ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

ফরিদপুরের আলোচিত সেই চার শিক্ষক বরখাস্ত
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর, ২০২৪, ৫:৪৮ পিএম  (ভিজিট : ১২৮০২)
সার্টিফিকেট জালিয়াতি, প্রতারণা, বয়স ও অভিজ্ঞতা সনদ জালিয়াতি, লাভজনক প্রতিষ্ঠানে চাকরির তথ্য গোপন করার অভিযোগগুলো প্রমাণিত হওয়ায় ফরিদপুরের সালথা উপজেলার রঙ্গরায়েরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আলোচিত সেই চার শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে দুই নারী শিক্ষককে চাকরি চলাকালীন নেওয়া সরকারি সমুদয় অর্থ ফেরতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফরিদপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মহিউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানা যায়। 

২০২০ সালে চার শিক্ষককে নিয়ে ‘দৈনিক সময়ের আলো’সহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর তোলপাড় শুরু হয়। এ নিয়ে জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনে একটি মামলা হয়। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।

প্রাপ্ত অভিযোগ ও তদন্ত কমিটির রিপোর্ট থেকে জানা যায়, সালথা উপজেলায় অবস্থিত রঙ্গরায়েরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির যোগসাজশে ২০০৮ সালে প্রধান শিক্ষকসহ তিনজন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। সেই সময় স্কুলটি বেসরকারি ছিল। চারজন প্রার্থীর মধ্যে সহকারী শিক্ষক হিসেবে সাবিনা ইয়াসমিন নিশি, সৈয়দ মাহমুদুল হাচান ও খাদিজা খানমকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তারা সবাই স্কুলটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সৈয়দ নাজমুল হোসেনের আত্মীয়। এর মধ্যে খাদিজা বেগম ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সৈয়দ নাজমুল হোসেনের চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী, সৈয়দ মাহমুদুল হাচান চাচাতো ভাই এবং সাবিনা ইয়াসমিন সম্পর্কে আপন খালা। ২০০৮ সাল থেকে চাকরি করার পর ২০১৪ সালে স্কুলটি সরকারিকরণ করা হয়। এ চার শিক্ষকের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি ২০২০ সালে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে শিক্ষা অফিস। পরে এ নিয়ে শিক্ষা অধিদফতর থেকে বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি জানতে পারে, প্রধান শিক্ষক সৈয়দ নাজমুল হোসেন বয়স জালিয়াতি ও অভিজ্ঞতা সনদ জাল করে চাকরি নিয়েছেন। এ ছাড়া দুর্নীতির মাধ্যমে তার তিন আত্মীয়কে চাকরি দেন। তদন্তে সরকারি কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করে বরখাস্ত করা হয়। এদিকে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া সৈয়দ মাহমুদুল হাচানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি একটি লাভজনক প্রকল্পে (একটি বাড়ি একটি খামার) চাকরি করার পরও মিথ্যা তথ্য দিয়ে স্কুলের চাকরি নেন। এ ছাড়া সনদের তথ্য জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকেও চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।

এ ছাড়া সহকারী শিক্ষক খাদিজা খানমের বিরুদ্ধে ভুয়া এনআইডি তৈরি করাসহ অন্যের সনদ জাল করে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে চাকরি থেকে বরখাস্তের পাশাপাশি সরকার থেকে বেতন-ভাতা হিসেবে প্রাপ্ত সব অর্থ সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে বলা হয়। একই অভিযোগে সহকারী শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিন নিশিকেও বরখাস্তের পাশাপাশি বেতন-ভাতাসহ প্রাপ্ত সমুদয় অর্থ ফেরত দিতে হবে। এদিকে চার শিক্ষকের দুর্নীতির বিষয়টি জানাজানি হলে ২০২৩ সালের ৩ আগস্ট দুর্নীতি দমন কমিশন একটি মামলা করে। ফরিদপুরের সহকারী পরিচালক সরদার আবুল বাসার বাদী হয়ে এ মামলা করেন। বর্তমানে মামলাটি চলমান রয়েছে। এ বিষয়ে বরখাস্ত হওয়া চার শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।

ফরিদপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মহিউদ্দিন জানান, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর গত ২২ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত চার শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়। নিজ নিজ নামে তাদের ঠিকানায় অফিস আদেশটি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সময়ের আলো/জেডআই




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close