প্রকাশ: সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৬:৩১ পিএম (ভিজিট : ৭২০)
বাঁশখালী পৌরসভায় সড়ক বাতির জন্য ক্রয় করা বৈদ্যুতিক তার লাগানোর আগেই উধাও হয়ে গেছে ৪ হাজার মিটার বৈদ্যুতিক তার। জানা যায়, বাঁশখালী পৌরসভায় রাতে নিরবচ্ছিন্ন বৈদ্যুতিক সংযোগ ও লাইটিং কাজের জন্য চাহিদা মোতাবেক ১০ হাজার মিটার বৈদ্যুতিক তারের বরাদ্দের দায়িত্ব পান মেসার্স জামান এন্টারপ্রাইজ নামে এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ১০ হাজার মিটার বৈদ্যুতিক তার কেনার দায়িত্ব পেলেও তার ক্রয় করেছে মাত্র ৬ হাজার মিটার। অবশিষ্ট ৪ হাজার মিটার বৈদ্যুতিক তার ক্রয় না করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁশখালী পৌরসভা কার্যালয়ের প্রধান ফটকে ৪টি তারের বান্ডিল দেখা যায়। ওই ৪ বান্ডিল তারের প্রতি বান্ডিলে ১ হাজার ৫০০ মিটার করে তার রয়েছে। এই হিসেবে ৪ বান্ডিলে তার হয় ৬ হাজার মিটার। প্রতি বান্ডিলে ১ হাজার ৫০০ মিটার করে হিসেব করলে বরাদ্দ অনুযায়ী ১০ হাজার মিটারে সাড়ে ৬ বান্ডিল তার থাকার কথা থাকলেও ৪ বান্ডিলে মাত্র ৬ হাজার মিটার তার দেখা গেছে।
বাঁশখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র এস.এম তোফায়েল বিন হোসাইনের সহযোগিতায় ঠিকাদারের লাইসেন্স ভাগিয়ে নেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক আনিসুজ্জামান আবিদ। তার মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স জামান এন্টারপ্রাইজ’ এর বিরুদ্ধে তার ক্রয়কালে নয়-ছয় করে আরও ৪ হাজার মিটার বৈদ্যুতিক তার আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও সংশ্লিষ্টরা প্রতি বান্ডিলে ২ হাজার মিটার তার আছে দাবি করলেও তদন্তকালে দেখা গেছে প্রতি বান্ডিলে তার রয়েছে ১ হাজার ৫০০ মিটার। এই হিসেবে ৪ বান্ডিলে তার হয় মাত্র ৬ হাজার মিটার। কিন্তু ১০ হাজার মিটার বুঝে পেয়েছে বলে ভাউচার করে দেন স্টোর কিপার।
বাঁশখালী পৌরসভার স্টোর কিপার আবু তাহের বলেন, আমাকে ৬ হাজার মিটার বৈদ্যুতিক তার বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই ৬ হাজার মিটার তারের কথা বলতে পারবো। বাকি তার কি করছে বা কোথায় গেলো সেটা আমি জানি না। কিন্তু ১০ মিটার তার বুঝে পেয়েছে মর্মে হিসাবের ভাউচার প্রদানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি।
পৌর সচিব তৌহিদুল ইসলাম বলেন, তার কম থাকার বিষয়টি আমিও শুনেছি। তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মেসার্স জামান এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্বাধিকারী আনিসুজ্জামান আবিদ বলেন, তার আমি ক্রয় করিনি। হয়তো কিছু তার কম আছে। তবে পৌরসভায় আমার সিকিউরিটি বিল বাকি আছে। বকেয়া বিলের টাকা দিলে যে পরিমাণ তার কম আছে তা আমি পুষিয়ে দিবো।
বাঁশখালী পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আরাফাত বলেন, মূলত স্টোর কিপারের কথার উপর নির্ভর করে ভাউচার প্রস্তুত করে আমি বিল পাশ করে দিয়েছি। মনগড়া ভাউচারে কীভাবে বিল পাশ করে দিলেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্টোর কিপার নজর রাখলে ৪ হাজার মিটার বৈদ্যুতিক তার গোপন করার কিংবা উধাও হওয়ার সুযোগ থাকতো না।
সময়ের আলো/আরআই