প্রকাশ: বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০২৪, ৭:২৮ এএম (ভিজিট : ১৮২)
গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে ধেয়ে আসা ঢলের কারণে তীব্র স্রোতে জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে ছোট যমুনা নদীর ওপর নির্মাণাধীন মাউরিতলা ব্রিজের বিকল্প কাঠের সাঁকোটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। পানির তীব্র স্রোতে খুঁটির নিচের মাটি সরে যাওয়ার কারণে কাঠের সাঁকোটির মাঝখানে দেবে গেছে।
এ ছাড়া স্রোতে ভেসে আসা কচুরিপানা ও বিভিন্ন আবর্জনা খুঁটিতে আটকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে বিকল্প সাঁকোটি। আর কোনো উপায় না থাকায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়েই ওই সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে দুই পারের হাজার হাজার মানুষ। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শঙ্কা মাথায় নিয়ে চলাচল করছে অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন।
স্থানীয়রা বলছেন, সাঁকোটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে মেরামত করা না হলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
এ প্রসঙ্গে পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফা সুলতানা বলেন, সাঁকো এবং সাঁকো ব্যবহারকারীরা যাতে কোনো রকম ক্ষতির মুখে না পড়ে সেজন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর জয়পুরহাট জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আলাউদ্দিন বলেন, সাঁকোটি সচল রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই করা হচ্ছে। জনসাধারণের চলাচলে যেন বিঘ্ন না ঘটে সেজন্য সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে বলেও জানান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর জয়পুরহাট জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আলাউদ্দিন।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি অতিক্রম করে এসে পাঁচবিবি শহরের সীমানা ঘেঁষে বয়ে যাওয়া ছোট যমুনা নদীর বড়মানিক নামক স্থানে ষাটের দশকে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয় যা মাউরিতলা ব্রিজ নামে পরিচিত। ব্রিজটি চলাচলের জন্য অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি ভেঙে ফেলে।
চলতি বছরের শুরুর দিকে সাড়ে ৮ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে ৯০.০৬ মিটার দৈর্ঘ্যরে নতুন ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ব্রিজের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত সাধারণ মানুষ, ভ্যান, রিকশা, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন ও মানুষের পারাপারের সুবিধার্থে ব্রিজ নির্মাণের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বাঁশ-কাঠ দিয়ে একটি সাঁকো তৈরি করে।
কিন্তু গত কয়েক দিনের একটানা বৃষ্টির কারণে এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলের তীব্র স্রোতে বাঁশের খুঁটির গোড়ার মাটি সরে গিয়ে মাঝের অংশ দেবে গিয়ে বেঁকে গেছে সাঁকোটি। এ কারণে অস্থায়ী সাঁকোটির ওপর দিয়ে স্থানীয় জনসাধারণের চলাচল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কয়েকজন শ্রমিক সাঁকোয় আটকে থাকা কচুরিপানা ও আর্বজনা অপসারণ করে সাঁকোটিকে ঝুঁকিমুক্ত করার যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না।
সময়ের আলো/জিকে