ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

আড়বাঁধে বন্ধ নদীর প্রবাহ
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪:৪০ এএম  (ভিজিট : ২৭৪)
মাগুরার শালিখা উপজেলার সীমান্ত এলাকা বরইচারা বেড়িবাঁধের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ফটকী নদীতে আড়বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে পানির প্রবাহ বন্ধ করে অবাধে দেশীয় মাছ শিকারে মেতে উঠেছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। বছরের পর বছর ধরে চলছে এই অবৈধ কর্মকাণ্ড। অবৈধ বাঁধের কারণে নদীর স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। বাঁধের পাশে নদীর পাড়ে ঘরও বানিয়েছেন প্রভাবশালীরা। এ ছাড়া নদীর বেশ কয়েকটি জায়গায় জাল দিয়ে আটকে দেওয়া রয়েছে। অথচ প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রবহমান কোনো জলাশয়ে কোনো ধরনের বাঁধ, স্থায়ী অবকাঠামো বা অন্য কোনোভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।

এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) বলেন, ফটকী নদীতে আড়বাঁধের মাধ্যমে বাঁধ দিয়ে মাছ ধরার খবরটি শুনেছি। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে পরামর্শ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শালিখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসিনা মমতাজ বলেন, ফটকী নদীর বরইচারা এলাকায় আড়বাঁধ দিয়ে দেশীয় ছোট ছোট মাছ ধরা হচ্ছে বলে জানতে পেরেছি। বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান শালিখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসিনা মমতাজ।

মাগুরা সদর উপজেলার কুল্লিয়া গ্রামের নিত্য, দেবেন, তপন, সুজন, সুকান্তসহ প্রায় একশ প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে স্থানীয়দের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন ক্ষমতার সীমাহীন দাপটে বরইচারা ও কুল্লিয়া এলাকার ফটকী নদীর প্রায় ১০ একর জায়গা দখল করে এই অবৈধ আড়বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করে আসছে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে। এতদিন আওয়ামী লীগের ভয়ে কেউ কিছু বলতে সাহস পায়নি। কিন্তু আওয়ামী সরকার পতনের পরও একই স্থানে বাঁশ, কাঠ ও খুঁটি দিয়ে ঘিরে দেশীয় জাতীয় মাছ ধরার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

সরেজমিন কথা হয় স্থানীয় একাধিক বাসিন্দার সঙ্গে। এসময় তারা অভিযোগ করে বলেন, ফটকী নদীতে অবৈধভাবে বাঁশ-কাঠ দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করে মাছ শিকার করা হচ্ছে। আমাদের সেখানে যেতে দেওয়া হয় না। আমরা সেখানে জাল বা বরশি দিয়ে মাছ ধরতে গেলে আমাদের মারধর করে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখায়। জলাশয়ে পানির প্রবাহ ও মাছের চলাচল বাঁধ দিয়ে বা অন্য কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত করলে শাস্তির বিধান থাকলেও আওয়ামী লীগের দাপটের কারণে এতদিন প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলেও অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, জনসাধারণের নৌ চলাচল বন্ধ করে অবৈধভাবে আড়বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন নদীপথে কৃষিপণ্য পরিবহনে সমস্যা হচ্ছে, অন্যদিকে আড়বাঁধ দিয়ে মাছ ধরায় মাছের প্রজনন ধ্বংস হচ্ছে। 

আমির আলী নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, প্রতি বছর এভাবে তারা নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করে। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালীরা নদীতে বাঁধ দেওয়ার ফলে অন্য কেউ নদীতে নামতে পারে না। একইভাবে জাহাঙ্গীর, কিতাবুল ও ইমরানসহ আরও অনেকেই বলেন, নদীতে আড়বাঁধ দেওয়ার কারণে আমাদের জাল ও বরশি ফেলে মাছ ধরতে দেয় না প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। আমরা কিছু বললেই জাল কেড়ে নেয়। পাশাপাশি বলে নদীতে বাঁধ দিয়েছি কারণ অফিস থেকে আমাদের ইজারা দিয়েছে। অভিযোগ করে কোনো লাভ হবে না। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, মাগুরা ডিসি অফিসে টাকা দিয়ে এই আড়বাঁধ আমরা প্রতি বছরই দিয়ে থাকি। এ বছরও দিয়েছি।


সময়ের আলো/আরএস/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close