ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

এক বিঘা জমি থেকে তিন বছরে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা লাভের প্রত্যাশা
ফিলিপাইনের আখ চাষে বাজিমাত
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর, ২০২৪, ৬:০৫ এএম  (ভিজিট : ১৫৮)
জমি লিজ নিয়ে কখনো ধান, গম, ভুট্টা আবার কখনো সবজি চাষ করে তেমন লাভের মুখ দেখতে না পারলেও এবার এলাকায় প্রথমবারের মতো ফিলিপাইনের ব্ল্যাক সুগার কেইন জাতের আখ চাষ করে ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে সফল হয়েছেন সাগর নামের এক তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা। আখ চাষে রীতিমতো বাজিমাত করেছেন তিনি। মাত্র এক বিঘা জমি থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার আখ বিক্রি করেছেন তিনি। 

এতে খরচ বাদে তার লাভ হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা। তার এমন সফলতা দেখে এই জাতের আখ চাষে আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে। ২৮ বছর বয়সি এই তরুণ কৃষি উদ্যোক্তার বাড়ি নাটোরের সিংড়া পৌরসভার দক্ষিণ দমদমা এলাকায়।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ফিলিপাইনের ব্ল্যাক সুগার কেইনের রং কিছুটা কালো ও খয়েরি। দেশীয় আখের মতো হলেও রয়েছে বেশকিছু ভিন্নতাও। এ আখের কাণ্ড নরম, রসের পরিমাণ বেশি, মিষ্টিও বেশি। লম্বায় সাধারণত ১২ থেকে ১৬ ফুট হয়ে থাকে। জৈবসার আর গোড়ায় পানি রাখলে দ্রুতই বেড়ে ওঠে। কীটনাশকের তেমন প্রয়োজন হয় না। তুলনামূলক কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় দিন দিন এ জাতের আখ চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের।

সরেজমিন সিংড়া পৌরসভার দক্ষিণ দমদমার বালু চরের মাঠে কৃষি উদ্যোক্তা সাগরের জমিতে গিয়ে দেখা যায়, চারদিকে বর্ষাকালে রোপা আমন ধানের মাঝে এক বিঘা জমিতে শোভা পাচ্ছে ফিলিপাইনের ব্ল্যাক সুগার কেইন জাতের লম্বা আখ। এ জমির প্রায় ৯০ শতাংশ আখ ইতিমধ্যে বিক্রি করেছেন সাগর।
কথা হয় তরুণ উদ্যোক্তা সাগরের সঙ্গে। এ সময় তিনি বলেন, আমার নিজের কোনো জমি নেই। তিন বছরের জন্য ৬৫ হাজার টাকা দিয়ে এক বিঘা জমি লিজ নিয়ে আখের চাষ করেছি। 

সেই হিসেবে প্রতি বছর ২২ হাজার টাকা লিজ খরচসহ অন্যান্য খরচ হয়। এ পর্যন্ত ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার আখ বিক্রি করেছি। এতে খরচ বাদে আমার আয় হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা। এখনও ১৫ হাজার টাকার আখ বিক্রির আশা করছি। তিনি আরও বলেন, আখ চাষে প্রথম বছর চারা রোপণ বাবদ খরচ বেশি পড়ে। তাই প্রথম বছর লাভের হিসাবটাও হয় কম। জমিতে একবার চারা রোপণ করলে তিন বছর ফসল পাওয়া যায়। সেই হিসেবে আগামী দুই বছরে কম খরচে লাভের হিসাবটা হবে বেশি। এ কারণে এ জমি থেকে আগামী তিন বছরে গড়ে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি।

আখ চাষের আগে ধান, গম, ভুট্টা ও নানা রকম সবজি চাষ করে তেমন একটা লাভ করতে পারেননি জানিয়ে সাগর বলেন, গত বছর নাটোরের গুরুদাসপুর থেকে ফিলিপাইনের ব্ল্যাক সুগার কেইন জাতের চারা সংগ্রহ করে এই জমিতে রোপণ করি। জমিতে আমার বাবাই সময় দেন বেশি। আগামীতে জমির পরিমাণ আরও বাড়াবেন বলেও জানান সাগর। 

এদিকে প্রথম বছরেই সাগরের এমন সফলতা দেখে আখ চাষে আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় কৃষকদের। অনেকেই আসছেন তার জমিতে। নিচ্ছেন পরামর্শ। ইতিমধ্যে সাগরের কাছ থেকে এ জাতের চারা নিয়ে আখের চাষ শুরু করেছেন কেউ কেউ। 

এ বিষয়ে সিংড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খন্দকার ফরিদ বলেন, আখ চাষের জন্য নাটোর জেলা বিখ্যাত হলেও সিংড়া উপজেলায় তুলনামূলকভাবে এই ফসল চাষের চাহিদা কম। এ বছর উপজেলায় ১৫ হেক্টর জমিতে আখের চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। কৃষি বিভাগ সবসময়ই কৃষকদের পাশে থেকে পরামর্শ ও সহযোগিতা করছে। আমরা আশা করছি, আখচাষিরা লাভবান হবেন।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close