প্রকাশ: বুধবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৪, ৪:১৬ এএম (ভিজিট : ২৯৬)
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। সরেজমিন দেখা যায়, রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউনিয়নের চরনেয়ামত এলাকায় এক একর জমিতে সীমানাপ্রাচীর দিয়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্টের নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রামগতি উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী তানভীরুল ইসলাম বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্ট নির্মাণের জন্য জমি বুঝিয়ে দিয়েছে পৌরসভা। সে আলোকে আমরা কাজ করছি। শেষ হওয়ার পর আমরা আবার পৌরসভাকে কাজ বুঝিয়ে দেব। আদালতের নিষেধাজ্ঞা বা কোনো মামলার বিষয়ে আমি অবগত নই।
এ বিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে রামগতি থানার ওসি কবির হোসেন বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্ট নির্মাণে আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি আমার নলেজে নেই।
এ প্রসঙ্গে রামগতি পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রেজা বলেন, আমি রামগতি পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নতুন যোগদান করেছি। পৌরসভার আগের মেয়র কীভাবে জমি নিয়েছেন সে বিষয়ে আমার কোনো ধারণা নেই। তবে আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখব।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২২ সালের ৬ ডিসেম্বর রামগতি উপজেলার ৪৪ নম্বর চরনেয়ামত এলাকায় ২২৩ নম্বর খতিয়ানের ২৮৫, ২৮৭, ২৮৮ এবং আরএস ১৩৩২ খতিয়ানের ৫৫০ দাগে এক একর জমি রামগতি পৌরসভার কাছে বিক্রি করেন চরসীতা এলাকার আলী হায়দর নামের এক ব্যক্তি। কিন্তু ওই জমির প্রকৃত মালিক আলী হায়দর ছিলেন না। পরবর্তী সময়ে রামগতি পৌরসভা জমি দখল করতে গেলে ফসল নষ্ট করার অভিযোগে ফরহাদ হোসেন নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর আদালতে মামলা করেন। মামলা চলাকালে পৌরসভা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরকে ওই জমিতে তাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্ট নির্মাণ করার জন্য আদেশ দেন আদালত। আদেশ পাওয়ার পর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর তাদের কাজ শুরু করলে গত বছরের ২৯ নভেম্বর জমি ফেরত পাওয়ার জন্য জমির প্রকৃত মালিক নুরুল আমিন, গোলাম হোসেনসহ আরও কয়েকজন মিলে আদালতে মামলা করেন। ওই মামলার আলোকে গত অক্টোবর মাসের ১৪ তারিখে আদালত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্ট নির্মাণে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার পরও আদালত কর্তৃক প্রদান করা অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার কোনোরকম তোয়াক্কা না করে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্ট নির্মাণের কাজ অব্যাহত রেখেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর।
এ বিষয়ে প্রকৃত জমির মালিকদের মধ্যে গোলাম হোসেন বলেন, ডিয়ারা জরিপী ২২৩ নাম্বার খতিয়ানের ২৮৫, ২৮৭, ২৮৮ এবং আরএস ১৩৩২ খতিয়ানের ৫৫০ দাগে আলী হায়দরের নিজস্ব কোনো জমি নেই। জমির মালিক না হওয়া সত্ত্বেও তিনি ভূমি অফিসের কতিপয় অসাধু কর্মচারীর সঙ্গে আঁতাত করে খতিয়ানে নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করিয়ে প্রায় নয় একর জমির মধ্য থেকে এক একর জমি রামগতি পৌরসভার কাছে বিক্রি করে দেন। এটা সম্পূর্ণ বেআইনি। আমরা আমাদের জমি ফেরত পেতে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি। গোলাম হোসেন আরও বলেন, ঘটনার এখানেই শেষ নয়। আলী হায়দর ও তার ছেলে জুলফিকার আলী পূর্ব সীতা এলাকায় আরও তিনটি খতিয়ানে নিজেদের নাম অন্তর্ভুক্ত করিয়েছেন ভূমি অফিসের কতিপয় অসাধু কর্মচারীর সঙ্গে আঁতাত করে। বিষয়টি আমাদের নজরে আসার পর জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসে দরখাস্ত করেছি। এরই মধ্যে আমরা আমাদের জমি ফেরত পেয়েছি।
সময়ের আলো/আরএস/