ই-পেপার রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪
রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪

ডিএসইতে মূলধন কমেছে ১৩ হাজার কোটি টাকা
প্রকাশ: রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪, ১:২৪ এএম  (ভিজিট : ১২৬)
সপ্তাহজুড়ে শেয়ারবাজারের দরপতনের পাল্লাই ভারী হয়েছে। গত সপ্তাহজুড়ে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন ১৩ হাজার কোটি টাকার ওপরে কমেছে।

শনিবার ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৭৬ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ১৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৪৬২ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৭৪ দশমিক  শূন্য ৮ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯৯০ পয়েন্টে, ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৪০ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ২২ শতাংশ কমে ১ হাজার ২২১ পয়েন্টে এবং ডিএসএমইএক্স সূচক (এসএমই ইনডেক্স) ৫৮ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট বা ৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৭২ পয়েন্টে।

সূত্র জানাচ্ছে, দিন যত যাচ্ছে শেয়ারবাজারের পতন তত বাড়ছে। আর বিনিয়োগ করা পুঁজি হারাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। এতে সপ্তাহজুড়ে দরপতনের পাল্লাই ভারী হয়েছে। ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে মূল্যসূচকের যেমন বড় পতন হয়েছে, তেমনি বড় অঙ্কে বাজার মূলধন কমেছে।

গত সপ্তাহজুড়ে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বাজার মূলধন ১৩ হাজার কোটি টাকার ওপরে কমেছে। প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ২০০ পয়েন্ট। বাজারটিতে যে কটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, তার থেকে প্রায় ছয়গুণ প্রতিষ্ঠানের দাম কমেছে। সেই সঙ্গে গড় লেনদেন কমে প্রায় অর্ধেকে দাঁড়িয়েছে। দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে এটি শেয়ারবাজারের অষ্টম সপ্তাহ। এর আগে আরও সাতটি সপ্তাহ পার করেছে শেয়ারবাজার। সবমিলিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে লেনদেন হওয়া আট সপ্তাহের মধ্যে সাত সপ্তাহেই শেয়ারবাজারে দাম কমার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান নাম লিখিয়েছে। সরকার পতনের পর শেয়ারবাজারে উল্লম্ফন হলেও নতুন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম দুই সপ্তাহ শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়। তবে তৃতীয় সপ্তাহে এসে শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। কিন্তু চতুর্থ সপ্তাহে আবার দরপতন হয়। পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম সপ্তাহেও দরপতনের ধারা অব্যাহত থাকে।

গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে অর্থাৎ অন্তর্বর্তী সরকারের সপ্তম সপ্তাহে ডিএসইতে মাত্র ৪০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ে। বিপরীতে দাম কমে ৩৪৯টির। এতে ডিএসইর বাজার মূলধন কমে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।

বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমার ধারা অব্যাহত থাকে অন্তর্বর্তী সরকারে অষ্টম সপ্তাহেও। গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মাত্র ৫৭টির স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৩১টির। আর ৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অর্থাৎ দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তালিকায় ৫ দশমিক ৮১ গুণ বেশি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

এতে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৭২ হাজার ১১৫ কোটি টাকা। যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৬ লাখ ৮৫ হাজার ৬২১ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন ১৩ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা বা ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ কমেছে। আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন কমে ৯ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা বা ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

এদিকে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স গত সপ্তাহে কমেছে ১৭৬ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ১৩ শতাংশ। এর আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৯৬ দশমিক ১৪ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৬৮ শতাংশ। তার আগের ছয় সপ্তাহে সূচকটি কমে ১৮৮ পয়েন্ট। ফলে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া আট সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক সবমিলিয়ে কমেছে ৪৬০ পয়েন্ট।

প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহে কমেছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গত সপ্তাহে সূচকটি কমেছে ৭৪ দশমিক শূন্য ৮ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৪১ দশমিক ৫১ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ। আর ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে ৪০ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ২২ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৪ দশমিক ১৩ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৩ শতাংশ।

সবকটি প্রধান মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি গত সপ্তাহে লেনদেনের গতিও কমেছে। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪২৬ কোটি ২১ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৬৭৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ২৫৩ কোটি ৯ লাখ টাকা বা ৩৭ দশমিক ২৬ শতাংশ।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবথেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ২৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা গ্রামীণফোনের শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১৭ কোটি ১ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক।

এ ছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, এমজেএল বাংলাদেশ, ইবনে সিনা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এডিএন টেলিকম এবং সোনালি আঁশ।


সময়ের আলো/আরএস/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close