সারাদেশে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে এবার এইচএসসিতে পাসের হার ৭৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১৪ হাজার ২৯৫ জন পরীক্ষার্থী। এই বোর্ডে ১৫টি কলেজের শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। একজনও পাস করেনি এমন কলেজের সংখ্যা ২০টি। তার মধ্যে ঠাকুরগাঁও জেলায় ৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে যাদের পাসের হার শুন্য।
আর এ ফলাফলের কারণ হিসেবে একদিকে অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের দায়ী করছেন, অপরদিকে প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিও ভুক্ত না হওয়ায় পাঠদানে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের অনিহার কথাও স্বীকার করছেন প্রতিষ্ঠান প্রধানরা।
মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মীর সাজ্জাদ আলী ফলাফলের এ তথ্য জানালে বুধবার দুপুরে জেলার ৫ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাসের হার শুন্যের বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা শিক্ষা অফিসার শাহীন আকতার।
জেলার যেসব প্রতিষ্ঠানে পাস করেনি কেউ সেগুলো হলো, সদর উপজেলার কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কদম রসুলহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার মোড়ল হাট জনতা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বগুলাবাড়ী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, রাণীশংকৈল উপজেলার গোগর কলেজ।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বগুলাবাড়ি হাই স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আলী জানান, আমাদের ৩ জন পরীক্ষার্থীর কেউ পাস করেনি। তারা প্রত্যেকেই অনিয়মিত শিক্ষার্থী। এছাড়াও আমাদের এমপিও ভুক্তি না হওয়ায় শিক্ষকরাও বেতন ভাতা পায়না। আবার কান কোন শিক্ষক পরিবার নিয়ে পাশ্ববর্তী জেলায় থাকে বলে নিয়মিত ক্লাস নিতে পারেনা। সব কিছু মিলিয়ে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
সদর উপজেলার কদম রসুলহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজ এর প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হাসেন জানান, আমাদের ২ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিলেও কেউ পাস করেনি। প্রথমত তারা অনিয়মিত এবং আমাদের শিক্ষকদেরও আমরা সময়মত পাইনা। এমপিও ভুক্ত না হওয়ার কারণেই শিক্ষকদের পাঠদানে অনিহা দেখা যায়, যার প্রভাব পড়ছে পরীক্ষার ফলাফলে। এছাড়াও প্রায় একই অভিযোগ করেছেন অন্য প্রতিষ্ঠানের প্রধানরাও।
ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। যেসব কলেজে কেউ পাস করেনি সেগুলোতে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা দুই অথবা তিনজন। বিষয়টি আরো ভালোভাবে খতিয়ে দেখা হবে।
জেলা শিক্ষা অফিসার শাহীন আকতার জানান, সম্প্রতি এইচএসসি পরীক্ষার যে ফলাফল প্রকাশ হয়েছে তাতে এবার জেলার ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। এর মধ্যে ৪টি রয়েছে স্কুল এন্ড কলেজ এবং একটি কলেজ। এই প্রতিষ্ঠন গুলি থেকে যারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে এমন পরীক্ষার্থীর সংখ্যা খুব কম এবং তারা সবাই অনিয়মিত। তাছাড়াও এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতভাগ ফেলের কারণে জেলারও একটি ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। এর জন্য কেন এমন হলো, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কারণ ব্যাখ্যা করার জন্য তাদের চিঠি দেবো।
সময়ের আলো/জিকে