ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

হুমকিতে কীর্তিনাশা ও হোগলা নদী তীরবর্তী মানুষ
ড্রেজার প্রতি ‘মাসোহারা’ দিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন, প্রশাসন নীরব
প্রকাশ: সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৫:২৭ পিএম  (ভিজিট : ৩২৪)
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার কীর্তিনাশা ও হোগলা নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করছেন একটি চক্র। এতে হুমকিতে পড়েছে নদী তীরবর্তী বসতবাড়ি ও ফসলি জমিসহ বিভিন্ন এলাকার বেড়িবাঁধ। এ ছাড়া কৃষি জমি থেকে বালু উত্তোলনের ফলে প্রতি বছরই কমে যাচ্ছে আবাদি জমির পরিমাণ।

জানা গেছে, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৩০টি পয়েন্ট থেকে অনেকটি ড্রেজার দিয়ে কীর্তিনাশা ও হোগলা নদীর তীর থেকে প্রতিদিন কয়েক লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এ ছাড়া রামভদ্রপুর ইউনিয়ন ডলির মার খামার, চরসেনসাস ইউনিয়নের নতুন বালার বাজার, ডিএমখালি ইউনিয়নের হকপুর, আরশি নগর ইউনিয়নের ফেলুরচর বাজার, ছয়গাও ইউনিয়নের আনন্দ বাজার, টেকের বাজার, চরভাগা ইউনিয়নের ছুরিরচরসহ প্রায় ৩০টি পয়েন্টে রাতদিন সমান তালে অবৈধভাবে নদী ও কৃষি জমি থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এসব অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা। নদী তীরবর্তী ড্রেজার প্রতি সংশ্লিষ্টদের মাসোহারা দিতে হয় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। এবং কৃষিজমি কাটার জন্য গুনতে হয় ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। হারুন পাটোয়ারী নামে এক ড্রেজার ব্যবসায়ী বলেন, আমি ও মিজান সিকদার এই দুটি ড্রেজারের পরিচালনা করি। প্রশাসনকে ম্যানেজ না করে এ অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করা অসম্ভব না। সংশ্লিষ্টদের মাসহারা মোটা অংকের টাকা দেওয়ার পরই মৌখিকভাবে আমাদের ব্যবসা পরিচালনা করার সুযোগ করে দেন। মাটি ও বালু মহলের চাঁদার টাকা নিচ থেকে উপর মহল সবখানে পৌঁছানোর পরে এ ব্যবসা পরিচালনা করা যায়।

স্থানীয়রা জানান, ড্রেজার দিয়ে বালু মাটি উত্তোলন অব্যাহত থাকলে এ বর্ষায় নদীর পাড় এলাকার ফসলি জমি, ঘর-বাড়িসহ সরকারি স্থাপনা মারাত্মকভাবে নদী ভাঙনের কবলে পড়বে। এসব বালু মাটি ব্যবসায়ীরা স্থানীয় এবং প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ কোনো প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। 

বালার বাজার এলাকার বাসিন্দা আমেনা আক্তার বলেন, ‘সব সময় নদীর নিচু এলাকা দিয়েই পানির প্রবাহ বইতে থাকে। তাই বর্ষার সময় পানির প্রবল স্রোতে নদীর পাড় এলাকায় ভাঙন দেখা দিতে পারে। একবার ভাঙন শুরু হলে আশপাশের গ্রামগুলো নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।’ 

ফেলুরচর এলাকার বাসিন্দা নুর আলম বলেন, ‘ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটার কারণে বর্ষা এলেই নদীর পাড়ে ভাঙন শুরু হয়। তখন আমাদের রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায়। স্থানীয় হারুন পাটোয়ারী ও মিজান সিকদার প্রভাব খাটিয়ে নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি কেটে বিক্রি করছে। ভয়ে সাধারণ লোকজন তাদেরকে কিছুই বলতে সাহস পায় না।’

নদী রক্ষা নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো বলছেন, ‘অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে যেভাবে নদী থেকে মাটি কাটা হচ্ছে তাতে বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙনের সম্ভাবনা রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে এসব বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’ 

ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাজিবুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের চেষ্টা বা আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। অবৈধ ড্রেজারগুলো বন্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স। যেখানে অভিযোগ পাচ্ছি ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
 
সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  কীর্তিনাশা ও হোগলা নদী   অবাধে বালু উত্তোলন   শরীয়তপুর   




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close