ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

নবীজি (সা.)-এর ভালোবাসা ঈমানের আলামত
প্রকাশ: সোমবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৪, ১:৫৮ এএম  (ভিজিট : ৭৮)
মানুষের হৃদয়ের ‘ভালোবাসা’ মহান আল্লাহর সৃষ্টি। মানুষ যদি তার অন্তরকে গুনাহ ও অশ্লীল কাজ থেকে মুক্ত রাখে, তা হলে সে অন্তরে নবী (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা থাকবে এবং প্রয়োজনের মুহূর্তে নানাভাবে প্রকাশও ঘটবে। এটি ঈমানের অন্যতম দাবি এবং অপরিহার্য একটি বিষয়। এ ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিনদের কাছে নবী (সা.) তাদের নিজেদের প্রাণ অপেক্ষাও বেশি নিকটে’ (সুরা আহজাব : ৬)। অর্থাৎ যে ব্যক্তি নিজের জান-মাল ও প্রবৃত্তির ওপর তাঁর প্রতি ভালোবাসাকে প্রাধান্য দিতে না পারবে, বোঝা যাবে, তার ঈমানে ঘাটতি রয়েছে।

এ ব্যাপারে নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ সে পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না, যে পর্যন্ত না আমি তার কাছে তার সন্তানসন্ততি, পিতামাতা এবং অন্য সব লোকের তুলনায় অধিক প্রিয় হব’ (মুসলিম : ৭৫)। তা ছাড়া ঈমানের স্বাদ ও রাসুলের আনুগত্যের স্বাদ পাওয়ার পূর্ব শর্ত হলো নবী (সা.)-কে মনে-প্রাণে বিশ্বাস করা এবং তাঁর প্রেম-ভালোবাসা হৃদয়ে লালন করা। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘ওই ব্যক্তি ঈমানের স্বাদ পেয়েছে, যে প্রতিপালক হিসেবে আল্লাহ তায়ালাকে, ধর্ম হিসেবে ইসলামকে এবং রাসুল হিসেবে মুহাম্মদকে খুশি মনে মেনে নিয়েছে।’ (মুসলিম : ৫৮) 

প্রকৃত মুমিন হতে হলে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি সর্বাধিক প্রেম-ভালোবাসা হৃদয়ের গভীরে ধারণ ও লালন করতে হবে। নবী (সা.)-কে সাহাবায়ে কেরাম যেভাবে ভক্তি, অনুরক্তি, আনুগত্য ও ভালোবাসার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, যার উদাহরণের দ্যুতি ও ঝিলিক সিরাতের কিতাবের পরতে পরতে পাওয়া যায়, ঠিক সেভাবে ভালোবাসতে হবে। আর রাসুল (সা.) কে ভালোবাসার মর্ম হলো-যখন দুনিয়ার কোনো বস্তুর প্রতি ভালোবাসা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নির্দেশের বিপরীত হবে, তখন আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নির্দেশকে সবার আগে রাখতে হবে। তাঁর নির্দেশের বিপরীত না করে, সর্বাবস্থায় দ্বীনের হুকুম-আহকাম মেনে চলতে হবে। উপরন্তু চিরস্থায়ী ও চিরসুখের জান্নাতে নারী-পুরুষ সবাই যেতে চায়, জান্নাতে যাওয়ার অন্যতম মাধ্যম হলো, রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে খাঁটি অন্তরে ভালোবাসা। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি যাকে ভালোবাসে কেয়ামত দিবসে সে তার সঙ্গেই অবস্থান করবে।’ (তিরমিজি : ২৩৮৭)

যুক্তির নিরিখেও রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে সর্বাধিক বেশি ভালোবাসা উচিত। কারণ পরস্পর পরস্পরকে ভালোবাসায় যেসব উপায়-উপকরণ ও কারণগুলো থাকে, যেমন- ১. বাহ্যিক সৌন্দর্য ২. অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্য ৩. আত্মীয়তা ৪. অনুগ্রহ ইত্যাদি কারণ রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মাঝে অতুলনীয় ও উপমহীনভাবে ছিল। যার নজির পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। এই যে আজকে আমরা ঈমানের মতো সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ মহাদৌলত লাভ করেছি, সেটাও নবী (সা.)-এর মধ্যস্থতাতেই হয়েছে। সেই দাবির প্রেক্ষিতেও একজন মুমিনের জন্য ঈমান ও ইমানিয়াত শিক্ষা করা যতটা না জরুরি, তার চেয়ে বেশি জরুরি হলো, নবী (সা.)- এর জীবনী অধ্যয়ন করা ও তাঁর প্রেম-ভালোবাসা বৃদ্ধির জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করা। তবেই সে ঈমানের ওপর অবিচল থাকতে পারবে এবং অন্যদেরকেও ঈমানের সুশীতল ছায়ায় আহ্বান করতে পারবে। তাই আসুন, আমাদের ঈমানকে রাসুলের প্রেম-ভালোবাসা দ্বারা সুদৃঢ় ও মজবুত করি, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্যের মাধ্যমে জীবন-জগৎ ও মানবজনম আলোকিত করি। আল্লাহ আমাদের তওফিক দান করুন।

মুহাদ্দিস, জামিয়া কাশেফুল উলূম মাদরাসা, মধুপুর, টাঙ্গাইল


সময়ের আলো/আরএস/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close