ই-পেপার রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪
রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪

ঢাকার বাইরেও বিপজ্জনক ডেঙ্গু, ভয়াবহ বিস্তার রোধে পদক্ষেপ নিন
প্রকাশ: শুক্রবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৪, ১:৪৮ এএম  (ভিজিট : ১৬৬)
মশা ও মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া ও চিকুনগুনিয়া বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অন্যতম সমস্যা। মশাবাহিত এই রোগগুলোর মধ্যে ডেঙ্গু সবচেয়ে ভয়ংকর রূপে রয়েছে। বাংলাদেশের প্রায় সব জেলায় ডেঙ্গু স্থানীয় আকার ধারণ করেছে।

ঢাকায় প্রথম ডেঙ্গু দেখা দেয় ১৯৬৩ সালে। তখন একে ঢাকা ফিভার নাম দেওয়া হয়েছিল। ডেঙ্গুর প্রথম বড় আউটব্রেক হয় ২০০০ সালে আর তখন বিজ্ঞানীরা একে ডেঙ্গু হিসেবে চিহ্নিত করেন। ওই বছর বাংলাদেশে ৯৩ জন মারা যায়। এরপর প্রায় প্রতি বছরই কমবেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে তবে ২০১৯ সালে ডেঙ্গু এপিডেমিক আকার ধারণ করে। ওই বছর দুর্ভাগ্যজনকভাবে ১৭৯ জন মারা যায়।

করোনার সময় ডেঙ্গু কিছুটা নিয়ন্ত্রিত পর্যায়ে থাকলেও ২০২৩ সালে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাংলাদেশের সব ইতিহাস ছাড়িয়ে যায়। এ বছরও ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব থেমে নেই। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, চলতি মাসে দুই দিনে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের এবং আক্রান্ত হয়েছে ২ হাজার ১৪৪ জন। সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যু দুটিই আগের মাসের তুলনায় ছিল প্রায় তিনগুণ।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর পরিসংখ্যানকে ভয়ংকর বলছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, দুই মাস আগেই ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর তেমন কার্যকর কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। ডেঙ্গু মোকাবিলায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতির ঘাটতি রয়েছে। তাই প্রতিদিন ডেঙ্গুতে মৃত্যু ও আক্রান্তের হার বাড়ছে। সবার সমন্বিত অংশগ্রহণের মাধ্যমে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে সামনের দিনগুলোতে বড় ধরনের বিপর্যয় হতে পারে।  

মশাবাহিত রোগ নির্মূলের মূল উপায় হচ্ছে মশা নিয়ন্ত্রণ। ডেঙ্গুর বাহক মশা হলো এডিস প্রজাতির। তার জন্মস্থান নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন নয়। কীটনাশক প্রয়োগ করে সহজেই এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তবে ডেঙ্গুর বাহক মশা নিয়ন্ত্রণে সেই কীটনাশকেরই ব্যবহার করতে হবে যেটি কার্যকর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত অনেক কীটনাশক রয়েছে যেগুলো ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার বিরুদ্ধে কার্যকর, পরিবেশবান্ধব ও স্বাস্থ্যসম্মত।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ যেমন ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও আফ্রিকার কয়েকটি দেশে মশা ও মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে স্বতন্ত্র গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মশা নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ হিসেবে স্থানীয় অভিজ্ঞ কীটতত্ত্ববিদের সমন্বয়ে আমাদের দেশেও এমন গবেষণা প্রতিষ্ঠান জরুরি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অঙ্গপ্রতিষ্ঠানগুলোকে মশা নিয়ন্ত্রণে উপযোগী করে গড়ে তোলা এবং এগুলোর অধীনে প্রশিক্ষিত জনবল তৈরি করা প্রয়োজন। সমন্বিত মশক ব্যবস্থাপনার বিজ্ঞানভিত্তিক প্রয়োগ এখনই শুরু করতে পারলে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ন্ত্রিত পর্যায়ে রাখা সম্ভব। আমরা প্রত্যাশা করি, সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলো সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।


সময়ের আলো/আরএস/






https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close