ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

মোগল স্থাপত্য নিদর্শন মিঠাপুকুর বড় মসজিদ
প্রকাশ: শুক্রবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৪, ৩:২১ এএম  (ভিজিট : ১৪৬)
দেশের উত্তরাঞ্চলের রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে একটি মসজিদ। রংপুর শহর থেকে ২৪ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং মিঠাপুকুর উপজেলা  সদর  থেকে  আধা  মাইল  উত্তর-পশ্চিমে রংপুর ও বগুড়া মহাসড়কের একটু দূরে মসজিদটি অবস্থিত। সড়কের পশ্চিমে প্রায় ২৫ একর আয়তনে একটি জলাশয় রয়েছে। ধারণা করা হয়, এটি প্রাক-মুসলিম আমলে তৈরি করা হয়েছে। দিঘির নাম মিঠাপুকুর, সে অনুসারে স্থানের নামও হয়েছে মিঠাপুকুর।

দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদ নির্মিত হয়েছে মোগল আমলের শেষ সময় ১৮১১ সালে। প্রায় ২০০ বছর আগে নির্মিত মসজিদটি বাংলাদেশের প্রাচীন স্থাপনাগুলোর মধ্যে অন্যতম এক নিদর্শন। মসজিদের প্রবেশদ্বারে উৎকীর্ণ শিলালিপি থেকে জানা যায়, ১৮১১ সালে শেখ মোহাম্মদ মোয়াজ্জম নামক একজন ধার্মিক ব্যবসায়ীর নাতি শেখ মুহাম্মদ আসিন নির্মাণ করেন এই মসজিদ। 

মসজিদের চারপাশে রয়েছে পুরোনো ইটে নির্মিত সীমানাপ্রাচীর। মসজিদ আঙিনায় প্রবেশ করতে হলে আশ্রয় নিতে হয় দৃষ্টিনন্দন মাঝারি আকৃতির গেটের। আঙিনাটা ইটের ঢালাই দিয়ে মজবুতভাবে বানানো হয়েছে। সামনে খোলা ছোট্ট একটি আঙিনা। দেয়ালজুড়ে পোড়ামাটির আস্তরণ। জীর্ণশীর্ণ হয়ে খসে পড়েছে কয়েক জায়গায়। গম্বুজগুলোও ধসে পড়ার উপক্রম। দেয়ালজুড়ে বিভিন্ন নান্দনিক কারুকার্য। মসজিদের ভেতরে মাত্র দুই কাতার পরিমাণ জায়গা। ছোট হলেও নান্দনিক নকশায় সুশোভিত। ওপরে চার কোনায় রয়েছে আট কোনা আকারে নির্মিত চারটি মিনার। এগুলো ছাদের কিছু ওপরে ওঠে গম্বুজ আকৃতিতে শেষ হয়েছে। 

মসজিদে প্রবেশের জন্য রয়েছে কারুকার্যখচিত তিনটি দরজা। মাঝের দরজার দুই পাশের পিলারের ওপরেও আছে ছোট ছোট দুটি মিনার। সামনের অংশে পোড়ামাটির কারুকার্য মসজিদটিকে আরও আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে। মসজিদের ভেতরে সামনের দরজা বরাবর পশ্চিম দেয়ালে রয়েছে তিনটি মেহরাব। 

চারপাশের কৃষিজমি বেষ্টিত মসজিদটি অনন্য দৃষ্টিনন্দন স্থাপনায় পরিণত হয়েছে। মসজিদের ভেতরের দেয়ালেও রয়েছে কারুকাজের ছাপ। এর সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো সুবিশাল তিনটি গম্বুজ। গোলাকার গম্বুজ দ্বারা আচ্ছাদিত মসজিদের প্রথম দরজা স্থানীয় সংস্কৃতির আদলে নির্মিত হয়েছে। গম্বুজগুলো সুন্দর প্যানেল, লতাপাতা, ফুল, জ্যামিতিক আকারের সঙ্গে পরিকল্পনা করে নির্মাণ করা হয়েছে। দেখতে ড্রামস এবং দেয়ালের শিলালিপির মতো। 

প্রতœতত্ত্ব অধিদফতরের তালিকাভুক্ত দৃষ্টিনন্দন মসজিদটি প্রাচীনকাল থেকে মিঠাপুকুরকে ইসলামি জনপদ হিসেবে পরিচিত করে তুলেছে। আর এই ঐতিহাসিক মসজিদকে ঘিরে প্রতিদিনই দর্শনার্থী ও পর্যটকের আগমন ঘটছে। দেশ-বিদেশ থেকে আগত দর্শকরা মসজিদ ও আশপাশের গ্রামীণ সৌন্দর্য উপভোগ করেন।


সময়ের আলো/আরএস/






https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close