ই-পেপার রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪
রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪

হাত বদলে বাড়ে ইলিশের দাম
১৮০০ টাকার ইলিশ হয়ে যায় আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকা
প্রকাশ: সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৮:০৬ এএম  (ভিজিট : ১৮৮)
চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার ইলিশের সুখ্যাতি দেশ ও বিশ্বজুড়ে। কিন্তু চলমান ভরা মৌসুমেও ইলিশের দাম ঊর্ধ্বগতি হওয়ায় এ মাছ এখন সব ধরনের ক্রেতার নাগালের বাইরে। দেশের অন্যতম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র চাঁদপুর মাছঘাট। এখানে বিভিন্ন জেলা থেকে কম দামে ইলিশ কিনতে এসে ফিরে যাচ্ছেন ক্রেতারা। দাম বাড়ার কারণ হিসেবে জেলেরা বলছেন দুবার হাত বদলেই ১ হাজার ৮০০ টাকা কেজি ইলিশের দাম হয়ে যায় আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকা। সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের হরিণা ফেরিঘাট জেলেপাড়ার একাধিক জেলে জানালেন কীভাবে বিক্রি করা হয় তাদের ধরে আনা ইলিশ। ওই এলাকার জেলে বাবুল বলেন, মাছ ধরা পড়লে আমরা আড়তে এনে বিক্রি করি। আড়তেই ভালো দাম পাওয়া যায়। আড়তদার ওই মাছ পাইকারদের কাছে বিক্রি করেন। পরে তারা সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে বিক্রি করেন। এরই মধ্যে দুবার হাত বদলে ইলিশের দাম বেড়ে যায়।

জেলে আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের আড়তেই ইলিশ বিক্রি করতে হয়। এখানে আমরা সর্বোচ্চ দাম পাই। আর আড়তদারদের মুনাফা করেই বিক্রি করতে হয়। কারণ এই কমিশনের মাধ্যমে আসে তাদের উপার্জন। এরপর পাইকার ব্যবসায়ীরা সাধারণ ক্রেতার কাছে ওই ইলিশ বিক্রি করেন। চাঁদপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের খুচরা বিক্রেতা কামাল হোসেন বলেন, মূলত গত কয়েক বছর ইলিশের সরবরাহ কম। বিশেষ করে গত বছরের তুলনায় ইলিশের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এবার। দাম বেশি থাকলেও ক্রেতাদের চাহিদা রয়েছে। আড়তে ইলিশ আসার পর পাইকাররা হাঁকডাক দিলেই বেড়ে যায় ইলিশের দাম। ইলিশের তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা থাকে অনেক বেশি। ফলে দাম কমানোর আর সুযোগ থাকে না।

আরেক ব্যবসায়ী নবীর হোসেন বলেন, ঢাকার চেয়ে চাঁদপুরে ইলিশের দাম বেশি, বিষয়টি অনেক ক্রেতারই অজানা। ক্রেতাদের ধারণা, ঢাকায় ইলিশের যে দাম, তার চেয়ে চাঁদপুর ঘাটে আরও কম দাম হবে। কিন্তু চাঁদপুরে যে ইলিশ বিক্রি হয় তা স্থানীয় নদীর। কিন্তু ঢাকার ইলিশে অনেক সময় নদী ও সাগরের মাছ মেলানো থাকে। এ কারণে ঢাকার ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি ইলিশে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কমে বিক্রি করতে পারেন।

চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সস্পাদক হাজি শবে বরাত সরকার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং মাছঘাটে এসে অনেক ক্রেতাই মন্তব্য করেন, সিন্ডিকেটের কারণে ইলিশের মূল্য ঊর্ধ্বগতি। ঘাটের পাশেই পর্যটন এলাকা। যে কারণে ভ্রমণে আসা লোকজনসহ ইলিশের ক্রেতার সংখ্যা অনেক বেশি। মূলত ইলিশের সরবরাহ কম থাকায় এসব ক্রেতার চাহিদা মেটানো যায় না। ফলে ইলিশ চড়া দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নুর হোসেন বলেন, ক্রেতাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাছঘাটে আমি নিজেও ক্রেতা সেজে অভিযান পরিচালনা করেছি। ক্রয়মূল্য থেকে এখানকার কিছু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মূল্যে ইলিশ বিক্রি করায় তাদের জরিমানা করা হয়েছে। তাদের সতর্ক করে দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে প্রত্যেক খুচরা ব্যবসায়ী প্রতি কেজি ইলিশে ৫০ থেকে ১০০ টাকার বেশি মুনাফা করতে পারবেন না। এর বাইরে যদি কোনো বিক্রেতা বেশি মুনাফা করেন এবং তার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়, তাদের বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকার আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত ১০ দিন আগে চাঁদপুর মাছঘাটে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায়। বর্তমানে ভারতে ইলিশ রফতানির খবরের একই ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকায়।

সময়ের আলো/আরএস/ 




এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close