প্রকাশ: শনিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৪, ২:২৯ এএম (ভিজিট : ৪৬)
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠযোদ্ধা, সুরকার-সংগীত পরিচালক সুজেয় শ্যাম আর নেই। বরেণ্য এই সংগীতশিল্পী বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন রোগ-ব্যাধিতে ভুগছিলেন সুজেয় শ্যাম। তার মৃত্যুতে সংগীতাঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
শুক্রবার বেলা ১১টায় হাসপাতাল থেকে সুজেয় শ্যামের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে। সেখানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার দেওয়া হয় তাকে। এ সময় পরিবারের মানুষজন ছাড়াও সংস্কৃতি অঙ্গনের কাছের মানুষরা উপস্থিত ছিলেন। এ কণ্ঠযোদ্ধাকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের তার সহশিল্পী শাহীন সামাদ, তিমির নন্দী, খোরশেদ আলম, মামুনুর রশীদ, শুভ্র দেব, ফুয়াদ নাসের বাবুসহ অনেকে। ঢাকেশ্বরী মন্দিরে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদর্শন শেষে বিকালে সুজেয় শ্যামের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকার সবুজবাগের বরদেশ্বরী কালীমন্দিরে। সংগীতশিল্পী ইউসুফ আহমেদ খান জানিয়েছেন, সুজেয় শ্যামের ইচ্ছাতেই তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠান সবুজবাগের বরদেশ্বরী কালীমন্দিরে করা হয়।
সুজেয় শ্যামের সুর করা গানগুলোর মধ্যে-‘রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি’, ‘রক্ত চাই রক্ত চাই’, ‘আহা ধন্য আমার জন্মভূমি’, ‘আয় রে চাষি মজুর কুলি’, ‘মুক্তির একই পথ সংগ্রাম’, ‘শোন রে তোরা শোন’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এসব স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচার করা হয়।
একাত্তরে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শেষ গান এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের পর প্রথম গানটির সুর করেছিলেন সুজেয় শ্যাম। গীতিকার শহীদুল আমিনের লেখা ‘বিজয় নিশান উড়ছে ওই’ গানটির সুর ও সংগীত পরিচালনা করেন তিনি, গানটির প্রধান কণ্ঠশিল্পী ছিলেন অজিত রায়।
২০০৯ সালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ৫০টি গান এ প্রজন্মের শিল্পীদের দিয়ে নতুন সংগীতায়োজনে গাইয়েছেন সুজেয় শ্যাম, তাকে সহযোগিতা করেন গায়ক পার্থ বড়ুয়া। সুজেয় শ্যাম ১৯৪৬ সালের ১৪ মার্চ সিলেট জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। সংগীতে অবদানের জন্য ২০১৫ সালে শিল্পকলা পদক ও ২০১৮ সালে একুশে পদক পান তিনি।
সময়ের আলো/আরএস/