ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
হাসপাতালে চিকিৎসা নয় সান্ত্বনাই মেলে বেশি
প্রকাশ: শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২:২২ এএম আপডেট: ২৮.০৯.২০২৪ ২:২৬ এএম  (ভিজিট : ১৭৩)
কিশোরগঞ্জ জেলা সদরের যশোদলে অবস্থিত শহিদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের আউটডোরে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা মানুষের ভিড় নিত্যদিনের। প্রতিদিন দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ চিকিৎসাসেবা নিতে জড়ো হলেও পর্যাপ্ত ডাক্তার ও ওষুধ না থাকায় বেশিরভাগকেই ফিরতে হয় খালি হাতে। 

অনেকে ডাক্তার দেখাতে পারলেও মিলে না সরকারি ওষুধ। ফলে সেবা পাওয়ার তুলনায় সান্ত্বÍনা নিয়েই বাড়ি ফিরতে হয় রোগীদের।

প্রতিষ্ঠার পর থেকেই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে কিশোরগঞ্জের শহিদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও লোকবল না থাকায় অনেকটাই ভেঙে পড়েছে হাসপাতালটির চিকিৎসা কার্যক্রম। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে আইসিও। বন্ধ ইউরোলজি বিভাগ। মিলছে না প্রয়োজনীয় ওষুধ। ফলে সেবাবঞ্চিত সাধারণ মানুষ। হাসপাতালের পরিচালক জানালেন, বারবার মন্ত্রণালয়ে চিঠি চালাচালি করেও মিলছে না সমাধান।

জানা গেছে, হাসপাতালে ৩৩টি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পদ খালি। ৯টি সিনিয়র কনসালট্যান্ট পদে লোকবল নেই। খালি পড়ে আছে জুনিয়র কনসালট্যান্ট (ইএনটি), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (ডেন্টাল) ও জুনিয়র কনসালট্যান্ট (এনসথেসিওলজিস্ট) পদও। এ ছাড়া রেজিস্টার, সহকারী রেজিস্ট্রারের ৩টি পদ খালি। 

চিকিৎসকের ১২৩টি সৃজনকৃত পদের বিপরীতে কর্মরত  মাত্র ৯০ জন ডাক্তার। ৩৩টি গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসকের পদই শূন্য।

ডাক্তার-নার্স, তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির ১৪৮টি পদই শূন্য। চিকিৎসক ও এনেসথেসিয়া ডাক্তার না থাকায় বন্ধ রয়েছে হাসপাতালের আইসিও সেবা ও ইউরোলজি বিভাগ। হাসপাতালে ডায়ালাইসিস রোগী হয় শতাধিক। 

কিন্তু বেড রয়েছে মাত্র ৫টি। ৩০ শয্যার সিসিও ইউনিটে প্রতিদিন ভর্তি থাকেন অন্তত ৬০ রোগী। ৫০০ শয্যার হাসপাতালে ভর্তি থাকেন সাড়ে ৬০০ থেকে ৭০০ রোগী। কিন্তু লোকবল ও ওষুধ সংকটে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্ছিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। 

এ ছাড়া আইসোলেশনের জন্য আলাদা কোনো স্থান নেই। বাধ্য হয়ে হাসপাতালের ভেতরে অন্য ওয়ার্ডে করোনা ওয়ার্ড হিসেবে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। একটি পরিপূর্ণ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হিসেবে সব ধরনের মূল্যবান যন্ত্রপাতি রয়েছে। কিন্তু শুধু লোকবল না থাকায় ব্যবহার করা যাচ্ছে না এসব যন্ত্রপাতি। দীর্ঘদিন ব্যবহার না করায় পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে অনেক মূল্যবান যন্ত্রপাতি।

চিকিৎসকরা জানান, জনবল সংকট থাকায় চিকিৎসাসেবা দিতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। শহিদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আরএমও (আরপি মেডিসিন), ডা. মুহাম্মদ আবিদুর রহমান, জানান, প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও লোকজবল না থাকায় চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হয়। এক দিকে রোগীর চাপ বেশি। অপরদিকে ডাক্তার কম। এ অবস্থায় আমাদের চিকিৎসাসেবা দিতে বেগ পেতে হয়ে। আউটডোরে প্রতিদিন দেড় হাজারের মতো রোগী আসেন। তাই সবাইকে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ দেওয়া সম্ভব হয় না। তবে আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। আইসিও চালু করা গেলে মানুষ আরও বেশি সেবা পেত।

লোকবল সংকটে সাধারণ মানুষ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্ছিত হচ্ছেন বলে শিকার করলেন, হাসপাতালটির পরিচালক ডা. মো. হেলাল উদ্দিন। তিনি জানান, লোকবল নিয়োগ দেওয়ার জন্য বারবার মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হলেও সংকট নিরসনে কার্য়কর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।
পরিচালক জানান, এমনিতেই প্রয়োজনের তুলনায় এই হাসপাতালে সৃজনকৃত পদের সংখ্যা কম। এর ওপরে ডাক্তার ও লোকবল সংকট থাকায় মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা।  বর্তমানে ৩৩ জন ডাক্তার, ২১ জন নার্স, দ্বিতীয় শ্রেণির ৩ জন ও তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ৯১ জনসহ মোট ১৪৮টি পদ শূন্য রয়েছে। ২০১১ সালে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার যশোদল এলাকায় শহিদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে হাসপাতালে  চিকিৎসাসেবা শুরু হয় ২০২০ সালে।





সময়ের আলো/আরএস/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close