আগ্রাসী হয়ে উঠেছে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে চলা টংকাবতী খাল। ইতিমধ্যে ভাঙনে বিলীন হয়েছে একটি গ্রামীণ সড়কসহ অর্ধশতাধিক বসতবাড়ি। অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হওয়ার পথে আরও শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি। টংকাবতীর বিধ্বংসী রূপ দেখে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে টংকাবতী খালপাড়ের মানুষদের।
এ বিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে লোহাগাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী সতেজ দেওয়ান বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হবে। পরিদর্শন শেষে ভাঙন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান।
সরেজমিন দেখা যায়, কলাউজান-চরম্বা সংযোগ সড়কের রাজঘাটা মাঝের পাড়া অংশে প্রায় এক হাজার ফুট গ্রামীণ সড়ক খালের ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাজার হাজার মানুষকে। লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নে টংকাবতী খালপাড়ের মানুষদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, টংকাবতীর ভাঙন নতুন কিছু নয়। প্রায় ২০ বছর আগে এই খালে প্রথম ভাঙন শুরু হয়। বিগত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে চলছে টংকাবতীর তাণ্ডব। তবে এ বছর টংকাবতী যে রুদ্র রূপ ধারণ করেছে তা রীতিমতো দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে। গত কয়েক দিনের অব্যাহত ভাঙনে ইতিমধ্যে খালের পেটে বিলীন হয়ে গেছে অর্ধশতাধিক বেশি বসতবাড়ি। দিনকে দিন আরও বেশি আগ্রাসী হয়ে উঠছে টংকাবতী। ক্রমাগত বেড়েই চলেছে ভাঙন। এভাবে ভাঙন বাড়তে থাকার কারণে খালপাড়ের আরও শতাধিক পরিবার ভাঙন আতঙ্কে অস্থির সময় পার করছেন। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম এলেই খালের পানি বৃদ্ধি পেয়ে ভেঙে পড়তে থাকে টংকাবতীর পাড়। তবে চলতি বর্ষায় সবচেয়ে বেশি ভাঙন দেখা দিয়েছে। ক্রমেই বাড়ছে ভাঙনের ব্যাপ্তি। অতীতে টংকাবতীর এমন আগ্রাসী রূপ কখনোই দেখেননি এলাকাবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে আলাপকালে তারা অভিযোগ করেন, খালপাড়ের বাসিন্দাদের এমন দুর্দশার চিত্র দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে চলছে। অথচ আজ অবধি ভাঙন প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোনো ব্যবস্থাই গ্রহণ করেনি। স্থানীয়রা এই সমস্যা থেকে চিরতরে নিস্তার চান। দ্রুততম সময়ের মধ্যে টংকাবতীর ভাঙন বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা এনামুল হকের সঙ্গে। এ সময় তিনি অভিযোগের সুরে বলেন, বিগত ২০ বছর ধরে এমপি থেকে শুরু করে মন্ত্রী পর্যন্ত এ এলাকাটি পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এক টাকার অনুদানও আসেনি। ভাঙনের কবলে পড়ে বিভিন্ন সময়ে এখানে বহু পরিবার সর্বস্ব হারিয়ে পুরোপুরি নিঃস্ব হয়ে গেছে। তাদের অনেকেই এখান থেকে উচ্ছেদ হয়ে গেছে। ভাঙন প্রতিরোধে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে আরও বহু পরিবার উচ্ছেদ হয়ে যাবে এখান থেকে।