ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

সাইনবোর্ড টানিয়ে অন্যের জমি দখল যুবলীগ নেতার
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৯:৩৩ এএম  (ভিজিট : ২০২)
“এই জমির মালিক শাহজাহান এর কাছে অনেক লোকে টাকা পাবে কোন লোক যদি এই জমি ক্রয় করেন তাহলে কালাইয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাহেবের সাথে যোগাযোগ করিয়া জমি ক্রয় করিবেন অন্যথায় জমি দখল পাবেননা। যোগাযোগ চেয়ারম্যান সাহেব ০১৭১৪২৯৪৫৭৩”। এভাবেই কখনও কাগজে স্টীকার লাগিয়ে আবার কখনও সাইনবোর্ড টানিয়ে অন্যকে হয়রানি ও মিথ্যা মামলা দিয়ে গত পনের বছর প্রভাব খাটিয়ে কয়েক কোটি টাকার মানিক বনে গেছেন পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চীপহুইপ আসম ফিরোজ এর ভাইর ছেলে একাধিক মামলার পলাতক আসামী মোঃ মনির হোসেন মোল্লা ওরফে মনির মোল্লা।

বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পটুয়াখালী প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমন তথ্য তুলে ধরেন জেলার দশমিনা উপজেলার চরবোরহান ইউনিয়নের সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মোঃ শাহজাহান হাওলাদার।

লিখিত বক্তব্যে শাহজাহান হাওলাদার জানান, ২০১১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর বাউফল উপজেলার কালাইয়া গ্রামের মোসাম্মদ নাসরিন জাহানের সাথে পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ের পর দুটি সন্তানের বাবা হন তিনি। এরপর কালাইয়া এলাকায় যুবলীগ সেক্রেটারি মনির মোল্লার সহায়তায় জমি কিনে বিভিন্ন ব্যবসা শুরু করেন। এরমধ্যে তার স্ত্রী পরকীয়া প্রেমে আসক্ত হলে স্থানীয় ভাবে একাধিকবার শালিস বৈঠক করে কোন সুফল না পেয়ে ইসলামি শরীয়া মোতাবেক চলতি বছর গত ২০মার্চ তারিখ ডিভোর্স দেয়। এরই মধ্যে যুবলীগ সেক্রেটারি মনির মোল্লা এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় শাহজাহানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে উপরে উল্লেখিত কাগজে লিখে সেটি টানিয়ে রেখে তাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি শুরু করেন। এক পর্যায়ে মনির মোল্লার নির্দেশে ডিভোর্সের দুই মাসের মাথায় নাসরিন জাহানকে দিয়ে পটুয়াখালী আদালতে একটি যৌতুক মামলা দায়ের করান মনির মোল্লা। সেই মামলায়ে ৭দিন জেল হাজতে থাকার পর জামিনে মুক্ত হন। ওই যৌতুক মামলায়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর পটুয়াখালী আদালতে হাজিরা দিয়ে বিকাল থেকে রাত অবদি পটুয়াখালী শহরের হোটেল পার্কের ৪০৯নং রুমে অবস্থান করেন।

এদিকে ১৯ তারিখের বাউফল উপজেলার কালাইায়াস্থ বাপের বাড়ীর ঘটনা দেখিয়ে গত ২৪ সেপ্টেম্বর পটুয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে নাসরিন জাহানকে মারধর ও চাদাদাবীর অভিযোগ এনে আরেকটি মামলা দায়ের করেন নাসরিন জাহান যুবলীগ সেক্রেটারি মনির মোল্লার নির্দেশে।

লিখিত বক্তব্যে শাহজাহান জানান, আদালতে হাজিরা দিয়ে আমি বিকাল থেকে সারা রাত শহরের হোটেলে অবস্থান করার পরেও আমার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করলো কিভাবে? এটি পলাতক থাকা যুবলীগ সেক্রেটারি মনির মোল্লার কারসাজি ছাড়া আর কিছু না। এসময় তিনি হোটেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও রেজিষ্টার বইয়ের স্বাক্ষর সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন।

শাহজাহান হাওলাদার আরো জানান, একদিকে যুবলীগের সেক্রেটারি আরেকদিকে কালাইয়া ইউপির চেয়ারম্যান তারমধ্যে সাবেক চিপ হুইপ আসম ফিরোজ সাহেবের ভাইর ছেলে এই তিন কারণে এলাকায় ভয়ে তার বিরুদ্ধে এতদিন কেউ কোন কথা বলতে সাহস পায়নি। এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ নামে গোটা জেলায় তার পরিচিতি রয়েছে। এমনও কোন মন্দ কাজ নাই যা তিনি এই পনের বছরে করেননি। চাঁদাবাজি আর অন্যের জমি লুট মিথ্যা মামলা দিয়ে ভয় ভীতি দেখিয়ে কয়েক কোটি টাকার মালিক হয়েছেন তিনি। তাছাড়া আমার মত কত পরিবারের সংসার যে ভেঙ্গেছে তার কোন হিসাবও নাই। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

এদিকে হোটেলে অবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত করে হোটেল বয় আলামিন জানান, স্যার (শাহজহান হাওলাদার) ১৯ তারিখ বিকাল থেকে সারা রাত রুমে ছিলেন। আমি নিজে তাকে বিকালের নাস্তা ও রাতের খাবার বাইরে থেকে রুমে দিয়ে আসছি। এছাড়া আমাদের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে সবকিছু আছে।

এ ব্যাপারে কালাইয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মনির হোসেন মোল্লার ব্যবহৃত ফোন বন্ধ থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তার নতুন নাম্বারটিও বন্ধ রয়েছে দুপুর থেকে।

তবে শাহজাহান হাওলাদারের (ডিভোর্সকৃত) স্ত্রী নাসিরিন জাহান জানান, “আমার যা বলার আমি আদালতে লিখিত অভিযোগে বলেছি। এর বাইরে আমার কিছু বলার নাই।”


সময়ের আলো/এএ/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close