থাকা ঝালকাঠি প্রেস ক্লাবের সভাপতি কাজী খলিলুর রহমান জানান, সভার একপর্যায়ে নির্বাহী প্রকৌশলী নিলয় পাশার দৃষ্টি আকর্ষণ করে জেলা প্রশাসক বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চান। তখন নির্বাহী প্রকৌশলী জেলা প্রশাসককে জানান, আসবাবপত্র কিনে অফিসে জায়গা না থাকায় নিরাপদে অন্যত্র রাখা হয়েছিল। নতুন ভবনের কাজ শেষ হলেই সব আসবাবপত্র অফিসে আনা হবে। ইতিমধ্যে কিছু আনা হয়েছে। নিলয় পাশার বক্তব্যের পরে জেলা প্রশাসক ৬৮০ কোটি টাকার প্রকল্প এবং ২৫ লাখ টাকার কোটেশনের যাবতীয় কাগজপত্র দেখানোর নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে অভিযোগ অস্বীকার করে নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম নিলয় পাশা বলেন, কোটেশনের মাধ্যমে ২৫ লাখ টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ সত্য নয়। আমি তা প্রমাণ করতে পারব। হুট করে কোনো ফার্নিচার আনা হয়নি। কিছু দিন আগে সেগুলো আনা হয়েছে। জেলা উন্নয়ন কমিটির সভায় আমি ঘটনার ব্যাখা দিয়েছি।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ঝালকাঠি ও নলছিটি উপজেলা সদরের সুগন্ধা নদীর তীর রক্ষার জন্য ৬৮০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হয়। ৩৪ প্যাকেজের এ প্রকল্পে নলছিটির দপদপিয়া থেকে লঞ্চঘাট পর্যন্ত, ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর ভাঙনকবলিত অংশ এবং গাবখান নদীর ভাঙনকবলিত অংশে জিও ব্যাগ ও সিসি ব্লক দিয়ে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ার কথা। ইতিমধ্যে নলছিটির দুটি প্যাকেজে ৭৪০ মিটার প্রকল্পের কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। আরও ৮টি প্যাকেজের কার্যাদেশ প্রক্রিয়াধীন। কিন্তু মূল প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার আগেই গত জুন মাসে নির্বাহী প্রকৌশলী নিলয় পাশা গোপনে তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে কোটেশন দেখিয়ে ল্যাপটপ, ফটোকপি মেশিন এবং আসবাবপত্র ক্রয়ের নামে ২৫ লাখ টাকা বিল করে উঠিয়ে নেন। আগে থেকেই অফিসে ল্যাপটপ, ফটোকপি মেশিন ও আসবাবপত্র থাকায় কোনো কিছুই কেনা হয়নি।
সময়ের আলো/আরএস/